দুরাচারীদের ছাড় নয়
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে একেবারে ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে গেছে। ফলে খুন গুম অপহরণ ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধগুলো সহজে সংঘটিত হচ্ছে। ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে অনেকে এক দশক ধরে ক্রমবর্ধমান হারে এমন সব অপকর্ম করছে। কিন্তু গুরুতর এসব অপরাধের বেশির ভাগ আড়ালে থাকছে। যারা ভুক্তভোগী তারা প্রতিকার পাওয়ার পথ পাচ্ছেন না। তবে কিছু ক্ষেত্রে ঘটনা আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে সরকার বাধ্য হয়ে ত্বরিত কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে।
কক্সবাজার পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। শীতে লাখ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে। দুর্বৃত্তরা এখানেও প্রকাশ্যে আটকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ক্ষমতার ছাতার নিচে থেকে এই দুঃসাহস দেখাচ্ছে তারা। ঢাকা থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে যান এক ব্যক্তি। বুধবার বিকেলে হোটেল থেকে বের হয়ে সমুদ্রসৈকতে যান। সেখানে ওই ব্যক্তির সাথে জনৈক আশিক নামের একজন মৃদু ধাক্কা খান। এ নিয়ে উভয়ের কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনা সেখানেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় সৈকত থেকে হোটেলে ফেরার সময় আশিকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ওই ব্যক্তিসহ তার স্ত্রী-সন্তানের পথ রোধ করে। শিশুসন্তানসহ স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে একটি ঝুপড়িতে নিয়ে তিন দুর্বৃত্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে নারী পর্যটককে। পরে স্থানীয় একটি রিসোর্টে বন্দী করে রাখে। ধর্ষণের শিকার ওই নারী ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ কোনো সাহায্য না করে উল্টো থানায় গিয়ে মামলা করতে বলে। পরে স্থানীয় র্যাবের সাথে যোগাযোগ করতে সমর্থ হন ভুক্তোভোগী। র্যাব সেখান গিয়ে উদ্ধার করে তাকে।
খবরে প্রকাশ, আশিকের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। কক্সবাজারে ৬০-৭০ সদস্যের সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে । যারা পর্যটকদের নিশানা করে ছিনতাই ডাকাতি করে। তাদের বিরুদ্ধে পর্যটন এলাকায় ধর্ষণের রেকর্ডও রয়েছে। এদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। বর্তমান সরকারের সময় নিপীড়ক দলগুলো গড়ে উঠেছে মূলত রাজনৈতিক আশ্রয়ে। আশিকসহ এই বাহিনীর প্রধানরা ক্ষমতাসীন দলের সদস্য বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধীচক্র প্রকাশ্যে খুন-অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। কক্সবাজারে সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন নয়। এ ঘটনায় হতাশার দিকটি হলো পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পর্যটন এলাকা হিসেবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের যে নিরাপত্তা থাকার কথা; সেটি নেই। কেবল ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়ে থাকার কারণে এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রকাশ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারল। এর আগেও একজন বিদেশিনী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্তব্যের বিষয় হলো- পুলিশের জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে সাহায্য না পাওয়া। আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে স্থানীয় পুলিশ কি অপরাধী চক্রের সাথে একাকার হয়ে গেছে? অথবা ব্যাপারটি এমনও হতে পারে, অপরাধীদের ধরতে সক্ষম নয় তারা। নাকি, যারা এই অপরাধ করেছে, তারা পুলিশের চেয়ে বেশি শক্তিশালী? এমন প্রশ্ন উঠছে এ কারণে যে, একজন দাগি আসামি কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়?
ধর্ষণের এই ঘটনায় সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমও গুরুত্বের সাথে খবরটি পরিবেশন করেছে। সারা দেশেই এমন বহু ঘটনা ঘটছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অপরাধীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে কক্সবাজার ভ্রমণপিয়াসীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় জায়গা। এখানে বেড়াতে আসার জন্য বিপুলসংখ্যক পর্যটক মুখিয়ে থাকেন। তাই এখানকার নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সতর্ক থাকা জরুরি। কিন্তু বাস্তবে তার ব্যত্যয় ঘটছে।
সবার চাওয়া, ধর্ষক গোষ্ঠীকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একই সাথে সারা দেশে ক্ষমতার ছাতার নিচে থেকে যারা ধর্ষণের ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। খুন, গুমসহ অন্য সব জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা