২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
শতাধিক অননুমোদিত হাটে ‘খাজনা’ আদায়

কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে

-

কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলায় যেখানে সেখানে অবৈধ হাটবাজার গড়ে উঠছে। উপজেলাটির ১৪ ইউনিয়নে এর মোট সংখ্যা ১৩৬টির বেশি। তবে তালিকাভুক্ত ছাড়া বাকি শতাধিক হাট ও বাজারই অবৈধ, যা থেকে নিয়মিত ‘ইজারা’র অর্থ আদায় করা হলেও তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়া হচ্ছে না। এগুলোর কোনো আইনি অনুমতি না থাকায় প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হয়ে আসছে। স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের লোকজন এসব হাটবাজার দখল, নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধভাবে নিয়মিত অর্থ আদায় করে থাকে। তারা সরকারকে বিন্দুমাত্র অর্থও না দিয়ে এবং সরকারি নীতিমালার কোনো তোয়াক্কা না করেই সব লুটেপুটে খেয়ে আসছে। দীর্ঘ দিন ধরে এসব বেআইনি তৎপরতা প্রকাশ্যে চললেও প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব ও নিষ্ক্রিয়। কর্তৃপক্ষের এক কথা, এসব হাটবাজার ‘তালিকাভুক্ত নয়’ বলে সরকারের পক্ষ থেকে ইজারা দেয়া যায় না। এ দিকে যত্রতত্র স্থাপিত এসব অননুমোদিত হাটবাজারের প্রভাবে বৈধ হাটবাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং সংশ্লিষ্ট ইজারাদাররা আর্থিক ক্ষতির শিকার হাটবাজারে বেচাকেনা কমে যাওয়ায়। একটি সহযোগী দৈনিক এই তথ্যগুলো প্রকাশ করেছে তাদের প্রতিবেদনে।
জানা যায়, সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হাটবাজারগুলো বছরে একবার করে, টেন্ডারের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে ইজারা। এভাবে দৌলতপুর উপজেলার বৈধ হাট ও বাজার থেকে প্রশাসনের আয় হয়ে থাকে তিন কোটি টাকার মতো। তবে উপজেলায় তার প্রায় চার গুণ হাটবাজার আজ পর্যন্ত তালিকাভুক্ত নয়। তাই এদের কোনো রাজস্বই সরকার পাচ্ছে না। অথচ বেআইনি হাট ও বাজারগুলোতে নিয়মিত প্রচুর অর্থ প্রদান করতে হয় কিছু লোককে। ওরা ‘স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র’। তারাই হাটবাজারের মনগড়া মালিকানা দাবি করে কথিত খাজনা আদায়পূর্বক পকেট ভারী করছেন। এটা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে সরকারের নাকের ডগায়। দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যক্তিগতভাবে কোনো হাটবাজার পরিচালনা কিংবা এর স্বত্ব দাবি করা যায় না। এসব অধিকার শুধু রাষ্ট্রের। অন্য দিকে বৈধ হাটের বেচাকেনা কমে গেছে অবৈধগুলোর রমরমা অবস্থার বিপরীতে।
দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউপির কাঁচাবাজারটি উপজেলা ছাড়িয়ে গোটা কুষ্টিয়া জেলাতেই বিখ্যাত। প্রতিদিন এখানে কয়েক কোটি টাকার মাল বা পণ্য কেনাবেচা হচ্ছে। প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার খাজনা আদায় সত্ত্বেও তালিকাভুক্ত নয় বলে এখানকার কানাকড়ি রাজস্বও কর্তৃপক্ষের কাছে যায় না। স্থানীয় কিছু লোক ব্যক্তিগতভাবে এ হাট দিয়েছেন। এর খাজনা আদায় ও নিয়ন্ত্রণের কর্তৃত্বও ওদের হাতে। এই বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, ‘পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের সময় আমরা নিয়মিত খাজনা দিয়ে আসছি।’ এটা ভাগবাটোয়ারা হলেও তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যায় না। এটা ব্যবসায়ীরাও জানেন না। দৌলতপুর থানা বাজারের তোহা হাট বেশ বড় ও ঐতিহ্যবাহী। সপ্তাহে তিন দিনে এ হাট থেকে খাজনার টাকা নিয়মিত আদায় হলেও তা সরকার পাচ্ছে না। দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত হাট ও বাজার উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ত হাটগুলোর অন্যতম। দীর্ঘ দিন ধরে পরিচালিত হয়ে এলেও এটা সরকারের তালিকাভুক্ত নয়। অথচ স্থানীয় ইউপি নিজেরাই এটা চালায়। তারাই ‘খাজনা’ তুলে থাকেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিজেই স্থানীয় হাটের একজন ইজারাদার। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ইউনিয়নে আট-১০টি করে হাটবাজার আছে। তবে এর দু-একটি মাত্র সরকারি ইজারার।’ দৌলতপুরের ইউএনও বলেছেন, ‘কেবল সরকারই হাটবাজার ইজারাদানের মালিক। বেসরকারি জমির হাটবাজার হুট করে সরকারি তফসিলভুক্ত করা যায় না। এ জন্য আমরা নোটিশ দিয়েছি এবং আইনি প্রক্রিয়া চলছে।’
আমরা আশা করি, কোষাগার যেন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত আর না থাকে, সে জন্য সরকার আর দেরি না করে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে নলকূপ থেকে পানি নেয়ায় দলিত যুবককে পিটিয়ে হত্যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি : পাকিস্তানকে ৫৯১ রুপি দিয়ে সমাধানের ভাবনা আইসিসির এবার লিভারপুলের কাছে আটকে গেল রিয়াল মাদ্রিদ উত্তরসূরী হিসেবে রাউহির নাম ঘোষণা করলেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আইসিসি’ এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার পেল অধিকার মারবা? পারবা না। ৩ আমেরিকানকে মুক্তি দিলো চীন আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান

সকল