২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সচ্ছলরা পেয়েছেন টিসিবির কার্ড

প্রকৃত হকদাররা বঞ্চিত

-

দেশে প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য এখন চড়া। বেশির ভাগ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে জিনিসপত্রের দাম। পরিস্থিতি এত খারাপ যে, স্বল্প আয়ের মানুষ এবং নিম্নবিত্তদের কষ্টের সীমা নেই। তাদের কষ্ট লাঘবে সরকার সারা দেশে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র পরিবারের জন্য ন্যায্যমূল্যে টিসিবির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। যারা এ সুবিধা পাবেন তাদের দেয়া হয়েছে ‘টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড’। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে কার্ড বিতরণে অনিয়মের খবর মিলছে; যারা কার্ড পাওয়ার যোগ্য নন, তাদের অনেককে এ সুবিধা দেয়া হয়েছে। কার্ড পাওয়ার যারা প্রকৃত হকদার তারা হচ্ছেন বঞ্চিত।
লক্ষণীয়, করোনাকালেও সরকারি ত্রাণ বিতরণে এমন কাণ্ড ঘটেছে। ফলে বঞ্চিত হয়েছেন অসচ্ছলরা। পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় স্তম্ভে টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ নিয়ে পরামর্শমূলক সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে। আমরাও এ স্তম্ভে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ নিয়ে যেন অনিয়ম না হয় সে বিষয়ে লিখেছি। ‘টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হলে সঠিকভাবে তালিকা তৈরি করে তা বিতরণের কথা বলা হয়েছে; যাতে প্রকৃত হকদাররা এ সুবিধা পেতে পারেন। কাজের সময় দেখা যাচ্ছে, যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, ঠিক তাই ঘটছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা আগের পথেই হেঁটেছেন। মুখ দেখে নিজস্ব লোকদের খুশি করতে এবং গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রদত্ত এ সুবিধা বণ্টন করা হয়েছে।
একটি সহযোগী দৈনিকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকায় সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য কেনার ফ্যামিলি কার্ড পাননি অনেক অসচ্ছল। বরং কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এমন অনেক ব্যক্তিকে যারা সচ্ছল ও ধনী। সরকারি চাকরিজীবী, ইট ব্যবসায়ী, কলেজশিক্ষক, অবসরে যাওয়া স্কুলশিক্ষক, ঠিকাদারদের মতো সচ্ছল ব্যক্তিরা সেই কার্ড দিয়ে টিসিবির পণ্য কিনেছেন। ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নামে ‘টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড’ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একইভাবে আরো অনেক ধনী ব্যক্তির নামে কার্ড বরাদ্দ করা হয়েছে। টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় যে কাণ্ড ঘটেছে, খুঁজলে এমন চিত্র সারা দেশেই কমবেশি পাওয়া যাবে।
সারা দেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়ে ৯২ হাজার ৬৮৮টি পরিবারের মধ্যে টিসিবির পণ্য কেনার কার্ড বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় দেয়া হয়েছে সাত হাজার কার্ড। টিসিবির ডিলাররা এ কার্ডধারীদের কাছে ‘প্যাকেজ’ হিসেবে তিনটি পণ্য (দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল) ৪৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। টিসিবি বলছে, উপকারভোগী নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসংখ্যা, দারিদ্র্যের সূচক বিবেচনায় রেখে তালিকা তৈরি করার কথা। কিন্তু ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় নীতিমালা ভেঙে চলমান এ কর্মসূচির তালিকায় আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের নামে কার্ড বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও এ অনিয়মের কথা স্বীকার করেছেন।
কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো, ঠাকুরগাঁও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে তালিকা করতে হয়েছে বলে কিছু কিছু ভুল থেকে যেতে পারে। যেকোনো মানবিক সহায়তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গেলে কিছু ভুলভ্রান্তি থেকে যায়। পাওয়ার যোগ্য নন, এমন ব্যক্তিরা টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড পেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করে তাদের কার্ড বাতিল করা হবে।
আমরা মনে করি, যে প্রক্রিয়ায় ‘টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড’ প্রণয়ন করা হয়েছে; তাতে অনেক ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি এবং গোষ্ঠীস্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রণীত তালিকা দ্রুত স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে সংশোধনের উদ্যোগ নিতে হবে। একই সাথে নির্দিষ্ট পণ্য থেকে সর্বনিম্ন যার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু যেন বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। তাহলে যে লক্ষ্যে এ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে, তার সুফল দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর উপকারে আসতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে নলকূপ থেকে পানি নেয়ায় দলিত যুবককে পিটিয়ে হত্যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি : পাকিস্তানকে ৫৯১ রুপি দিয়ে সমাধানের ভাবনা আইসিসির এবার লিভারপুলের কাছে আটকে গেল রিয়াল মাদ্রিদ উত্তরসূরী হিসেবে রাউহির নাম ঘোষণা করলেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আইসিসি’ এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার পেল অধিকার মারবা? পারবা না। ৩ আমেরিকানকে মুক্তি দিলো চীন আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান

সকল