চাই সবার জন্য ন্যায্য নীতি
- ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
জাতিসঙ্ঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ পরমাণুযুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স গত সোমবার এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে তারা বলেছে, যেহেতু পরমাণুযুদ্ধে কারো পক্ষেই বিজয়ী হওয়া সম্ভব নয়, তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা পরমাণুযুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত থাকবে। এর আগে পরমাণু অস্ত্রবিস্তার রোধ সম্পর্কিত চুক্তির এক বৈঠক করোনাসহ বিভিন্ন কারণে স্থগিত হয়েছিল। সেই চুক্তির পর্যালোচনা শেষে এই বিবৃতি দেয় বিশ্বশক্তিগুলো।
এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বশক্তিগুলোর পরস্পরের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর উত্তেজনাকর বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্যের রেশ এখনো কাটেনি। চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধ বিশ্বজুড়ে উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক জোট গঠন বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে চীন সাগরে যেসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তাতে দুই দেশের সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। ভারতের সাথে চীনের এবং পাকিস্তানের বৈরিতার সম্পর্কও খুব সামান্য নয়।
এই সময়েই ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দেশটির সাথে ভিয়েনায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে পাঁচ দেশের। ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের শর্তে একটি চুক্তিতে সম্মত হতে চাপ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ইসরাইলকে দিয়ে একটি যুদ্ধের আবহ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি দেশটির ওপর ইসরাইলি আক্রমণের হুমকি সৃষ্টি করছে বলে একটি প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ইরানকে পাশ্চাত্যের শর্তে চুক্তি মেনে নিতে বাধ্য করার কৌশল হিসেবে এসব ঘটনা ঘটছে।
এমনই এক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা অনেকটাই হুমকির মুখে। সুতরাং পাঁচ পরাশক্তির ঘোষণা আশাব্যঞ্জক মনে হতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই দেশগুলোর কথা আদৌ বিশ্বাস করা যায় কি না? আমরা জানি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত ও বিপর্যস্ত হওয়ার হুমকির মুখে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র দুই দু’টি জাপানি শহরে আণবিক বোমা নিক্ষেপ করে। লাখো মানুষকে ঠাণ্ডামাথায় হত্যার মধ্য দিয়ে নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করে। এখনকার বোমা বহুগুণ শক্তিশালী। এগুলো ব্যবহার করা হলে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ মারা যাবে। অনেকে বলেন, পৃথিবীই ধ্বংস হবে। বিশ্বে যত পরমাণু অস্ত্রের মজুদ আছে তার ৯০ শতাংশই আছে মাত্র দু’টি দেশ- যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কাছে।
পরমাণুযুদ্ধে না জড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর রাশিয়া এটিকে স্বাগত জানালেও চীন কিন্তু নিজের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে তাদের পরমাণু অস্ত্রের মজুদ সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনার আহ্বানও জানায় চীন। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে একটি ন্যায্য ব্যবস্থার কথা বলে দেশটি।
পাশ্চাত্য যদি সত্যিই পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ করতে চায় তাহলে সে সম্পর্কিত যেকোনো চুক্তি বা ব্যবস্থাপত্র সব দেশের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য হতে হবে। আর সেটিই হবে ন্যায়সঙ্গত। নিজেরা শক্তির ভারসাম্যের নামে সব বিধ্বংসী অস্ত্রের বিপুল মজুদ গড়ে তোলা আর ইরানের মতো দেশকে সেই সক্ষমতা অর্জনে সর্বশক্তি দিয়ে বাধা দেয়া কোনো ন্যায়নীতির মধ্যে পড়ে না।
আমরা একটি পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব দেখতে চাই। যেখানে কোনো যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগই থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রসহ পরাশক্তিগুলো কি এ বিষয়ে একমত হবে?
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা