২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
কটিয়াদীতে সিসার প্রভাবে গরুর মড়ক

ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিন

-

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার এক ইউনিয়নে বিষাক্ত সিসার প্রভাবে গরুর মড়ক লেগেছে। পুরনো ব্যাটারি ভেঙে তা থেকে সিসা সংগ্রহ করার কারখানা স্থাপনের কারণে এমন অবস্থা হয়েছে বলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় জানা গেছে। দেশে পরিবেশের বিরূপ প্রভাব যে কতটা ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করছে, এটি তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
দীর্ঘদিন ধরে ভাট্টা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে চান্দপুর হাওরে পুরনো ব্যাটারি ভেঙে সিসা সংগ্রহের কারখানা পরিচালিত হয়ে আসছিল। বিভিন্ন এলাকা থেকে পুরনো ব্যাটারি সংগ্রহ করা হতো এখানে। কারখানার সিসা ও জ্বালানির বর্জ্য পদার্থ এলাকার ফসলি জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। সিসা ও জ্বালানির বর্জ্যরে বিরূপ প্রভাবে ঘাস ও পানি দূষিত হয়ে গেছে। সেই ঘাস ও পানি পান করে এলাকায় গৃহস্থের পালিত গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মড়ক লেগে যায়। এই প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের বরাতে নয়া দিগন্তে প্রকাশিত কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জানুয়ারির শুরু থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিষক্রিয়ায় ২০টি গরু মারা গেছে। তবে এলাকাবাসীর কেউ কেউ দাবি করেন, এক মাসে অন্তত ৩০টি গরু মারা গেছে। অজ্ঞাত রোগে গরুর মৃত্যুর খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও কটিয়াদী উপজেলা ভেটেরিনারি অফিসের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মৃত ও আক্রান্ত গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ৪ জানুয়ারি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠায়। ১০ জানুয়ারি প্রতিবেদনের ফল পাওয়ার পর জানা যায়, সংশ্লিষ্ট এলাকায় খড় ও পানিতে অতিমাত্রায় সিসার উপস্থিতি রয়েছে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আক্রান্ত এলাকায় জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প-কারখানা এলাকা এবং এর আশপাশের পরিবেশে উৎপাদিত এবং প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গোখাদ্য ও পানি পরিহার এবং গবাদিপশুর মাঝে বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, ল্যাব প্রতিবেদনে দেখা যায় আক্রান্ত এলাকায় খড় এবং পানিতে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সিসার কারণেই গরু মৃত্যুর সংখ্যা ও অসুস্থ হয়ে পড়ার বিষয়টি বেড়ে যাচ্ছে। বাতাসে অতিমাত্রার সিসা মানবদেহেও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
কটিয়াদীতে বাড়তি আয়ের আশায় প্রতি বাড়িতেই গরু পালন করা হয় দীর্ঘ দিন ধরে। কিন্তু গরুর হঠাৎ মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। চান্দপুর ইউনিয়নে এক মাসে ৩০টি গরুর মৃত্যু ছাড়াও অসুস্থ হয়ে পড়েছে আরো শতাধিক গরু। উপযুক্ত চিকিৎসা ও কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ওই এলাকায় গরুর মৃত্যুহার বাড়ছে। এক মাসে এত গরু মারা যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গবাদিপশু পালনকারীরা।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইতোমধ্যে স্থানীয় ব্যাটারি কারখানার মালিকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এতদিন ধরে কারখানাটি যে চালু ছিল এর কোনো অনুমোদন ছিল কিনা? থাকলে কিভাবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারখানা চালানোর ছাড়পত্র দেয়া হলো? পাশাপাশি এত গরুর মৃত্যুতে কৃষকদের যে ক্ষতি হলো এর দায় কে নেবে? আর এলাকার পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে ওই বিষয়টি তো রয়েছেই।
আমরা মনে করি, শুধু ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে বিষাক্ত সিসা ছড়ানোর কারখানাটি বন্ধ করে দিলেই প্রশাসন এবং কারখানা মালিক দায়মুক্তি পেতে পারেন না। গরু মারা যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক ক্ষতির দায় কিছুটা হলেও এই দুই পক্ষকে নিতে হবে। সেই সাথে কারখানা মালিক যদি আইন লঙ্ঘন করে তার প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে থাকেন; তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
কাউনিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে ব্যবসায়ী নিহত মুন্সিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের স্বীকৃতি ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত শ্রম কমিশনের অগ্রাধিকার দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে, এখন দেশ গড়ার পালা : তারেক রহমান অনলাইনে সিম সেবা চালু করেছে টেলিটক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের বিক্ষোভ শাহবাগ থানা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকাতেই রাখার সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সাঁথিয়ায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সভা সিলেটে পরকীয়া প্রেমিকসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক সঙ্কট : শিবির সভাপতি মনিরামপুরে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বামী গ্রেফতার

সকল