তাহলে কেমন এই অভিযান?
- ০৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের রতœপুর নামক গ্রামে ঘনবসতি এলাকায় প্রশাসনিক অভিযানে ‘গুঁড়িয়ে দেয়া’ একটি ইটভাটা আইন লঙ্ঘনপূর্বক আবার নির্মাণ করার মারাত্মক অভিযোগ এসেছে। এতে জনমনে এই বিশ্বাস দৃঢ়মূল হচ্ছে, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট অভিযান কেবল ‘লোক দেখানো’ এবং এর কোনো কার্যকারিতা বাস্তবে নেই। যারা আবার ইটভাটা তৈরি করে আইন লঙ্ঘন করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবি জানান ভুক্তভোগী জনগণ। একটি সহযোগী জাতীয় দৈনিকের সচিত্র সংবাদে এটা জানা যায়।
রতœপুর গাঁয়ের ঘনবসতি জনপদে প্রশাসনিক উচ্ছেদ অভিযানে ‘গুঁড়িয়ে দেয়া’ ইটভাটা আবার নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ফলে পাশের জলকদর খাল দখলসহ এলাকার পরিবেশের চরম বিপর্যয়ের আশঙ্কা জেগেছে। এ ছাড়া, স্থানীয় একটা সম্প্রদায়ের শ্মশান এবং নিরীহ সাধারণ মানুষের জায়গা দখল করে কৃষি ভূমিতে ইটভাটা নির্মিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর চাটগাঁর ডিসি বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয় এ ব্যাপারে। এর প্রেক্ষাপটে তার নির্দেশে বাঁশখালীর তদানীন্তন ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে নির্মাণাধীন সে ভাটাটি গুঁড়িয়ে দিয়ে সংশ্লিষ্ট মালিকের জরিমানা করেন। আইন মোতাবেক সে অর্থ আদায় করা হয়। তবে এর কয়েক দিনের মধ্যেই মালিক ভুল তথ্য দিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন জানান। তখন এ অভিযোগে এলাকার মানুষ জেলা প্রশাসক, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকসহ জনসাধারণের পক্ষে খায়ের আহমেদ, সাহাবউদ্দিন, সুধীর দাশ ও মতিলাল দাশ এ অভিযোগ করেছিলেন। তবে সম্প্রতি ভাটার মালিক একই ইটভাটার নির্মাণকাজ পুনরায় চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে পরিবেশসমেত নিরীহ মানুষের বিপুল ক্ষতির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বর্তমান ইউএনও বলেছেন, ‘লাইসেন্স নেয়া হয়েছে কি না তদন্ত করে দেখা হবে। অনিয়ম থাকলে আইনানুসারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ইটভাটা পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। কারণ এতে কাঠ বা গাছ পোড়ানো হয় এবং এর চিমনিগুলো অনেক ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক ১২০ ফুট উঁচু না হওয়ায় ইটভাটার কালো ধোঁয়া পরিবেশকে দূষিত করে। এমনকি, রাজধানী ঢাকার অদূরেই নির্বিচারে ইটভাটা তৈরি ও চালু করা হয়েছে। অতএব, রাজধানী থেকে দূরে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার কী অবস্থা, বলাই বাহুল্য। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর আলোচ্য ঘটনাও ইটের ভাটা সংশ্লিষ্ট। সেখানে একই সাথে জবরদখল, প্রতারণা, পরিবেশ দূষণ ও মারাত্মক অনিয়মের নজির স্থাপিত হয়েছে। তবুও উপজেলার প্রধান কর্মকর্তা এসব অন্যায়ের কোনো তোয়াক্কা না করে ভাটা মালিকের লাইসেন্সপ্রাপ্তিকে বড় করে দেখলেন। তদন্ত কখন করা হবে তাও বলা হলো না। অতএব, সংশ্লিষ্ট দখলবাজ দূষণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয় যে অনিশ্চিত হয়ে রইল, তা এক প্রকার নিশ্চিত।
আমরা মনে করি, সরকারের যেকোনো উচ্ছেদ অভিযান হতে হবে আন্তরিকতাপূর্ণ এবং তা নিছক ‘লোক দেখানো’ হওয়া অনুচিত। তা হলে গুঁড়িয়ে দেয়ার পরও ধান্ধাবাজ লোকজন আইনবিরোধী হলেও আবার একই জায়গায় একই স্থাপনা গড়ে তোলার ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করতে পারে। এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে বাঁশখালীর আলোচ্য অভিযান নিয়ে। সবারই দায়িত্ববোধ থাকা বাঞ্ছনীয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা