ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করতে হবে
- ১৮ মার্চ ২০২২, ০০:০০
নয়া দিগন্তের মেহেরপুর প্রতিনিধির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মেহেরপুরে সড়কের সম্প্রসারণ এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে রাস্তার পাশে মাটি ভরাটের নামে কৃষকদের জমির মাটি ও ফসলের ক্ষতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের এমন কাজের স্বাভাবিক প্রতিবাদ করলেই সরকারি কাজে বাধা দেয়ার মামলার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের চুপ রাখা হয় বলে জানা যায়। এ জন্য দায়ী করা হয়েছে কিছু সরকারি কর্মকর্তাকেও। এ দিকে ইচ্ছামতো মাটি কাটায় আবাদি জমিতে গভীর খাদের পাশাপাশি কষ্টের ফসল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রাস্তাসংলগ্ন জমির মালিকরা।
জানা যায়, এলজিইডি এক কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলায় আমদহ-আশরাফপুর সড়কের সাড়ে চার কিলোমিটারজুড়ে প্রশস্তকরণ করছে রাস্তার দু’পাশেই। একজন কৃষকের অভিযোগ, সড়কের ধারেই তার এক বিঘা যে জমি তা থেকে মানুষের উচ্চতার সমান গর্ত করে ঠিকাদার মাটি নিয়েছেন। বড় বড় গর্ত হয়ে যাওয়ায় এখন কৃষিকাজের যানও আর সেখানে ঢুকতে পারছে না। এক দিকে জমিতে চাষ দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে, অন্য দিকে ক্ষেতের বিদ্যমান ফসল কিভাবে ঘরে তোলা হবে, তা নিয়েও চাষিদের দুশ্চিন্তা। পূর্বোক্ত কৃষক বলেন, তার কাছে তেমন অর্থও নেই যা দিয়ে গর্তগুলো মাটি দিয়ে ভরাট করে তার জমিকে আবার চাষযোগ্য করে তোলা যাবে। তাদের ক্ষতির ব্যাপারে বলতে গেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কথা, ‘সরকারের কাজে কেউ বাধা দিতে পারে না’। অভিযোগে জানা গেছে, সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কটির একপাশে সবার জমি থেকে পাঁচ-ছয় ফুট গভীর খাদ করে মাটি কাটা হয়েছে। অথচ প্রায় সব জমিতেই এখন আছে শীতকালীন ফসল। তা উপড়ে ফেলে ঠিকাদার খেয়ালখুশি মতো মাটি তুলে নিয়েছেন। জানা যায়, রাস্তার অপর পাশেও একইভাবে মাটি কাটা হবে। এসব জমি তিন ফসলি হওয়ায় একবারে অন্তত ১৫ বিঘা এবং বছরে মোট ৪৫ বিঘা জমির ফসল ফলিয়ে থাকে কৃষকরা। বর্ষণ হলে ভাঙন ধরে জমি মালিকদের ক্ষতি বৃদ্ধি পাবে। যেভাবে মাটি কাটা হচ্ছে, তাতে এ মাটির পরিমাণ ছয় থেকে সাত লাখ ঘনফুটের কম হবে না। এলজিইডি বলেছে, দু’পাশে মাটির জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্য দিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সরকারি কাজে বাধা দেয়ার ভয় দেখিয়ে যাচ্ছেন।
মেহেরপুর জেলার সংস্কার বা প্রশস্ত করা আরো বহু সড়কের পাশের জমির মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদাররা সবসময়ই সব মাটি রাস্তার পাশের কৃষিজমি থেকে কেটে নেন। ফলে ক্ষতি হয় হাজার হাজার কৃষকের। বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। অথচ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা জমির মাটি কাটা দেখেও কিছু বলেন না। কোনো কৃষক এ নিয়ে বলতে গেলে তাকে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। এলজিইডির প্রকৌশলী পূর্বোক্ত ঠিকাদারের সপক্ষেই বলেছেন। কিন্তু গাছ রেখে সড়ক প্রশস্ত করার ব্যাপারে তার কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এলজিইডি সূত্র জানায়, ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ঠিকাদার মাটির ব্যবস্থা করবেন। জানা যায়, যে প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে, তাদের পক্ষে স্থানীয় এক ব্যক্তি ঠিকাদারি করছেন।
আমরা আশা করি, ক্ষমতার অপব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করা হবে এবং কৃষিজমির নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। অন্যথায় কৃষি ও কৃষকের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা