নির্বিঘ্নে হোক শ্রমিক পাঠানো
- ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
প্রায় তিন বছর পর মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ আবার উন্মোচন হতে যাচ্ছে। চক্রের মাধ্যমে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দেশটি বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়া তিন বছর আগে বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হলে গত দুই বছরে এ বিষয়ে দু’দেশের আলোচনায় আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখন মহামারী পরিস্থিতির উন্নতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি অর্থনৈতিক ও অন্যান্য কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করার লক্ষ্যে বিদেশী শ্রমিক নেয়ার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বাংলাদেশের সাথে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে মালয়েশিয়াই আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এ মাসেই সেটি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশীদের কাজের সুযোগ তৈরি হয় গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। ১৯৯২ সালে দু’দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়। কিন্তু তারপর গত প্রায় ৩০ বছরে এই প্রক্রিয়া কখনোই নির্বিঘ্নে থাকেনি। কখনো অবৈধ শ্রমিক পাঠানো, কখনো অন্য কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি এক পর্যায়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধও হতে হয়। তবে বারবার দেশটি বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য তার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করেছে। মূলত উন্নয়নের ধারায় মালয়েশিয়ানরা এমন এক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে যে তাদের মন-মানসিকতাও এখন পাল্টে গেছে। সাধারণ শ্রমিকের কাজ করতে এখন ওই দেশের মানুষের আর প্রয়োজন বা আগ্রহ কোনোটাই নেই। তাই অপরিচ্ছন্ন, বিপজ্জনক ও কঠোর কায়িক শ্রমের কাজগুলো করাতে বিদেশী শ্রমিক তাদের নিতেই হবে। সে ধরনের শ্রমিক সবচেয়ে সুলভ এখন বাংলাদেশে।
এরই মধ্যে অন্তত ছয় লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক মালয়েশিয়ায় নানা ধরনের কাজ করছেন। তারা যে রেমিট্যান্স পাঠায় তার পরিমাণও খুব কম নয়। গত অর্থবছরে দেশটি থেকে প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা প্রায় ১২৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ স্বদেশে পাঠিয়েছে, যা মহামারী-বিধ্বস্ত অর্থনীতির জন্য ছিল জীবনীশক্তির মতো।
জানা যাচ্ছে, এখন নতুন করে যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে তা শ্রমিকবান্ধব হবে। কারণ এতে সরকারি পর্যায়ে শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ থাকছে না। যুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি। কর্মীদের বাধ্যতামূলক বীমা থাকছে। তাদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা ও খরচ বহন করবেন নিয়োগদাতা। তবে কর্মীদের মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা খরচ হবে, তা জানা যাবে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর।
এই পরিবর্তনগুলো দৃশ্যত ভালো। তবে বাংলাদেশীদের সংস্পর্শে এলেই যে কোনো কিছুই দূষিত হয়ে পড়ে এমন অভিজ্ঞতা আমাদের কম নেই। মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়ায় যেন এ দেশী সিন্ডিকেটের খপ্পরে না পড়ে, যেন নিয়মনীতি থেকে বিচ্যুত না হয় সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হলে তা আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
নতুন করে দেশটিতে শ্রমিক পাঠানোর পাশাপাশি মহামারীর সময় মালয়েশিয়া থেকে যেসব বাংলাদেশী কর্মী দেশে এসে আটকে পড়েছিলেন তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে। তারা এখনো সে দেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। মহামারী-উত্তর বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ একটি বড় সুখবর নিঃসন্দেহে। প্রক্রিয়াটি যেন নির্বিঘ্নে হয় এবং অব্যাহত থাকে সে চেষ্টা বাংলাদেশকেই করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা