২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
‘সবুজ বিলে কালো চোখ’

ফসলি জমিতে কারখানা নয়

-

নয়া দিগন্তের মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, উপজেলার বয়ইররা বিলজুড়ে ধানসহ সবুজ ফসলের সমারোহ থাকলেও এসব জমি কিনে নিচ্ছে একটি দালাল চক্র। তারা জমিগুলো বড় কোম্পানিগুলোর কাছে বেচে দিচ্ছে। কোম্পানি এই সবুজ জমিতে কারখানা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়বে। সবুজের বদলে তখন উড়বে কালো ধোঁয়া।
মিরসরাই উপজেলার সৈদালী গাঁয়ের এই বিলে স্থানীয় এক মধ্যস্বত্ব ভোগকারী চক্র জমি কিনে নিচ্ছে। কলকারখানা গড়া হবে, সে জন্য জমি কিনছে ওরা। অথচ দেশের কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকারি উদ্যোগে খসড়া আইন করা হচ্ছে। এ দিকে একশ্রেণীর দালাল এই উপজেলার ফসলি জমিগুলো বড় কোম্পানির কাছে বিক্রি করছে। সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে জানা গেছে, বয়ইররা বিলে জনৈক চাষির আছে আড়াই একর জমি, যা কিনতে মাসখানেক যাবৎ একদল মানুষ সর্বত্র তাকে জ্বালাতন করছে। কিন্তু তার এক কথা, ‘বিলে বছরে তিন মৌসুম চাষবাস করে সাতজনের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করি। এ জমি হারিয়ে ফেললে আমাদের মারা যেতে হবে উপবাস করে।’ আরেক কৃষক বিলের ১২ একরে বর্গাচাষ করে সংসার চালান। চলতি মৌসুমে করেছেন ডাল ও সবজি চাষ। এতে লোকসান হচ্ছে না আগাম বর্ষণ সত্ত্বেও। বরং বৃষ্টির আগেই এর চার ভাগের তিন ভাগ ফসল ঘরে উঠেছে। কিন্তু এখন তার দুশ্চিন্তার কারণ জমি কেনার হিড়িক। বিলে সাড়ে আট একর জমিতে বর্গাচাষি, এমন একজন বললেন, ‘কলকারখানার দরুন চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেলে না খেয়ে মরতে হবে আমাদের।’
একজন জমিমালিক জানালেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের চার লেনের সড়ক বড় তাকিয়া থেকে সৈদালী গ্রামের ওপর দিয়ে গেছে। তাই কিছু লোকের নজর জমির দিকে। তারা সরল লোকজনকে ধোঁকা দিয়ে জমি কিনছে। তবে কৃষিজমি রক্ষার জন্য গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। আর সে চেয়ারম্যান বলেন, এ বিল তিন ফসলি জমি যদিও আমনের উৎপাদন কম। এখানে জমি বেচাকেনার ব্যাপারে জেনেছি। শুনেছি, দু’টি কোম্পানি কলকারখানা স্থাপনের জন্য যৌথভাবে জমি কিনছে।’
জানা যায়, ঢাকার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কারখানার জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা বয়ইররা বিলের জমি কিনছে। তাদের কেউ কেউ জমির বেশি দামও দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, ‘আমরা জোর করে কিছু করছি না।’
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিতে বলা আছে, ‘ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কৃষিজমি উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পাওয়ার ধারা রোধ করতে হবে।’ এর আলোকে উচ্চ আদালত ২০১৪ সালে রুল দিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষাপটে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন-এর খসড়া প্রণীত হচ্ছে। এর ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘যে কৃষিজমি আছে, তা সুরক্ষা করতে হবে। কোনোভাবে তার ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না।’
দেশের অগ্রগতির জন্য কৃষি ও শিল্পের বাস্তবসম্মত সমন্বয় প্রয়োজন। তবে কৃষিজমি রক্ষা করা অপরিহার্য। এ জমিতে কোনো কলকারখানা গড়া ঠিক হবে না। কারণ তাহলে কৃষির উৎপাদন কমে যাবে এবং কৃষকরা বিষম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জোগাড় হলো না বাজারের টাকা, লাশ হয়ে ফিরলেন তুহিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু ব্যাটে-বলে ভালো খেলেও দলকে জেতাতে পারলেন না সাকিব ভারতে নারী সামরিক অফিসারদের নিয়ে নেতিবাচক রিপোর্ট ভারতে নলকূপ থেকে পানি নেয়ায় দলিত যুবককে পিটিয়ে হত্যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি : পাকিস্তানকে ৫৯১ রুপি দিয়ে সমাধানের ভাবনা আইসিসির এবার লিভারপুলের কাছে আটকে গেল রিয়াল মাদ্রিদ উত্তরসূরী হিসেবে রাউহির নাম ঘোষণা করলেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আইসিসি’ এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার পেল অধিকার মারবা? পারবা না।

সকল