২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

খাদ্যনিরাপত্তায় করণীয়

-

বাংলাদেশসহ কয়েকটি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে করোনাকালে কৃষির উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অটুট ছিল। আশার কথা, উপর্যুপরি কঠোর লকডাউনের মধ্যেও একমাত্র কৃষি খাতের উৎপাদন বেড়েছে। সেই সাথে কৃষিপণ্য এবং উপকরণ বিক্রিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সৃজনশীল ব্যবহার বেড়েছে। তবে এর মধ্যেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও অতিবৃষ্টির প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সামনের দিনগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ আরো বাড়বে। আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সৃষ্ট বিপদ থেকে দেশকে রক্ষা করতে কৃষির ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। তা না হলে খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ভয়াবহ বিপদে পড়তে পারি আমরা। এ জন্য চাই কৃষি খাতে উন্নত প্রযুক্তি, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার এবং গবেষণা বাড়ানো। এক কথায় টেকসই আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা।
লক্ষণীয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন দেশের কৃষি খাতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের কৃষিতেও এর বিরাট প্রভাব পড়বে। অথচ নিকট অতীতেও আমাদের দেশ ছিল কৃষিনির্ভর। এখনো শ্রমশক্তির ৪০ শতাংশের বেশি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের প্রধান খাদ্য ভাত, মাছ, ডিম ও গোশতে স্বনির্ভর হওয়া গেছে। কিন্তু এখনো দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ দৈনিক প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার পায় না। খাদ্য উৎপাদন কম হওয়ায় সাধারণ মানুষের বেশ বড় একটা অংশ খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছে। ফলে সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য টেকসই কৃষির অগ্রগতির বিকল্প নেই।
আগামীতে একটি প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হলে শুধু উন্নত কৃষি উৎপাদন নয়, উন্নত পুষ্টি ও উন্নত পরিবেশও নিশ্চিত করা আবশ্যক। উন্নত জীবনের জন্য কৃষি খাদ্যব্যবস্থা টেকসই করা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবহার ও জলবায়ুসহনশীল কৃষি খাদ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়গুলোই হতে হবে এখনকার সময়ের অগ্রাধিকার।
এমন বাস্তবতায় এখনো আমাদের দেশের ৩২ শতাংশ মানুষ মাঝারি থেকে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছে। বাংলাদেশের কৃষি খাতে মাথাপিছু বিনিয়োগ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নিচের সারিতে। আন্তর্জাতিক এক পরিসংখ্যান মতে, নেদারল্যান্ডস কৃষি খাতে বছরে মাথাপিছু ৩১৪ ডলার, ভারত ৩৪ ডলার ও মিয়ানমার ২৬ ডলার বিনিয়োগ করে।
সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ১৬ ডলার বিনিয়োগ করা হয়। যে কারণে বাংলাদেশে হেক্টর-প্রতি ধানের উৎপাদন চার হাজার ৭৩৫ কেজি। আর চীনে তা সাত হাজার কেজির বেশি। অন্য দিকে দেশে কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা সমস্যা বাড়ছে। তাই খাদ্যনিরাপত্তা টেকসই করতে কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতেই হবে। একরপ্রতি ধানসহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও এখনো গরিব মানুষ মূলত ভাত থেকে তাদের পুষ্টিচাহিদার বড় অংশ মেটায়। তাই আমাদের পুষ্টিকর ও বহুমুখী খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিতে হবে। এ জন্য কৃষিতে শিক্ষিত তরুণদের টানতে হবে। যেহেতু আগামী দিনের কৃষি হবে প্রযুক্তিনির্ভর। এ ক্ষেত্রে কৃষি খাতে শিক্ষিত তরুণদের আগ্রহী করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি কৃষির উন্নয়নে তরুণ উদ্ভাবকদের কৃষি-গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে হবে। উদ্ভাবিত কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কাজে লাগাতে হবে। এ জন্য গবেষণায় অর্থায়ন ও পরামর্শসহায়তা বাড়ানো দরকার।
নীতিনির্ধারকদের মনে রাখতে হবে, কৃষিতে উৎপাদন না বাড়লে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব। প্রয়োজনের সময় আমদানি করে চাহিদা মেটানো সম্ভব না-ও হতে পারে। কারণ পৃথিবী আবার যুদ্ধ-বিগ্রহের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলেই মনে হয়। সঙ্গত কারণে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে আমলে নিতে হবে জলবায়ুসহিষ্ণু কৃষির উদ্ভাবন।


আরো সংবাদ



premium cement
আবারো হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার : হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ উজিরপুরে রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যাটারি চুরির হিড়িক ৯ দফা দাবিতে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমাবেশের ডাক চট্টগ্রাম আদালতে দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি চলছে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন বরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি শ্রীলঙ্কায় আকস্মিক বন্যায় পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ, ন্যায়বিচারের আশ্বাস তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছে ১২ ডিগ্রির ঘরে মিরসরাইয়ে কৃষকের ৪টি গরু চুরি

সকল