২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জন্মনিবন্ধনে নানা ভোগান্তি

জন্মই যেন ‘আজন্ম পাপ’!

-

বগুড়াসহ দেশের নানা স্থানে জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে গিয়ে জনগণ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে বলে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে গুরুতর অনিয়ম এবং উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা এক দিকে প্রয়োজনে ফ্রি সেবা প্রদান, অন্য দিকে কয়েক শ’ টাকা উৎকোচ নেয়ার কথা বলেছেন। নয়া দিগন্তে জন্মনিবন্ধে ভোগান্তি না কমার কথা এসেছে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে, যা বগুড়া থেকে প্রেরিত। এতে উল্লেখ করা হয়, বগুড়ায় নতুন নিয়মে জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে নাগরিকদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে চরমভাবে। এতে সময় ও অর্থ- উভয়েরই অপচয় ঘটছে। অবশ্য বহু ভোগান্তির পরও জন্মসনদ পেয়ে জনগণ খুশি।
প্রচলিত আইন অনুসারে, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্মসনদ কিংবা মৃত্যুসনদ ব্যতীত বর্তমানে সরকারি এবং বেসরকারি বহু নাগরিকসেবা আর মিলছে না। এ কারণে নাগরিকসেবা পাওয়ার উদ্দেশ্যে এ দু’টি সনদ পেতে সবাই ছুটছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভা অফিসে। কিন্তু এ সনদপ্রাপ্তির কাজটা বেশ ঝামেলাপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে পদে পদে নানাবিধ হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে লোকজনের এক দিকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং অপর দিকে বাড়তি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় নাজেহাল হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জানা যায়, নতুন জন্মনিবন্ধনের ঝামেলা অতটা বেশি না হলেও পুরনো জন্মসনদ সংশোধনের কাজে জনগণের হয়রানির শেষ নেই।
নিয়ম মোতাবেক, নয়া জন্মসনদের জন্য অনলাইনে আবেদন নিজে করলে নির্ধারিত সরকারি ফি-সমেত ৩০০ টাকা এবং আর কাউকে দিয়ে এ কাজ করালে ৫০০ টাকা ব্যয় হবে। সংশ্লিষ্ট সনদ পাওয়া যায় এক সপ্তাহ পরে। জন্ম ও মৃত্যুর সনদের খরচ এবং সময় একই সমান। কিন্তু আগের জন্মসনদ সংশোধন আইনের কঠোরতার কারণে মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। বিশেষত অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেয়া, এর কপি প্রিন্ট করা এবং সরকারের প্রাপ্য ফি জমা দিয়ে তা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করার পর ইউএনওর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কর্মকর্তার কাছে দেয়া প্রভৃতি কাজ বেশ ঝামেলার। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতরে যথেষ্ট জনশক্তি না থাকায় সনদের জন্য জনগণের আবেদন পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার কাজে ১০ থেকে ১৫ দিন খরচ হয়ে যায়। এরপরও তা জোগাড় করে আবার ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় জমা দিলে জন্মনিবন্ধন শাখা তা অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে নেয়। তারপর পৌর কর্মকর্তা, কাউন্সিলর ও মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর লাগে সনদে। এ দিকে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের নিবন্ধন শাখায় সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়ায় যথাসময়ে জন্ম বা মৃত্যুর সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। সার্ভারে ধীরগতি নাগরিকসেবা পেতে জনদুর্ভোগ বাড়িয়েছে।
এ ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হয়ে বগুড়ার একজন মহিলা জানান, ছেলের জন্মনিবন্ধন সংশোধন করাতে পৌর দফতরে গেলে তার বাবা-মায়ের অনলাইন জন্মনিবন্ধনের জন্য বলা হয়। এ জন্য মাসখানেক সময় ধরে পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদে আসা-যাওয়া করতে হয়েছে। নতুন বিধিনিষেধের দরুন এটা হচ্ছে। উপজেলাপর্যায়ে না গিয়ে পৌর কার্যালয়েই সনদ সংশোধনের ব্যবস্থা রাখা হলে তা জনগণের ভোগান্তি হ্রাস হবে বলে জনগণ মনে করে। বগুড়ার একজন কাউন্সিলর দাবি করেন, প্রতি ওয়ার্ড অফিসে কম্পিউটার সেট থাকায় এবং পৌরভবনে উদ্যোক্তা নিয়োগ করায় জনসাধারণ সহজেই এখন অনলাইনে আবেদন করতে পারে। বগুড়ার মেয়র বলেছেন, ‘দুর্ভোগ ব্যতিরেকে যাতে সেবা কার্যক্রম চালানো যায়, এ জন্য সর্বদাই আমরা তৎপর। তবে সার্ভার সমস্যায় কিছু দিন ধরে অনেকের ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন, স্থানীয় সরকার বিভাগে অবহিত করা হয়েছে। জানা গেছে, সার্ভারের প্রয়োজনীয় কাজ করা হচ্ছে, যা শেষ হলে আর সমস্যা হবে না। নিয়মের কারণে আবেদনকারীকে উপজেলা পরিষদে যেতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কোনো করণীয় নেই।’
জন্মসনদের কাজে ঝামেলা দেখে মনে হয়, ‘জন্মই যেন আজন্ম পাপ’, যা মোটেও সত্য নয়। মহান স্রষ্টা মানুষসহ সব প্রাণীর জন্ম-মৃত্যু নির্ধারণ করে রাখেন, যা মানুষের আয়ত্তের বাইরে। এ ঝামেলা বা হয়রানি যত শিগগিরই দূর হবে, ততই মঙ্গল।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চট্টগ্রামের আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে মানববন্ধন সূচকের উত্থানে ডিএসইতে লেনদেন চলছে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি ড. ফরহাদের চৌগাছায় অস্ত্র ও গুলিসহ আটক ১ ইসকনের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান মির্জা ফখরুলের সাইফুল হত্যাকাণ্ডে ইসকনের শোক, দায় নেবে না বহিষ্কৃত চিন্ময়ের কর্মকাণ্ডের র‍্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আলগামনচালক নিহত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন মমতা ব্যানার্জি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ‘যুদ্ধবিরতি ইসরাইলের জন্য কৌশলগত পরাজয়’ ডেসটিনির রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের মামলার রায় ১৫ জানুয়ারি

সকল