২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
গড়াই নদীর প্রচণ্ড ভাঙন

গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্প বাঁচান

-

নয়া দিগন্তের শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতার পাঠানো প্রতিবেদনে জানানো হয়, গড়াই নদীর অবিরাম ভাঙনে অনেক বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে এবং হুমকির মুখে পড়েছে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ কয়েক শ’ বাসগৃহ। নদীতে সবকিছু হারিয়ে এখন এলাকায় অনেকেই নিঃস্ব।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণত বর্ষণ মৌসুমে নদীটির ভাঙনের তীব্রতা দেখা গেলেও এ বছর শীত মৌসুমে বিশেষত স্থানীয় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ভাঙন জোরদার। ক্ষতিগ্রস্ত এসব এলাকায় ভাঙনরোধে সরকারের কোনো পদক্ষেপ আজ পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয়নি।
আলোচ্য প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- চরম ঝুঁকিতে রয়েছে সরকারের গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িসহ পূর্ব ও পশ্চিম মাদলা, খুলুমবাড়ি, জালশুকা, নলখুলা, সুবিরদাহ, গোবিন্দপুর ও কাশিনাথপুর গ্রামের বাড়িঘর। বহু দিন ধরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোনো ধরনের সংস্কার না করায় এখানে বাঁধে ফাটল ধরে তা নদীতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। গড়াই নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে বিগত দু’যুগে অনেক কিছু হারিয়ে শৈলকুপা উপজেলার ম্যাপ পর্যন্ত বদলে গেছে। ভাঙনের ফলে বাড়িভিটা, জমিজিরাতসহ সব সহায় সম্বল হারিয়ে কেউবা আশ্রয় নিয়েছেন নদীর অন্য পারের নতুন চরে আর কেউ গেছেন তাদের দৃষ্টিতে ‘নিরাপদ’- এমন সব আশ্রয়ে। একজন গ্রামবাসী বলেন, নদীর ভাঙন তীব্র বলে এলাকার বহু বসতবাটি ও আবাদি জমি যেকোনো মুহূর্তে নদীতে হারিয়ে যেতে পারে। এলাকাবাসী তাই অত্যন্ত আতঙ্কিত। অবিলম্বে নদীভাঙন প্রতিরোধ করা না গেলে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণের ঘরসহ অনেকের বাড়িভিটা ও চাষাবাদের জমিসমেত বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড হারিয়ে যাবে। সব সম্বল হারিয়ে প: মাদলার এক নারীর পরিবার পরিজন সবাই চলে গেলেও তিনি স্বামীর ভিটামাটি আঁকড়ে আছেন। তবে তিনি অত্যধিক কষ্টে দিন যাপন করছেন। তিনি বলেছেন, ‘নদীর ভাঙনে সব হারিয়ে অনেকটা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আমার পরিবারের লোকজন অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।’
এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘খুলুমবাড়ি থেকে কাশিনাথপুর- এই পাঁচ কিলোমিটার বাঁধ অনেক দিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। তাই নদীতে হারিয়ে যাওয়ায় এর অস্তিত্ব এখন নেই। এ দিকে বহু বাড়িঘরসহ ঝুঁকিতে রয়েছে গুচ্ছগ্রামের ঘরগুলো এবং সেই সাথে আশ্রয়ণ প্রকল্প। খুব দ্রুত উদ্যোগ না নিলে জনপদটি রক্ষা করা যাবে না।’ শৈলকুপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দাবি করেছেন, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছ থেকে তেমন কোনো অভিযোগ পাইনি। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব। আরেক আমলা, ঝিনাইদহের পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন, ‘আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্যই নেই! তা পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তথ্য ‘না পাওয়া’র কথা যেমন বিস্ময়কর, তেমনি কখন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা-ও জানা যায়নি।
আমরা চাই, গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসহ ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি নদীর ভাঙন থেকে বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে সরকার।

 


আরো সংবাদ



premium cement