২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ফের রাজপথে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

অধরাই থাকছে নিরাপদ সড়ক

-

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায়ই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সড়ক নিরাপদ করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ সরকারের তরফ থেকে নেয়া হয়েছে; তা প্রতীয়মান নয়। ফলে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে সড়কপথে হতাহতের ঘটনা বেড়েছে। সড়কে বিশৃঙ্খলা এবং অরাজক পরিস্থিতিতে প্রায় ৪০ মাস আগে ২০১৮ সালে রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা ৯ দিন রাজপথে আন্দোলন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। দেশবাসীও ওই আন্দোলনে অকুণ্ঠ সমর্থন জুগিয়েছিলেন। তখন বেকায়দায় পড়ে সরকার পর্যায়ক্রমে ছাত্র-ছাত্রীদের ৯ দফা দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা ঘরে ফিরে যান। ওই সময় অনেকটা তড়িঘড়ি করে নতুন সড়ক আইন পাস করেছিল সরকার। তবে সেই আইন এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। সড়কও নিরাপদ হয়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লা পরিবহন করা গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের নাঈম হাসান নামে এক ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় দু’দিন ধরে নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন তারা। তাদের বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজধানী ছিল উত্তাল। এতে যান চলাচল ব্যাহত হলে রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, চট্টগ্রামেও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা শহরের দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের লাঠিপেটায় পণ্ড হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে চার শিক্ষার্থীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর অবশ্য তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। উল্লেখ্য, নাঈম নিহত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকা উত্তর সিটির ময়লার গাড়ির ধাক্কায় মারা গেছেন সংবাদকর্মী আহসান কবির খান।
রাজধানীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি ঘোষণা করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নাঈমের নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া, মানুষসহ সড়কে সব প্রাণীর নিরাপত্তা দেয়া, ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আইন বাস্তবায়ন করা, জেলা শহরের বিভিন্ন রুটে শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু করা, স্কুল-কলেজের সামনে হর্ন ও ওভারস্পিডিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে জরিমানা ও প্রশাসনের কাছে হস্তান্তরের অধিকার দেয়া, সব শিক্ষার্থীর হাফ পাস নিশ্চিত করা, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে একাধিক স্পিডব্রেকার নির্মাণ, শহরের প্রতিটি অচল ট্রাফিক লাইটের সংস্করণ এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, ট্রাফিক আইনের সঠিক প্রয়োগ, জেব্রা ক্রসিংয়ের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার নিশ্চিত করা, চলন্ত বাসে যাত্রী ওঠানামা করালে প্রত্যেক বাসকে আইনের আওতায় আনা এবং সর্বোপরি নিরাপদ সড়ক আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজীব ও দিয়া খানম মীম নিহত হন। সেদিন থেকে ৯ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। ওই আন্দোলনে দাবিগুলোর অন্যতম ছিল বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো চালকের ফাঁসি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চালানো বন্ধ, লাইসেন্স ছাড়া কেউ যাতে গাড়ি চালাতে না পারেন, শিক্ষার্থীদের চলাচলে পথচারী সেতুর ব্যবস্থা, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় গতিরোধক বসানো, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নেয়া এবং সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করা। কিন্তু সেই সময়ের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ দাবিই পূরণ হয়নি।
বাস্তবতা হলো- দেশে সড়কপথে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা বহালতবিয়তে রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা তো কমেইনি, বরং আরো বেড়েছে। অথচ এভাবে চলতে পারে না। সঙ্গত কারণে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করে সড়কে শৃঙ্খলা আনার ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন করা ছাড়া সরকারের আর কোনো বিকল্প আছে বলে আমাদের জানা নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ভারতের ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য ফেসবুক, টিকটক নিষিদ্ধ অস্ট্রেলিয়ায় ‘হাইব্রিড মডেল’ মানবে না পাকিস্তান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে জটিলতা বাড়ল উগান্ডায় ভূমিধসে ৪০ বাড়ি চাপা, নিহত ১৫ দেশে বিশৃঙ্খলার পেছনে রয়েছে ইন্ধনদাতারা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জামায়াত আমিরের দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে না পারলে কিসের বিপ্লব, প্রশ্ন দেবপ্রিয়ের নৈরাজ্য সৃষ্টি জাতিকে বিপর্যয়ে ঠেলে দেবে গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন উদ্যোগ নেবে যুক্তরাষ্ট্র জনগণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখে দিয়েছে ট্রাইব্যুনালে মামলা শিগগিরই : আসামি হতে পারেন হাসিনাও

সকল