জনপ্রতিনিধিরা দায় এড়াতে পারেন না
- ০২ মার্চ ২০২২, ০০:০০
একটি সহযোগী জাতীয় দৈনিক পত্রিকা তাদের সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি সূত্রে একটি খবর ছাপিয়েছে, যার শিরোনাম, ‘৪০ দিনের কাজের নামে লটারি : মূল তালিকায় সচ্ছলরা।’ এর শোল্ডারে লেখা হয়েছে- ‘প্রতিবাদের মুখে কাজ বন্ধ’ আর নিচে ছাপা হলো : পরস্পরকে দোষারোপ করছেন ইউপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান।
এ প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচির লটারিতে নাম উঠলেও তালিকায় নাম না থাকা, দুস্থ ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে লটারির বাইরে বহিরাগত সচ্ছল লোকজন দিয়ে তালিকা তৈরি করা, প্রয়োজনীয় রেজিস্টার বই ও ‘সর্দার’ নির্ধারণ না করেই কাজটি আরম্ভ করে দেয়া, নদীর মাটি কেটে সরকারের কাজে লাগানোসহ বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এ ক্ষেত্রে। এসব অভিযোগ এলাকার বঞ্চিত দুস্থ মানুষের। এমনকি, তাদের জোরালো প্রতিবাদে এ কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে তাড়াহুড়ো করে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মঙ্গাকালে বেকার, দরিদ্র, অসহায় মানুষকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সৃষ্টি করা সরকারি এ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং উপজেলাপর্যায়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) পরস্পর দোষারোপ করে নিজ নিজ দায় এড়িয়ে যাওয়ার দরুন বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত দুস্থরা। এ দিকে বোতলাগাড়ীর নতুন চেয়ারম্যানের কথা হলো, ‘সব নিয়মকানুন মেনেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সচ্ছল কিংবা অন্য সুবিধাভোগীদের নেয়া হয়নি।’ তবে তিনি একই সাথে ‘ভুলের সম্ভাবনা’র আশঙ্কা করে বলেছেন, তালিকাতে সচ্ছল বা সুবিধাভোগী কেউ থাকলে ‘নাম সংশোধন করা হবে’। সেটি কখন সম্পন্ন হবে, জানা যায়নি। জানা গেছে, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক ব্যক্তি স্ত্রীর জন্য আবেদন করেছেন যেন তাদের ৪০ দিনের কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে মোতাবেক, লটারিতে তাদের নাম উঠেছে। কিন্তু তাদের পরিবর্তে ‘বহিরাগত’ ব্যবহার করে মাটি কাটা হচ্ছে। বঞ্চিতরা এ ব্যাপারে কারণ জানতে চান। তখন একজন নিজেকে ‘সর্দার’ দাবি করে বলছেন, ‘তালিকায় এ ব্যক্তিদের নামই নেই।’ এটা শুনে তারা প্রশ্ন করেন, ‘লটারির নাম তালিকায় কেন নেই?’ তখন ‘সর্দার’ কোনো সদুত্তর না দিয়ে জানান, ‘এ বিষয়ে জানেন মেম্বর-চেয়ারম্যান।’ এটা জেনে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান নতুন লোক নিয়োগ করে কাজ করাচ্ছেন।’ এই খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান দ্রুত হাজির হয়ে অভিযোগটি শোনেন। তিনি সাথে সাথে মুঠোফোনে পিআইওর কাছে জানতে চান লটারিতে ওঠা নামগুলো বাদ দিয়ে সেখানে নতুন নাম দেয়ার ব্যাপারে। পিআইও জবাব দেন, ‘এমন কিছু হয়নি। তবে তা করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররাই করেছেন।’ এ সময় ওয়ার্ডের মেম্বর এসে লাঞ্ছিত হন বঞ্চিত লোকজনের হাতে। উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের শান্ত করে সমস্যাটার সুষ্ঠু সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই মেম্বর স্বীকার করেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নাম কেটে অন্যদের নেয়া হয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, ‘পরে এটা সংশোধন করা হবে।’ পাশের দু’ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। তালিকায় নাম থাকার পরও তা বাদ দেয়ার অভিযোগ আরো পাওয়া যায়। অভিযোগ করা হয়েছে, ইউপির মেম্বর-চেয়ারম্যান কোনো ধরনের লটারি করা ব্যতীতই পছন্দের লোককে গোপনে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কাঠারিপাড়ার এক প্রৌঢ় মহিলার কথা, ‘অসুস্থ স্বামীকে দেখার নেই কেউ। সরকারি মাটি কেটেও সুবিধা পাইনি। এবার আমাকে বাদ দিয়ে অন্যদের কাজে নেয়া হয়েছে। অথচ তারা ১০ টাকার চালের কার্ড ও ভাতাও পেয়েছেন।’ উপজেলা চেয়ারম্যানের দাবি, ‘নিজেরা অনিয়ম করে কেউ কেউ রাজনৈতিক কারণে অপপ্রচার করছেন। অভিযোগ খতিয়ে অনিয়ম দূর করা হবে।’
জনগণের প্রতি সব জনপ্রতিনিধি অবিলম্বে দায়িত্ব প্রতিপালনে ব্রতী হবেন বলে আমরা আশা করি। তারা নিজেদের দায় এড়াতে পারেন না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা