২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে নৈরাজ্য

নজরদারি বাড়াতে হবে

-

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনদুর্ভোগ দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যমান। সরকার যখন বলে, বিশেষ একটি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই, তখনো ব্যবসায়ীরা সে পণ্যের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেয়। কারণ ছাড়াই শুধু বাড়তি মুনাফার লোভে দাম বাড়িয়ে দেয়া এখন ব্যবসায়ীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াÑ যেকোনো কারণেই হোক তা আর সক্রিয় বা কার্যকর নেই। ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে চলমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তার প্রমাণ।
মাত্র মাসখানেক আগে সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে দাম দু’বার বাড়ানোর দৃষ্টান্ত প্রথম স্থাপন করেছে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে আবারো দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিন ধরে ভোজ্যতেল নিয়ে রীতিমতো নৈরাজ্য চলছে বললেও কম বলা হয়। সরকার নির্ধারিত দামও কেউ মানছে না। দোকানিরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দামে ক্রেতাদের কাছে সয়াবিন তেল বিক্রি করছে। খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম এখন ২০০ টাকায় উঠেছে। খোলা সয়াবিন তেল বাজার থেকে প্রায় উধাও। অনেকেই সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে পণ্যটি কিনতে পারছে না অগ্নিমূল্যের কারণে।
বাজার নিয়ন্ত্রণ বা নজরদারিতে সরকারের নানা প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলো সক্রিয় করতে বহুবার নানাভাবে তাগিদ দেয়া হয়েছে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে; কিন্তু সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিজেদের দায় শুধু অস্বীকারই করেনি; স্পষ্ট করেই বলেছেÑ তাদের কিছুই করার নেই। এ পরিস্থিতিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশ দিতে হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়, মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর এখন সক্রিয় হয়েছে। সয়াবিনের আমদানি, দেশীয় উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অনুসন্ধান করা হচ্ছে অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধেও। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকারের এজেন্সিগুলো। আর জেলাপর্যায়ে সব ডিসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বাজার নজরদারির। এমনকি গোয়েন্দা নজরদারিও চালানো হচ্ছে। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ভোজ্যতেল নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই রিপোর্টে মধ্যস্বত্বভোগীরা কিভাবে ভোজ্যতেলের অবৈধ মজুদদারি করছে সেসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার একটি প্রতিষ্ঠানের অবৈধ মজুদের ২২ হাজার লিটার জব্দ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি সিলগালার পাশাপাশি নগদ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। ভোজ্যতেলের বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব রিফাইনারিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। গত তিন মাসের আমদানির পরিমাণ, রিফাইন করে বাজার সরবরাহ কতটুকু করা হয়েছে সেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরবরাহ পর্যায়ে সমস্যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ভোক্তা অধিকার অধিদফতর যে কাজ করতে পারে তার প্রমাণ এতদিনে পাওয়া গেল। কিন্তু প্রশ্ন হলোÑ এসব কাজ কেন এতদিন করা হয়নি? তেলের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে স্বয়ং সরকারপ্রধানকে কেন নির্দেশ দিতে হবে? তা হলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কী?
শুধু ভোজ্যতেল নয়, কয়েক মাস ধরেই বাড়ছে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, চিনিসহ প্রায় সব ভোগ্যপণ্যের দাম। বাস্তবে পণ্যবাজারে রীতিমতো বিশৃঙ্খলা চলছে। এসব ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় একই রকম ব্যবস্থা নেবে কি না অথবা প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকবে সেটিই এখন দেখার বিষয়। কারণ শুধু সয়াবিন মজুদের বিরুদ্ধে দু-একটি অভিযান চালানো আর অর্থদণ্ড দেয়া যথেষ্ট নয়। এসব ব্যবস্থা কোনো স্থায়ী সমাধানও নয়। যখন তখন পণ্যের দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করাই মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কাজ। সব বিষয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশের অপেক্ষা করা হলে জনমনে এমন প্রশ্ন দেখা দেয়া অস্বাভাবিক নয় যে, দেশ কি আদৌ ঠিকমতো চলছে?


আরো সংবাদ



premium cement
কুয়েটের ১২ শিক্ষক-কর্মচারী বরখাস্ত চট্টগ্রামের আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে মানববন্ধন সূচকের উত্থানে ডিএসইতে লেনদেন চলছে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি ড. ফরহাদের চৌগাছায় অস্ত্র ও গুলিসহ আটক ১ ইসকনের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান মির্জা ফখরুলের সাইফুল হত্যাকাণ্ডে ইসকনের শোক, দায় নেবে না বহিষ্কৃত চিন্ময়ের কর্মকাণ্ডের র‍্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আলগামনচালক নিহত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন মমতা ব্যানার্জি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ‘যুদ্ধবিরতি ইসরাইলের জন্য কৌশলগত পরাজয়’

সকল