প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন
- ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
সুনামগঞ্জ জেলার নানা স্থানে প্রমত্তা সুরমা নদীর ব্যাপক ভাঙনে বিভিন্ন স্থাপনা, বসতবাড়ি, বহু আবাদি জমি, পথঘাট, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, বৃক্ষসম্পদ প্রভৃতি বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীতে। এ ভাঙনের দরুন বহুলোক পৈতৃক ভিটা হারিয়ে ফেলেছেন। একই কারণে এমন অবস্থা হয়েছে যে, কোনো কোনো এলাকায় মানচিত্রই বদলে যাচ্ছে। মারাত্মক ভাঙন চলতে থাকায় এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্গতি পোহাতে হচ্ছে এবং অবস্থাপন্ন অনেকেও নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। নয়া দিগন্তের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো এক প্রতিবেদনে এটা জানা যায়।
এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকা শনাক্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। এর কাজ আরম্ভ হবে অর্থ বরাদ্দ আসার পর। তা কবে আসবে তা জানা যায়নি।
সুরমা নদী তীরবর্তী অন্তত ৯টি এলাকায় নদীভাঙন অব্যাহত আছে। তবুও এর প্রতিরোধে ‘ব্যবস্থা না থাকা’র অভিযোগ এলাকাবাসীর। মোহনপুর ইউপির পৈন্দা এলাকায় অনেক দিন ধরে ভাঙন চলছে। জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় সুরমার ভাঙনের বিরতি নেই। জামালগঞ্জের সাচনা বাজারের আশপাশসহ বেশ ক’টি গ্রাম সুরমা ভাঙছে ভয়ানকভাবে। কিন্তু ভাঙনরোধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এখানকার এক দরিদ্র গ্রামবাসী বলেছেন, ‘বসতভিটা ভেঙে যাওয়ায় সপরিবারে বিপদে আছি।’ তিনি জোর দাবি জানান সরকারি সাহায্যের। নূরপুরের ঐতিহ্যবাহী ও শতবর্ষ প্রাচীন জামে মসজিদ হারিয়ে গেছে ভাঙনে। অথচ নামাজ আদায়ের আর ব্যবস্থা নেই সেখানে। ফলে হঠাৎ ভাঙনে মসজিদটা তলিয়ে যাওয়ায় মুসল্লিরা এখন বেকায়দায়। অনেকে এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে অদূরে একটি ছোট মক্তবে গিয়ে নামাজ পড়ছেন। কোথাওবা বাজার বিলীন হয়ে যাচ্ছে। যেমন ধর্মপাশা উপজেলায় বাবুপুর বাজারে ২০টি দোকান ভাঙনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কোনো কোনো এলাকায় বহু বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে সুরমা নদীবক্ষে।
দোয়ারাবাজার উপজেলায় কমপক্ষে ছয়টি গ্রামের শতাধিক পরিবার সুরমার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছে। ভিটেমাটি, বসতঘর, ফসলি জমি, গাছপালা প্রভৃতি হারিয়ে পরিণত হয়েছে উদ্বাস্তুতে। এসব পরিবারের সাজানো গোছানো সংসার চুরমার হয়ে গেছে। ভাঙনে ভিটা হারিয়ে ফেলায় অসহায় অনেকের শেষ ঠাঁই এখন পরিত্যক্ত রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে। তারা দাবি জানিয়েছেন সপরিবার পুনর্বাসনের জন্য।
জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ‘এ উপজেলার ভাঙনগ্রস্ত মসজিদ-মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে কথা হয়েছে পরিষদের মাসিক বৈঠকে। ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নিতে উপরে চিঠি দেয়া হচ্ছে। আমাদের আশা, সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে এ বিষয়ে।’ আর পাউবো কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, সুরমার ভাঙন প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প দাখিলের পর তা প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছে অনুমোদনের জন্য।’ তবে কত দিনে এই অনুমতি মিলবে তা অনিশ্চিত।
দেশবাসীর প্রত্যাশা, সুরমাসমেত দেশের সব নদ-নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ মানুষের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনসহ ভাঙনের স্থায়ী প্রতিরোধের উদ্যোগ নিতে আর মোটেও বিলম্ব করা হবে না। অন্যথায় ভাঙন বন্ধ হবে না এবং মানুষের দুঃখ-কষ্টের অবধি থাকবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা