২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখুন

ছাত্রদের ক্ষতি পুষিয়ে নিন

-

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখতে একটু যেন বেশিই উৎসাহী দেখা যাচ্ছে। প্রথম দফায় একটানা দেড় বছর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কঠোরভাবে বন্ধ রাখা হয়। অথচ অন্য প্রায় সব জাতীয় কর্মকাণ্ড বেশির ভাগ সময় স্বাভাবিক ছিল। এভাবে কেবল শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রাখার মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া গেছে এমন কোনও পর্যবেক্ষণ কেউ দেয়নি। সম্প্রতি সরকার দুই সপ্তাহের জন্য আবারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা বেশি জরুরি।
নতুন করে শুরু হওয়া করোনা প্রবাহের মধ্যে দুই সপ্তাহে হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। শনিবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন দুই হাজার ২৬৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী । সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, করোনার জন্য নির্ধারিত শয্যার ৮০ শতাংশ এখনো ফাঁকা। অন্য দিকে, আইসিইউ ফাঁকা ৭৪ শতাংশ। তবে জানুয়ারির শেষে এসে সংক্রমণ বাড়ছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত বাড়ার আলামত দেখা যাচ্ছে। ২২ জানুয়ারি মোট নমুনার ২৮ দশমিক ২ শতাংশ করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি এসে এই হার দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অন্য দিকে, এতে মৃতের সংখ্যা ২২ জানুয়ারি ছিল ১৭ জন, ২৮ জানুয়ারি বেড়ে হয়েছে ২০ জন। সংক্রমণের হার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও এর ভোগান্তি ও মৃত্যুঝুঁকি আগের মতো নয়। শীতকালীন ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবের সাথে তুলনা করে দেখলে এর প্রকৃত ধরনটি আমরা বুঝতে পারব। দেখা যাচ্ছে, আগের মতো গণহারে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে না আবার আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মারাত্মক জীবনসংশয়েও পড়ছেন না।
এদিকে সরকারের টিকাদান কর্মসূচি চলমান। ইতোমধ্যে ৯ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। চলতি মাসে টিকাদান কর্মসূচি আরো বেগবান হয়েছে। এই মাসেই দেয়া হয়েছে দুুই কোটি ২৭ লাখ মানুষকে এক ডোজ টিকা। এই অবস্থায় জাতীয় পর্যায়ে কোনো কর্মকাণ্ডের ওপর কোনো বিধিনিষেধ নেই। এমনকি যেসব বিধিনিষেধ রয়েছে সেগুলোও প্রতিপালিত হচ্ছে না। শুধু স্কুল বন্ধ করে দেয়া হলো। সরকার পরিস্থিতির গভীরতা উপলব্ধি করার আগেই ২৩ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি দুই সপ্তাহের জন্য স্কুল বন্ধ করে দিলো। ইতোমধ্যে জাতিসঙ্ঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ স্কুল খোলা রাখার আহবান জানিয়েছে। এ সংস্থার কাছে করোনাকালীন শিশুদের বিপর্যয়কর মানসিক অবস্থার পরিসংখ্যান রয়েছে। বাসায় আবদ্ধ পরিবেশে দিনভর বসে থাকার চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে যাওয়া শিশুমনের জন্য অনেক বেশি উপকারী বলে তারা জানাচ্ছে। সে জন্য প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সারা বিশ্বের সরকারগুলোর কাছে শিশুদের আনন্দদায়ক পাঠদান ও স্কুল বন্ধ না রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে ।
আশার ব্যাপার হলো কিছু উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এতে করে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে না। একইভাবে এখন পর্যন্ত দেশে অন্য সব কার্যক্রম পূর্ণ সচল। দোকানপাট বিপণিবিতান ও গণজমায়েতের জায়গায়, গণপরিবহনে মানুষ অবাধে চলাচল করছে। সামাজিক পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিও স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে। অথচ আগেভাগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি করা হচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা মনে করি স্কুলকার্যক্রম ৬ ফেব্রুয়ারির পর আর বন্ধ না রাখা হোক। অন্যসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও নতুন করে তাদের আংশিকভাবে বন্ধ হওয়া শিক্ষাকার্যক্রমও পূর্ণ চালু করা হোক। করোনা সংক্রমণ সামনে আরো কিছুটা বাড়তে পারে। ওই অবস্থায়ও যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত না নেয়া হয়। আমরা মনে করি, শিক্ষাকার্যক্রম যেকোনো পরিস্থিতিতে সচল রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। কারণ ইতোমধ্যে যে বড় ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


আরো সংবাদ



premium cement
মুন্সিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের স্বীকৃতি ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত শ্রম কমিশনের অগ্রাধিকার দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে, এখন দেশ গড়ার পালা : তারেক রহমান অনলাইনে সিম সেবা চালু করেছে টেলিটক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের বিক্ষোভ শাহবাগ থানা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকাতেই রাখার সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সাঁথিয়ায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সভা সিলেটে পরকীয়া প্রেমিকসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক সঙ্কট : শিবির সভাপতি মনিরামপুরে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বামী গ্রেফতার ইসকন সদস্যদের বাধায় চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনে আমদানি-রফতানি বন্ধ

সকল