জনজীবন স্বচ্ছন্দ রাখতে হবে
- ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
রমজানের প্রথম দিনই চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন রাজধানীবাসী। রোববার সকাল থেকে গ্যাস না থাকায় চুলা জ্বলেনি নগরীর বেশির ভাগ এলাকায়। প্রথম রোজার দিন পুরান ঢাকাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল না। কোথাও কোথাও চাপ এত কম ছিল যে, চুলাই জ্বলেনি। অনেক জায়গায় গ্যাসের চাপ এত কম ছিল যে, পানিও গরম করা যাচ্ছিল না। ইফতারের জন্য কোনো রান্নাবান্না করতে পারেনি গৃহিণীরা। অনেকে বাড়তি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে ইফতারি কিনে এনে ইফতার করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিবিয়ানার ছয়টি কূপ বন্ধ। এ জন্য গ্যাস উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে ঢাকায়। সঙ্কট কাটতে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগবে। ছয়টি কূপ একসাথে বন্ধ হয়েছে এমন নিশ্চয়ই নয়। গ্যাসের ঘাটতিও এক দিনে সৃষ্টি হয়নি; কিন্তু এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো নোটিশ দেয়া বা জনগণকে সতর্ক করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কেউ নেয়নি। রোজার দিনে এমন দায়িত্বহীনতা অনাকাক্সিক্ষত। অথচ দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কোনো তর সয় না। রোজার প্রথম দিনেই এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয় প্রতি ঘনলিটারে চার টাকা ছয় পয়সা। প্রতি কেজি ১১৯ টাকা ৯৪ পয়সা দরে এ মাসে সিলিন্ডার বিক্রি হবে। এতে একটি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম পড়বে এক হাজার ৪৩৯ টাকা। অথচ মাত্র এক মাস আগেই এক দফায় গ্যাসের দাম অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। গত মাসে এলপিজির বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল। ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম একবারে ১৫১ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৩৯১ টাকা করা হয়েছিল। এবারে এলজিপির পাশাপাশি গাড়িতে ব্যবহৃত অটো গ্যাসের দামও লিটারে দুই টাকা ২৪ পয়সা বাড়ানো হলো। ফলে এর দাম দাঁড়াল ৬৭ টাকা দুই পয়সা। এ বাড়তি দাম কার্যকর হয় ঘোষণার দিন সন্ধ্যা থেকেই।
দাম বাড়ানোর এ প্রবণতা মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। এমনিতেই রোজায় সব জিনিসের দাম বেড়ে যায়। বাজারের দুর্মূল্য এবং রোজার প্রভাব মিলে সাধারণ মানুষ টানাপড়েনের মধ্যে আছে। তার ওপর গ্যাসের দাম বাড়ানো বোঝার ওপর শাকের আঁটির চেয়েও বেশি কিছু। এ বাড়তি চাপের সাথে যোগ হয়েছে চুলায় গ্যাসের সরবরাহ না থাকা। টাকা খরচ করে বাইরে থেকে ইফতার কিনে আনতে বাধ্য হওয়ায় মানুষের বিরক্তি চরমে পৌঁছানোর উপক্রম হয়েছে।
গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, চলতি রমজান মাসে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি নিয়ে দেশবাসীকে ভালোভাবেই ভুগতে হবে। একটি সহযোগী দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে, ইফতার, তারাবিহ এবং সাহরির সময় নগরবাসী একসাথে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসুবিধা পাবে না। আবার ইফতার, তারাবিহ ও সাহরির সময় ঢাকায় সরবরাহ ঠিক রাখতে গ্রামে লোডশেডিং করতে হবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। একই অবস্থা পানি ও গ্যাস-সুবিধা নিয়ে। রোজায় গ্যাস সঙ্কট থাকবে শিল্প-কলকারখানায়ও। এ দিকে রোজার শুরুতেই রাজধানীর অনেক এলাকায় তীব্র পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
বিতরণ কোম্পানিগুলো সূত্রে খবরে বলা হয়, রোজার মাঝামাঝি থেকে গ্যাস সঙ্কট আরো তীব্র হবে। পানির ঘাটতি হবে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ কোটি লিটার। ফলে নগরবাসীকে দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই পার করতে হবে রমজান মাস। জানা যায়, শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা অর্ধেকের বেশি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে রোজার মাসে গ্রামবাসীকেও বিদ্যুতের কষ্টে ভুগতে হবে।
জনগণের স্বচ্ছন্দ জীবনযাপন নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব; কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তা পেরে উঠছে বলে মনে হয় না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা