২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি

বাজার যেন হাতছাড়া না হয়

-

কোভিড-১৯ মহামারী দেশের জনশক্তি রফতানি খাতে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব রেখেছে। প্রবাসী আয়ে ধস সৃষ্টির উপক্রম হয়েছে। এমনকি প্রণোদনা দিয়েও তা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে ধরে রাখা যায়নি। প্রবাসী কর্মীদের বিদেশ গমন সহজ করতেও আমরা সবসময় সক্ষম হইনি। সৌদি আরব বা কাতারে ফিরে যেতে তাদের যে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় তার অবসান ঘটেছে এমনও নয়। বহু দিন পর এখন মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির সুযোগ অবারিত হয়েছে; কিন্তু প্রক্রিয়াগত কিছু বিষয় নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। জটিলতা কাটিয়ে ওঠাা না গেলে হয়তো এ বাজারও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে গত ১৯ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার সাথে এমওইউ স্বাক্ষর হয়। এবারের চুক্তিতে কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে, যা কর্মীদের স্বার্থের অনুকূল। যেমনÑ জি-টু-জি প্লাস পদ্ধতি থাকছে না। মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি সরাসরি কর্মী নিতে পারবে। কর্মীদের বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তারা মালয়েশিয়ার সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আজীবন সুবিধা পাবেন। কর্মীদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা ও ব্যয়ও নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান বহন করবে। বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮-৪৫ বছর। তবে কর্মীদের মালয়েশিয়া যেতে অভিবাসন ব্যয় বা খরচ কত হবে এখনো সেটি নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
জটিলতার কারণ মালয়েশিয়ার জনশক্তি আমদানিকারকরা বাংলাদেশের সি গ্রেডের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সাথে কাজ করতে চায় না। এই সি গ্রেডের এজেন্সিগুলোর অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়মের কারণেই ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মালয়েশিয়া। এ জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশ যথেষ্ট তৎপর এমনও নয়। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী এমন সময় মালয়েশিয়ায় গেলেন যখন সে দেশের তার প্রতিপক্ষ থাকবেন দেশের বাইরে। অর্থাৎ চলমান সফর সঙ্কট নিরসনে কোনো কাজে আসছে না। বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না সরকার। বরং তাদের চাপে ও প্রভাবেই জটিলতা বাড়ছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা একচেটিয়া মুনাফা লোটার সুযোগ ধরে রাখতে চায়। সেটি হতে দিতে চায় না মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
তবে মালয়েশিয়ায় এরই মধ্যে অবৈধ হয়ে পড়া যেসব বাংলাদেশী শ্রমিক বৈধতা পাওয়ার সুযোগ নিতে চায় তাদের সমস্যার সুরাহা হলেও হতে পারে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন দেশটির শ্রমবাজার চালু, প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের পাসপোর্ট সঙ্কট নিরসন এবং অবৈধ বাংলাদেশী কর্মীদের বৈধকরণের মেয়াদ বাড়াতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। সব মিলিয়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বড় ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়েছে। মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো এরই মধ্যে এমন আভাস দিতে শুরু করেছে যে, তারা বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে অন্য দেশ থেকে কর্মী নিতে পারে। চলতি মাসেই নেপাল থেকে কর্মী নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করেছে বলেও খবর প্রকাশ পেয়েছে।
বৈশ্বিক করোনা মহামারীর দু’বছর পর দেশটির বিভিন্ন খাতে প্রচুর বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা রয়েছে; কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের চার মাসেরও বেশি সময় পর এখনকার পরিস্থিতিতে এ বাজার ধরার সুযোগ বাংলাদেশ নিতে পারবে কি না সেটিই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে চুক্তি হওয়ার পর থেকে একশ্রেণীর দালাল গ্রামাঞ্চলের নিরীহ যুবকদের মালয়েশিয়ায় চাকরি দেয়ার নামে পাসপোর্ট ও টাকা সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সরকারিভাবে জনগণকে সতর্কও করা হয়েছে; কিন্তু তাতে দালালরা থেমে গেছে এমন নয়। দেশে পাসপোর্ট নবায়ন ও ইস্যু করা নিয়েও দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি একধরনের অদক্ষতা ও অবহেলার শিকার বলেই আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।
একটি বন্ধুপ্রতিম দেশে জনশক্তি রফতানির এ সুযোগ হাতছাড়া হলে তা বাংলাদেশের জন্য হবে আক্ষরিক অর্থেই বিপর্যয়কর। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জোগাড় হলো না বাজারের টাকা, লাশ হয়ে ফিরলেন তুহিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু ব্যাটে-বলে ভালো খেলেও দলকে জেতাতে পারলেন না সাকিব ভারতে নারী সামরিক অফিসারদের নিয়ে নেতিবাচক রিপোর্ট ভারতে নলকূপ থেকে পানি নেয়ায় দলিত যুবককে পিটিয়ে হত্যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি : পাকিস্তানকে ৫৯১ রুপি দিয়ে সমাধানের ভাবনা আইসিসির এবার লিভারপুলের কাছে আটকে গেল রিয়াল মাদ্রিদ উত্তরসূরী হিসেবে রাউহির নাম ঘোষণা করলেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আইসিসি’ এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার পেল অধিকার মারবা? পারবা না।

সকল