দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক
- ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
এবারের রমজান মাসে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হয়েছে। গত দুই বছর করোনায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে এবার রমজানের বেশির ভাগ সময় ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক সারা দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পয়লা রমজান থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। অবশ্য, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি নির্ধারণ করে দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর-মাউশি।
গত ২৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক অফিস আদেশে আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চালু রাখার কথা জানানো হয়। আদেশে এ বিভাগের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান অব্যাহত রাখার অনুরোধ করা হয়।
রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালু রাখার ঘোষণা আসার পর থেকেই ক্ষোভ জানিয়ে আসছে প্রাথমিক শিক্ষকরা। মাধ্যমিক ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও রমজানে ক্লাস চালু রাখার বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী রোজা রাখে। প্রচণ্ড গরমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষে রোজা রেখে ক্লাস করা কষ্টকর। এ ছাড়া আমাদের দেশ মুসলিমপ্রধান হওয়ায় রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা একটি ধর্মীয় ঐতিহ্য। যদিও মাউশি রমজানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্লাস কমিয়ে ছুটি বাড়ানোর চিন্তা করছে। এ-সংক্রান্ত একটি সভা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কষ্ট ও অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়তে পারে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী আগাম একটি ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সরকারি-বেসরকারি অফিস সময় সমন্বয় করা হয়নি। আসলে বিষয়টি আমলেই নেয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সময় ব্যবস্থাপনা না করেই রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে। আর গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী দূর-দূরান্ত থেকে বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে যায়। তারাও প্রচণ্ড রোদে বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ছে। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থী-অভিভাবক এবং শিক্ষকদের কষ্ট ও অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো উচিত। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার বলে আমরা মনে করি।
এই রমজানে যানজট সহনীয় করতে হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুরুর কমপক্ষে তিন ঘণ্টা পর অফিস-আদালত শুরু করা যেতে পারে। এতে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের যানজট অনেকটাই সহনীয় হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির সাথে অফিস ছুটির সময়ের মধ্যেও একই ধরনের পার্থক্য থাকতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে পাঁচ দিন খোলা না রেখে সপ্তাহে চার দিনে নিয়ে এলেও যানজটের লাগাম টেনে ধরা যাবে। অন্য দিকে সরকারি-বেসরকারি ছুটির দিনগুলোতে অর্থাৎ শুক্র ও শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যেতে পারে।
সরকারি এমন সিদ্ধান্তে ইতোমধ্যে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। রোজা রেখে প্রখর রোদে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে গিয়ে শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের অভিভাবকরাও যানজটে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকরি অফিস সময়ের সাথে সমন্বয় না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে। এতে করে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা