২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নতুন ইসির প্রথম মতবিনিময়

আস্থাহীনতার প্রতিফলন

-

শুরুতেই বড় ধরনের আস্থাহীনতার মুখে পড়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম কর্মসূচি ছিল শিক্ষাবিদদের সাথে মতবিনিময়। গত রোববার সেই মতবিনিময়ে আমন্ত্রিত ৩০ জন শিক্ষাবিদের মধ্যে উপস্থিত হন মাত্র ১৩ জন। গুরুত্বপূর্ণ আমন্ত্রিতরা আসেননি। তাদের কেউ কেউ খোলাখুলি বলেছেন, কমিশনের প্রতি আস্থা নেই বলে মতবিনিময়ে যাননি। এ অনাস্থা কেবল ইসির প্রতি তা মনে করার কারণ নেই। এটি দেশের সার্বিক ব্যবস্থাপনার প্রতিই অনাস্থার প্রকাশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল মতবিনিময়ে অংশ না নেয়ার কারণ উল্লেখ করে একটি দৈনিককে বলেছেন, অতীতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সংলাপের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কম্পোজিশন (গঠন) দেখে মনে হয়, গিয়ে কোনো লাভ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যে দৃঢ়তা, মানসিকতা এবং যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, সেটা এ কমিশনের আছে কি না, সন্দেহ। নিরপেক্ষতা, দৃঢ়তা যদি কমিশনের থাকে, তাহলে তারা খুব ভালো করেই জানেন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী করতে হবে। তিনি আরো বলেছেন, ‘এখানে সিনিয়র ব্যুরোক্র্যাটরা (জ্যেষ্ঠ আমলা) আছেন, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব আছেন, ভুয়া নির্বাচন প্রত্যক্ষভাবে দেখেছেন, কাজেই ওনারা জানেন কী করতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে ইসির একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কথাটা সত্য। কিন্তু রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে তিনি কী করবেন বা করতে পারেন! একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে করণীয় সব কিছু করার জন্য সরকারের সার্বিক সহায়তা ইসিকে পেতেই হবে। সেই সহায়তা দিতে সরকারকে বাধ্য করার মতো দৃঢ়তা এই ইসির আদৌ আছে কি না সন্দেহ। আইনি সমর্থন কিন্তু ইসির পক্ষে। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে- ‘বিড়াল মারতে হয় বাসর রাতেই’। ১৫ দিনের বেশি হয়ে গেছে বর্তমান ইসি দায়িত্ব নিয়েছে। তারা দৃঢ়তার সাথে কাজ করবে এমন আভাস দেখা যায়নি তাদের কোনো কাজে বা বক্তব্যে। স্পষ্ট করে বলা ভালো, ক্ষমতাসীন দলকে চ্যালেঞ্জ করে তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বাধ্য করতে হবে। তা হলেই ইসি পারবে, অন্যথায় নয়।
ইসির প্রথম মতবিনিময় অনুষ্ঠান যেভাবে হলো সেটিও বিস্ময়কর। অনুষ্ঠানে কোনো সঞ্চালক রাখা হয়নি। সিইসি নিজেও সঞ্চালনার দায়িত্ব নেননি। শিক্ষাবিদরা নিজেরাই ঠিক করে নেন কার পর কে বক্তব্য পেশ করবেন। এত বড় একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের একটি অনুষ্ঠান পরিচালনার এ দৃষ্টান্ত দেখে কেউ সন্দিহান হতেই পারেন যে, জাতীয় নির্বাচনের মতো একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ এরা কিভাবে সামাল দেবেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় করা একটা রেওয়াজের মতো হয়ে গেছে। কিন্তু এটি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি না ভেবে দেখার অবকাশ আছে। অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ বিষয়ে যা বলেছেন, আমাদের বিশ্বাস সেটিই যথার্থ। অর্থাৎ নিরপেক্ষতা, দৃঢ়তা যদি কমিশনের থাকে, তাহলে তাদের খুব ভালো করেই জানার কথা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী করতে হবে।
তার পরও মতবিনিময়ে যেসব সুপারিশ শিক্ষাবিদরা তুলে ধরেছেন সেগুলো ইসি আমলে নেবে এবং তার ভিত্তিতে কার্যক্রম গুছিয়ে নেবে। শিক্ষাবিদরা বলেছেন, রাজনৈতিক সমঝোতার দরকার হবে, জনমত ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না, নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক রদবদল এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, ভোটারদের সচেতন করা, বিরোধী দলগুলোকে বারবার আমন্ত্রণ জানানো, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দিতে হবে। কেউ নির্বাচনকালে একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন। এ জন্য দরকার রাজনৈতিক সমঝোতা। কিন্তু ওই দায়িত্ব প্রধানত ক্ষমতাসীন দলের। এ নিয়ে তারা একেবারেই উদাসীন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
‘যুদ্ধবিরতি ইসরাইলের জন্য কৌশলগত পরাজয়’ ডেসটিনির রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের মামলার রায় ১৫ জানুয়ারি আবারো হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার : হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ উজিরপুরে রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যাটারি চুরির হিড়িক ৯ দফা দাবিতে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমাবেশের ডাক চট্টগ্রাম আদালতে দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি চলছে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন বরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি শ্রীলঙ্কায় আকস্মিক বন্যায় পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ, ন্যায়বিচারের আশ্বাস

সকল