সামনে অনেক গতিরোধক
- অগ্রগতির পথে বাংলাদেশ
- ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। অর্থাৎ আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবো। অর্থনীতিতে আমাদের অগ্রগতির কারণেই এটি সম্ভব হতে যাচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। তা সে অগ্রগতি যতই ধীর ও ভঙ্গুর হোক না কেন। আমাদের যে সম্ভাবনা ছিল তা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলে আরো কত দ্রুত আমরা উন্নত দেশে পরিণত হতে পারতাম সে আলোচনা অর্থহীন। কারণ সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে না পারার ব্যর্থতা দেশের সাধারণ জনগণের নয়। বরং এ যাবৎকালের সরকারগুলোর, যারা সুশাসন প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিলে বেশি সক্রিয় থেকেছেন। অর্থাৎ সমস্যার গভীরে আছে শাসকগোষ্ঠী তথা রাজনীতিকদের ব্যর্থতা। তবে এটিও স্বীকার করতে হবে যে, আজ যখন মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে, আমাদের সেই অর্জনটুকুও তো রাজনীতিকদের হাত ধরেই এসেছে।
দেশ উন্নয়নশীল অভিধায় উত্তরণের পর আমাদের গতি আরো স্বচ্ছন্দ হবে নাকি সামনে আরো বড় চ্যালেঞ্জ আসবে সেটিই এখন বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। তারা সম্ভাব্য সঙ্কটগুলোর স্বরূপ কেমন হতে পারে সেগুলো তুলে ধরছেন, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কী কী পদক্ষেপ বা কার্যক্রম হাতে নেয়া দরকার সেসব বিষয়ে আলোকপাত করছেন, নানা রকম পরামর্শ দিচ্ছেন। কোথায় দুর্বলতা আছে সেগুলোও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন। এটি দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে তাদের কর্তব্য বটে। যেমনটা গত মঙ্গলবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির ওয়েবিনারে তারা করেছেন ।
উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর বিদেশ থেকে কম সুদে ঋণ পাওয়া যাবে না। ঋণের সুদহার হবে চড়া এবং ঋণ পাওয়ার শর্তও হবে কঠিন। এসব প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে হলে করণীয় কী সেটাও তারা বাতলে দিচ্ছেন। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে, আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে হবে। এ জন্য আগে দরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার জোরদার করা। কেউ পূর্ব সীমান্তের ওপারের দিকে নজর দেয়ার কথা বলছেন, অর্থাৎ আসিয়ান জোটভুক্ত দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। আবার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ক্ষেত্রে যে বাস্তব সমস্যাগুলো আছে সেগুলোও তারা উল্লেখ করতে ভুলেননি। এ জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার বলেও জানান তারা। কিন্তু সমস্যা হলো, বুদ্ধিজীবী ও বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় কখনোই সমস্যার একেবারে মূল জায়গাটি চিহ্নিত করেন না।
ওয়েবিনারের সভাপতি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সঙ্কট মানহীন শিক্ষা। গত ৩০ বছরে আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছি। শিক্ষাব্যবস্থা এমনভাবেই ধ্বংস হয়েছে যে, তিনি বলছেন, ঠিক এ মুহূর্তেই যদি এর পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করা হয় তাহলেও ঠিক করতে আরো ৩০ বছর লাগবে। বাস্তবে দেশে এ মুহূর্তে যে রাজনৈতিক শক্তি বিদ্যমান, তাদের কাছ থেকে কোনোরকম সদিচ্ছার আলামত কি গত এক যুগে লক্ষ করা গেছে? কোনোরকম ইতিবাচক সংস্কার বা সুষ্ঠু নিয়ম-নীতি, আইন-কানুন বলবৎ করার কোনোরকম উদ্যোগ কি আমরা দেখেছি? বরং চোখ-কান একটু খুললে বিপরীত চিত্রই দেখা যাবে। আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা, আইনের শাসনের পথে ক্রম অগ্রসরমানতা, অবাধ, স্বাধীন, নিরপেক্ষ তথা সুষ্ঠু নির্বাচনপ্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের অঙ্গীকার, সব নাগরিকের মৌলিক ও নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়ে প্রত্যেককে জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার যে প্রয়াস চলমান ছিল সেসব এখন কোন অবস্থায় আছে?
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ব্যাংক খাতের প্রসঙ্গে বলেছেন, সুশাসন ফেরাতে ব্যাংকগুলো পারিবারিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে ফিরিয়ে নেয়ার কাজ করতে হবে। এ কথাটাই যে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য সেটি মুখ ফুটে বলার মতো কেউ কোথাও নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা