অবক্ষয়ের প্রভাব পড়ছে সর্বত্র
- ২৭ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক সৌহাদ্যপূর্ণ হবে এটাই কাম্য। প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চাকরির বিধিমালায় এগুলো লেখা আছে। যেকোনো নাগরিক প্রশাসনে নিয়োগ পাওয়ার সময় তাতে সম্মতি দেন। ফলে প্রশাসনে শিষ্টাচারের একটি সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেমন শোভন আচরণ করেন অধস্তনদের প্রতি, তেমনি অধস্তনরা যথাযথ সমীহ করে ঊর্ধ্বতনের আদেশ তামিল করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরনের অবক্ষয় ঘটেছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট। দেশে এমন অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে যে, কেউ কাউকে মানছেন না। সামান্য কারণে হেনস্তা হয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এমনকি স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে হানাহানি ও হত্যা করতেও হাত কাঁপছে না। এর প্রভাব পড়েছে সরকারি প্রশাসনেও।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুুল আহাদ তার সহযোগী উপসহকারী প্রকৌশলী মো: রনির গায়ে হাত তোলেন। একটি অফিশিয়াল বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে রেগে গিয়ে রনির ওপর আক্রমণ করেন আবদুল আহাদ। এ সময় রনিকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তিনি। ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। রনি তাকে গলাটিপে হত্যাচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেছেন। আহাদের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আহাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রশাসনে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক। প্রশাসনে কর্মপরিবেশের কতটা অবনতি হয়েছে এ ঘটনা তারই প্রমাণ। বিষয়টি সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।
একই দিন একটি সহযোগী দৈনিকের খবরে জানা যাচ্ছে, স্কুলের অফিস সহকারী পিটিয়েছেন প্রধান শিক্ষককে। টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শালিয়াবহ চৌরাস্তা পাবলিক উচ্চবিদালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেখানে শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় দু’জন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার একপর্যায়ে পাশের একটি মাদরাসার অফিস সহকারী জনৈক চুন্নু মিয়া একজনকে সভাপতি করার দাবি তোলেন। এ জন্য তিনি চাপ প্রয়োগ করেন। অফিস সহকারী চুন্নু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তিনি প্রধান শিক্ষককে মারধর করেন।
যেকোনো প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে চলার জন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক দরকার হয়। তা না হলে কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড আর স্কুলের ব্যবস্থাপনা- সবখানেই একই নিয়ম প্রযোজ্য। নির্বাহী প্রকৌশলী কোনোভাবেই অধস্তনের গায়ে হাত তুলতে পারেন না। স্কুলের অফিস সহকারী প্রধান শিক্ষককে পেটাচ্ছেন- এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর কী হতে পারে? ক্ষমতার দাপট সবাইকে আজ যেন মাত্রাজ্ঞানহীন করে দিচ্ছে। এটা আমাদের জাতীয় অবক্ষয়। ক্ষমতার মাত্রাহীন দৌরাত্ম্যে মানুষের মধ্যে সুন্দর ও শোভনতার চর্চা এখন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কেউ শিষ্টাচার মানছে না। একজন উচ্চশিক্ষিত নির্বাহী প্রকৌশলী আর অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত স্কুলের সহকারী একই জায়গায় এসে দাঁড়াচ্ছেন।
এভাবে চলতে পারে না। শুধরাতে হলে রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের জায়গাটিতে হাত দিতে হবে। না হলে সরকারি প্রশাসনে আরো বেশি বিশৃঙ্খলা ভর করবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা