২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের ‘বড়দিন’ আজ

বিশ্বে শান্তি ও স্থিতি আসুক

-

আজ শনিবার। ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর। দিনটি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কাছে বড়দিন। খ্রিষ্টীয় ধর্মমতে যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে খ্রিষ্টান সম্প্রদায় দিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে ‘বড়দিন’ হিসেবে পালন করে থাকে। সময়ের আবর্তে এবারও খ্রিষ্টান সম্প্রদায় পালন করছে তাদের কাছে ক্ষমা ও সুন্দরের প্রতীক যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন। আসমানি কিতাবের অধিকারী সম্প্রদায় হিসেবে খ্রিষ্টানদের বড়দিন তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনটি আমাদের সামাজিক জীবনে আরো তাৎপর্য বয়ে আনবে বলে সবার প্রত্যাশা।
আজ জাতীয় ছুটি। বড়দিন উপলক্ষে সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশের গির্জাগুলোও বর্ণিল সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সব ক’টি ধারা এই দিনে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে থাকে। ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী নয়- এমন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও এই দিনে আনন্দমুখর পরিবেশে প্রার্থনাসভা, মিষ্টি বিতরণ ও শিশু-কিশোরদের মাঝে উপহার বিতরণের আয়োজন করে থাকে। অর্থাৎ খ্রিষ্টধর্মে বিশ্বাসী সব সম্প্রদায়ের লোক এই দিনে ধর্মীয় আলোকে উৎসব পালন করে থাকেন।
যিশুখ্রিষ্ট আল্লাহর একজন নবী ও রাসূল আ:। তাই ইসলামের অনুসারীরা তাদের পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআনের আলোকে ঈসা আ:-এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন। আহলে কিতাব বা কিতাবের অনুসারী হওয়ার কারণে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বাড়তি সম্মানবোধ রয়েছে। অবশ্য কুরআনে বর্ণিত হজরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আ: এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ‘ঈশ্বরপুত্র’ যিশুখ্রিষ্ট নিয়ে কুরআন ও বাইবেল অনুসারীরা ভিন্ন ভিন্ন আকিদা পোষণ করে আসছেন। তার পরও বাংলাদেশের মানুষ উদার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনকারী হিসেবে সব ধর্মের মানুষকে শুধু সমীহ ও সমাদর করেন না- সমাজবদ্ধ হয়ে এক সাথে বসবাস করেন অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে।
খ্রিষ্ট ধর্মমত অনুসারে, যিশুখ্রিষ্ট ক্ষমার প্রতীক, শান্তির প্রতীক। খ্রিষ্টান ধর্মে বিশ্বাসী সবাই বিশ্বাস করেন, তিনি ত্রাণকর্তা। সব মানুষের পাপ নিজে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে স্খলন করে দিয়েছেন। তাই এই দিনে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ-শিশু সবাই আনন্দ উদযাপন করেন। সারা বিশ্বের খ্রিষ্টানদের মতো বাংলাদেশেও রাজধানী ঢাকা মহানগরীসহ দেশের খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকাগুলোতে দিনটি বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদার সাথে পালন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় নেতারা ইতোমধ্যে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন। এই দিনে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয়রা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে। তারা সবার জন্য মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করে থাকেন। খ্রিষ্টানদের এই আনন্দের দিনে আমরা জানাই একরাশ শুভেচ্ছা।
বড়দিনের আবেদন ও মৌল চেতনা বিশ্বকে শান্তির বার্তা দেয়। বর্তমান এই ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে শান্তি বড়ই প্রয়োজন। বড়দিন হোক সম্প্রীতি এবং অসাম্প্রদায়িক হিসেবে জাতিকে ও সমগ্র বিশ্বকে শান্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়ার প্রেরণা। এই দিনের মর্মবাণী সবার হৃদয়ে বয়ে আনুক শান্তির আবহ। শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পড়–ক হৃদয় থেকে হৃদয়ে।


আরো সংবাদ



premium cement