২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
খনন শেষের আগেই বালুচর!

অবিলম্বে প্রতিকার চাই

-

ড্রেজিং বা খননকাজ শেষ হওয়ার আগেই নদীর খননকৃত অংশ ভরাট হয়ে গেছে এবং সেখানে ধু ধু বালুচর। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় ভোগাই কংশ নদের খননকাজে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পাওয়া যায়, এ ক্ষেত্রে খননের নামে অবাধে বালু ব্যবসায়সহ গুরুতর নানা অনিয়মের। নয়া দিগন্তের এক সচিত্র প্রতিবেদনে এসব তথ্য দিয়েছেন ফুলপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে ময়মনসিংহ জেলা হয়ে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা পর্যন্ত ১৫৫ কিলোমিটার ভোগাই কংশ নদ খনন প্রকল্পের আওতায় ১৩৪ কোটি ৬৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সে মোতাবেক, পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালের ১ জুন থেকে এ নদ ড্রেজিং করার অনুমতি পায়। সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে গঠিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলো ওই নদীর খননকাজটি পাঁচ পয়েন্টে ভাগ করে নেয়। তারা নদ থেকে এক কোটি ঘনমিটার বালু তোলার টার্গেট নিয়ে খননকাজ আরম্ভ করে। এ জন্য সময় নির্ধারণ করা হয় দু’বছর। তবে এ সময়ের মধ্যে ড্রেজিং শেষ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী জুন মাস নাগাদ এর সময় বর্ধিত করা হয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ, উল্লিখিত ঠিকাদারদের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান ফুলপুরের বাখাই বধ্যভূমিসংলগ্ন সরচাপুর সেতুর ৫০০ মিটারের ভেতরে কয়েক স্থানে লাখ লাখ ঘনফুট বালু মজুদ করে এবং এভাবে অবৈধ বালুমহাল বানানো হয়। সেই সাথে সূচনা হয় বালু পাচারের। প্রভাবশালী বালুদস্যু ও নদীখেকো মহল ঠিকাদারদের যোগসাজশে ডেফুলিয়া, বাঁশতলা, সরচাপুর, ঠাকুরবাখাই, বড়বাখাই, গাজিপুর ও বড়ই কান্দিÑ এই সাত গ্রামে বালুর বিশাল বিশাল স্তূপ তৈরি করেছে। বালু বিক্রি করে ওরা কয়েক লাখ টাকা পেয়েছে। কংশ নদের প্রচণ্ড ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি রক্ষা এবং নদীতীরের ফসলি জমিগুলো ভরাট করার বদলে অবৈধ বালুমহালের দ্বারা চালানো হচ্ছে বিপুল অঙ্কের টাকার ব্যবসায়। এই অবৈধ মহালের কর্তৃত্ব নিয়ে সৃষ্ট সহিংসতায় স্থানীয় গ্রাম, গাজিপুরের একজন নিহতও হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ৮০ থেকে ১০০ ফুট প্রস্থ এবং ৮-১০ ফুট খননকৃত নদের অনেক এলাকাই বিগত দু’বছরে ভরাট হয়ে গেছে। তীরবর্তী লোকজনসহ সেচ সুবিধাবঞ্চিতরা জানান, ‘‘কংশ নদ ড্রেজিংয়ের আগে ডোবার পানি সেচে চর এলাকায় ধান, আলু, মরিচ, সবজিসহ নানা ধরনের ফসল হতো, পানির সঙ্কটে বর্তমানে এটাও করা যায় না। ময়মনসিংহের এডিসি (রাজস্ব) জানালেন, গত বছর ড্রেজিং-কাজটি ‘শেষ করতে না পারায়’ সময় বাড়ানো হয়েছে। বর্ষাকালে পানি এলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
আমরা আশা করি, অবিলম্বে কংশ নদ ভরাট হয়ে যাওয়া এবং পানির অভাবসহ ভুক্তভোগীদের যাবতীয় অসুবিধা দূর করা হবে এবং জনগণ সব অনিয়মের প্রতিকার পাবে।


আরো সংবাদ



premium cement