২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
কপোতাক্ষের কোটি টাকার ভূমি দখল

অবিলম্বে উৎখাত করতে হবে

-

নয়া দিগন্তের পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতার পাঠানো খবর, ‘প্রভাবশালীদের দখলে কপোতাক্ষের কোটি টাকার চরভরাটি জমি।’ জানা গেছে, দক্ষিণ খুলনার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র, পাইকগাছার কপিলমুনির প্রাণকেন্দ্রের কপোতাক্ষ নদতীরবর্তী কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি আবারো দখল হয়ে যাচ্ছে। সদরের মাছবাজারসংলগ্ন বিস্তীর্ণ চরভরাটি জমি দখল করে অবৈধ দখলদাররা বাঁশের খুঁটি-চাটাই দিয়ে ঘেরাও বা বেড়ার সাহায্যে সে জমি নিজেদের জবরদখলে নিচ্ছে।
জানা যায়, কয়েক বছর আগে উন্নয়নের নামে ট্রেড-ভিত্তিক স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে পাকা পিলার দিয়ে স্থায়ীভাবে দখলের কাজ আরম্ভ হয়েছিল। অবশ্য তখন পত্রপত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি এবং কপোতাক্ষের খনন কার্যক্রমের ফলে দখল স্থগিত হয়ে যায়। এখন বাজার সম্প্রসারণের কথা বলে সরকারের জায়গা অন্যরা দখল করে নিচ্ছে। কারা এ জন্য মূলত দায়ী এবং কারো উসকানি আছে কি না কিংবা দখলবাজরা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন পেয়েছে কি না জানা যায়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত, বাজারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অবৈধ দখল অপসারণ করাই উচিত।
এ দিকে সরেজমিন দেখা যায়, মাছের বাজার ও শহীদ স্মৃতিস্তম্ভসংলগ্ন স্থানে, কপোতাক্ষ নদতীরবর্তী সরকারি ভূমিতে কোনো ধরনের অনুমতি কিংবা ছাড়পত্র ব্যতীতই প্রভাবশালী মহল নতুন করে দখল প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। তারা খুঁটি বা রেলিং দিয়ে আলাদা আলাদাভাবে দখল শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বর্তমান দখলদারদের একজন। তার মাছকাটা আড়ত ছিল আগে থেকেই। নদ খনন ও দখল উচ্ছেদে তিনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। অন্য দিকে ক্ষতির শিকার হওয়া ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন না হওয়ায় তারা সবাই অন্যত্র চলে গিয়ে নতুন করে ব্যবসা শুরু করেন। তবে কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অনন্যোপায় হয়ে কপিলমুনি থেকে যান। সর্বশেষ, কপোতাক্ষের তীরে সরকারের জমি গড়ে উঠলে পূর্বোক্ত সাবেক ইউপি মেম্বর সেখানে মাছের কাটা আড়ত স্থাপন করেন। তার দেখাদেখি আরো পাঁচজন জায়গা দখল করে নিয়েছেন। এমনকি, রাস্তার অন্যপ্রান্তে লাখ লাখ টাকার সম্পত্তি জবরদখল হবার শঙ্কা রয়েছে।
আলোচ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, দখলদার সবাই বিরাট অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে চরভরাটি সরকারি জমি দখল করে নিয়েছে। এরপর একমাস সময় পার হলেও অবৈধ দখল অপসারণে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয়ায় গুরুতর প্রশ্ন জেগেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কপিলমুনি হাটবাজার কমিটির প্রধান বলেন, ‘কয়েক কোটি টাকার জমি অবৈধভাবে দখলের বিষয়ে ইউএনওকে জানানো হয়েছে। তার আইনি ব্যবস্থার জন্য অপেক্ষা করছি।’ ইউএনও জানান, ‘জায়গাটি পাউবোর। তারা চাইলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
নিজেরা দায়িত্ব এড়িয়ে, অন্যকে দোষারোপ করে সমস্যার সুরাহা হয় না। তাই অবিলম্বে সব দখলবাজির অবসানই আশু কাম্য। অন্যথায় সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়া অব্যাহত থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement