২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ঢাকায় ছয় বছরে ৩৮ দিন নির্মল বাতাস

বায়ুদূষণ নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই

-

গত ছয় বছরে মাত্র ৩৮ দিন বা ২ শতাংশ সময় নিরাপদ বায়ু সেবন করেন রাজধানীবাসী। বাকি সব দিনই ঢাকার বায়ুর মান ছিল অস্বাস্থ্যকর থেকে দুর্যোগপূর্ণ। বিশ্বের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্যানুযায়ী, ৩৮ দিন রাজধানীর বায়ুর মান ছিল শূন্য থেকে ৫০, যা ভালো। ওই দিনগুলো ভারী বৃষ্টি, ঈদের ছুটি ও কঠোর লকডাউনের মধ্যে পড়েছে। এ সময়ে যানবাহন ও মানুষের চলাচল কম ছিল। কলকারখানা ও ইটভাটা বন্ধ ছিল। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে ২৬ শতাংশ (৫১০ দিন) চলনসই মানের, ২৯ শতাংশ (৫৭৭ দিন) সংবেদনশীল, ২২ শতাংশ (৪৪৩ দিন) অস্বাস্থ্যকর, ১৯ শতাংশ (৩৮৫ দিন) খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ২ শতাংশ (৩৭ দিন) দুর্যোগপূর্ণ ছিল ঢাকার বায়ু। সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের হিসাবে, ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে ঢাকার বায়ুর মান ১২ শতাংশ খারাপ হয়েছে। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে গড় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। অন্য দিকে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের থেকেও ২০২১ সালে গড় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে ৭ শতাংশ।
এক গবেষণার তথ্য মতে, ঢাকার বাতাস বিষিয়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি ৩০ শতাংশ দায় অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজের। আমাদের নীতিনির্ধারকরা এটা বিবেচনায় নেন না যে, আমাদের সেই উন্নয়ন দরকার, যা জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয় না। দেশের চলমান উন্নয়ন যে পরিবেশবান্ধব নয় তা সাদা চোখেই দৃশ্যমান। এখনো ২৯ শতাংশ বায়ুদূষণের উৎস ইটভাটা ও শিল্পকারখানা। অন্যান্য উৎসের মধ্যে যানবাহনের কালো ধোঁয়া ১৫ শতাংশ, আন্তঃদেশীয় বায়ুদূষণ ১০ শতাংশ, গৃহস্থালি ও রান্নার চুলা থেকে নির্গত দূষণ ৯ শতাংশ এবং বর্জ্য পোড়ানোর কারণে ৭ শতাংশ বায়ুদূষণ হয়ে থাকে।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ক্যাপসের তথ্য বলছে, ঢাকায় বিকেল ৪টার পর বায়ুর মান খারাপ হতে শুরু করে; রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে। গত ছয় বছর রাত ১টায় বায়ুর মান ছিল ১৬২, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সর্বোচ্চ। রাত ১০টার পর দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে মালবাহী প্রচুর ট্রাক ঢাকায় ঢোকে। এগুলো থেকে ধুলোর পরিমাণ বাড়ে। আর সিটি করপোরেশন রাতের বেলা ঢাকার রাস্তা ঝাড়– দেয়ার নিয়ম চালুর পর থেকে বাতাসে ধুলোবালি বেশি উড়ছে।
রাজধানীর বায়ুদূষণের উৎসের বড় বদল ঘটেছে। পরিবেশ অধিদফতরের ২০১২ সালের জরিপ অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎস ছিল ইটভাটা, ৫৮ শতাংশ। ২০২০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে বায়ুদূষণের মূল উৎস বলা হয় যানবাহন ও শিল্পকারখানার ধোঁয়াকে, যাতে ৫০ শতাংশ বায়ুদূষণ হয়। কিন্তু এক বছরের মাথায় ক্যাপসের গবেষণা বলছে, ঢাকার বাতাসে দূষিত বস্তুর উৎস হিসেবে ইটভাটা এবং যানবাহন ও শিল্পকারখানার ধোঁয়ার স্থান দখল করেছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি আর নির্মাণকাজ। দেখা যাচ্ছে, বায়ুদূষণে ঢাকায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি, আইনের দুর্বলতা ও প্রয়োগে সীমাবদ্ধতায় এ অবস্থা হয়েছে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। থাকলে শহরের বায়ু সম্পর্কে যথাযথ তথ্য সাধারণ মানুষকে পরিবেশন করা হতো।
অথচ সরকার সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে বরাদ্দ অর্থ ঠিকমতো খরচ করলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। শুষ্ক মৌসুমে ঢাকায় দৈনিক দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর পানি ছিটানো, নির্মাণকাজের স্থান ঢেকে রাখা, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, পরিবেশবান্ধব কংক্রিটের প্রচলন, ফিটনেসহীন গাড়ি বন্ধ করলে বায়ুদূষণ বিপজ্জনক পর্যায়ে যেত না।


আরো সংবাদ



premium cement
সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের : ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ‘রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো দল বা গোষ্ঠির নয়’ রোহিঙ্গারা এনআইডি নেয়ার অপচেষ্টা চালালে ইসিকে জানানোর আহ্বান আলিফের পরিবারকে এক কোটি টাকা দেবে শামসুল হক ফাউন্ডেশন জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারাই যাবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে : জামায়াত আমির এক সপ্তাহ পর বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলের সিদ্ধান্ত সমন্বয়কদের ওপর হামলা হালকাভাবে দেখছে না সরকার কমছে ৪৭তম বিসিএসের আবেদন ফি গাজীপুরে কোরআন অবমাননার অভিযোগে কলেজছাত্র গ্রেফতার অযাচিত অস্থিরতা নয়, দায়িত্বশীল হোন সুখী : দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন

সকল