২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
স্বাগতম বাংলা নতুন বছর

জাতীয় জীবনে বয়ে আনুক কল্যাণ

-

আজ বাংলা ১৪২৯ সনের প্রথম দিন, পয়লা বৈশাখ। এ দিবস আমাদের শেখায় শত বিপদেও নতুন প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত হতে। পয়লা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতির এক ঐতিহ্যধারার গুরুত্বপূর্ণ দিন। এটি এ দেশের সমাজকে দিয়েছে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। বাংলাদেশের সমাজজীবনে পয়লা বৈশাখ নববর্ষের সংগ্রামী আমেজ সৃষ্টি করে, তেমনি উল্লসিত রাখে উৎসবমুখর একটি দিন উদ্যাপনে। এর মাঝে কিছু ঐতিহ্যগত রেওয়াজ ও লোকজ সংস্কৃতির বিভিন্ন রূপময়তা ফুটে ওঠে। এ দিন সব বয়সী মানুষকে আনন্দে উদ্বেলিত হতে দেখা যায়। আমাদের জনজীবনে আজো দেশীয় বা বাংলা পঞ্জিকা নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাংলার প্রকৃতি, লোক সংস্কৃতি, জলবায়ু ও যাপিত জীবনের সাথে ঘনিষ্ঠ।
বাংলা বর্ষপঞ্জি অতীতে ‘ফসলি সন’ হিসেবে পরিচিত ছিল। মোগল সম্রাট আকবরের পৃষ্ঠপোষকতায়, সৌর সনের সাথে মিল রেখে হিজরি পঞ্জিকার ভিত্তিতে বাংলা সন বা বর্ষ গণনার রীতি চালু করা হয় জনগণের কৃষিকাজ তথা অর্থনৈতিক প্রয়োজন মেটানোর স্বার্থে। বিভিন্ন সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাংলা সন বাস্তবোচিত ও বিজ্ঞানসম্মত একটি পঞ্জিকার মর্যাদায় আজ অধিষ্ঠিত। ষাটের দশকে এ ব্যাপারে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহসহ বাংলা একাডেমির ভূমিকা স্মর্তব্য। লিপইয়ারসহ বাংলা সন এখন সুনির্ধারিত, যা আন্তর্জাতিক বর্ষপঞ্জির সাথে চমৎকার সাযুজ্য তৈরি করেছে।
হালখাতা, অর্থাৎ পুরনো হিসাবকে হালনাগাদ করার রেওয়াজ থেকে পয়লা বৈশাখের দিনে নববর্ষ পালনের তাগিদ এলেও এটি আর সেখানে সীমাবদ্ধ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে এর সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব বেড়েছে বহু গুণে। বেড়েছে জনজীবনে উদ্যোগ-আয়োজন এবং উৎসাহ-উদ্দীপনাও। ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে খেলা-মেলা, সঙ্গীত-বিনোদন আর আনন্দ উপভোগে সঙ্কটের মাঝেও পয়লা বৈশাখ বাংলাদেশে সার্বজনীন জাতীয় উৎসব। অতীতেও এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়সহ দেশের সবাই বাংলা নববর্ষকে আত্মস্থ করে নিয়েছে নিজ নিজ কৃষ্টি ও বিশ্বাসের আলোকে। একই দিন যার যার সাধ্যমতো নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আপন সংস্কৃতির মাঝে অবগাহন করে আসছে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশজ সংস্কৃতির মধ্যে বৈরী সংস্কৃতির অনাকাক্সিক্ষত অনুপ্রবেশ ঘটানোর অপপ্রয়াস লক্ষ করা যায়।
পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন আমাদের সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে বিভিন্নভাবে এবং সাধারণ মানুষকে শিকড়ে ফিরতে অনুপ্রাণিত করে। কৃষিজীবী মানুষকে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হলে এর বৈচিত্র্য ও আকর্ষণ আরো বাড়বে বৈ কমবে না। নগরজীবনের অসহ বিড়ম্বনায় একটু স্বস্তি পেতে শহুরে লোকজন পয়লা বৈশাখ পালনের তাগিদ অনুভব করে থাকে। এ ক্ষেত্রে ঐতিহ্যের সাথে কিছু আরোপিত অপসংস্কৃতির প্রলেপ দেয়া হচ্ছে। এটি অনাকাক্সিক্ষত। এসবের সাথে কৃষিভিত্তিক গ্রামবাংলার গণমানুষের সম্পর্ক নেই। তাদের যাপিত জীবনের সাথে এগুলো একেবারেই বেমানান।
নববর্ষ আসে সব গ্লানি দূর করে সামনে এগোনোর তাগিদ নিয়ে। সঙ্কটে হতাশাগ্রস্ত জাতি নতুনভাবে স্বপ্ন দেখতে চায় আত্মসমীক্ষার পথ ধরে। মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের সাথে সেতুবন্ধে আমাদের সংস্কৃতি হয়ে উঠুক সব ধর্ম, বর্ণ, পেশা ও শ্রেণীর মানুষকে জাগিয়ে তোলার উদ্দীপনা। আমাদের যাবতীয় সঙ্কট উত্তরণে জাতি নতুন চেতনায় জেগে উঠুক। পয়লা বৈশাখ হোক নানাবিধ সমস্যা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়ার এক দৃঢ় প্রত্যয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর তিন মাস পার হলেই সব ঋণ খেলাপি মিয়ানমারের জেনারেল মিন অংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইলেন আইসিসির প্রসিকিউটর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া কিছু মানুষ জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন : ফখরুল আইনজীবীর হত্যাকারী ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক’ শুভ কান্তি দাস কে? এশিয়া ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড পেল অধিকার চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ

সকল