অবিলম্বে চালু করুন
- ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০৫:৫৫
দেশের একটি প্রধান দরিদ্রাঞ্চল, কুড়িগ্রাম জেলায় চার মাসেরও বেশি সময় ধরে ‘স্কুলফিডিং কার্যক্রম’ বন্ধ। এর দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট চুক্তির মেয়াদ বিগত ৩০ জুন শেষ হয়ে গেছে। এরপর সময় পার হয়ে যাচ্ছে; তবু নতুন চুক্তি সম্পাদন না করায় শিশুদের পুষ্টিচাহিদা পূরণ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদাসীনতা ও গাফিলতি এই দীর্ঘসূত্রতার কারণ বলে জানা যায়। ফলে শিশু শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ দিন সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত। সহযোগী একটি দৈনিক পত্রিকায় তাদের কুড়িগ্রাম সংবাদদাতার বরাতে আলোচ্য প্রতিবেদনটিতে এসব তথ্য ছাপা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দাবি, ‘চুক্তিটির প্রক্রিয়া চলছে এবং দ্রুতই বিস্কুট বিতরণের কাজ শুরু করা হবে।’ এ দিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। স্মর্তব্য, ২০০২ থেকে এ কার্যক্রমের সূচনা। বিশেষত প্রাইমারি পর্যায়ে শিক্ষার্থী বাড়ানো এবং তাদের পুষ্টিঘাটতি মেটানো এ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য। সরকারি কর্মসূচির আওতায় টিফিন পিরিয়ডে ছাত্র ও ছাত্রীদের দৈনিক মাথাপিছু ৭৫ গ্রাম পুষ্টিকর বিস্কুটের প্যাকেট দেয়ার কথা। এ বিস্কুট দেয়ার সুফল মিলেছে। এতে ক্লাসের চিত্র পাল্টে গিয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়। বেড়ে যায় শিশু পড়–য়াদের প্রাণচাঞ্চল্য।
যেখানে করোনার মহামারীর মধ্যেও কার্যক্রমটি বন্ধ হয়ে যায়নি, সে ক্ষেত্রে দেশের পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে এলেও ফিডিং কর্মসূচি কেন বন্ধ হবে? এ প্রশ্ন হতাশ ও বিক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট সবার।
প্রকাশ, কুড়িগ্রামে এ বিস্কুট বিলির জন্য খ্যাতনামা এনজিও আরডিআরএস বাংলাদেশ এবং এসডো (ইএসডিও)-এর সাথে তিন বছর মেয়াদি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল বাংলাদেশ সরকারের। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে এ চুক্তি নবায়ন কিংবা নতুন এনজিওর সাথে যোগাযোগ করা নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়। কিছু কর্মকর্তা অবৈধ সুযোগ না পেয়ে এ অবস্থা তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে যথার্থ তদন্ত প্রয়োজন। এখন জনমনে প্রশ্ন, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কেন মাসের পর মাস ধরে শিশুরা বিস্কুট বা পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত?
কুড়িগ্রামে আছে ১২৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে সাড়ে ৪০০-এর বেশি চরের জন্য আছে ৪০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব স্থানের দরিদ্র শিশুদের দৈহিক-মানসিক বিকাশে অত্যন্ত সহায়ক পুষ্টিমানের এ বিস্কুট। হঠাৎ তার বিলি বণ্টন বন্ধ হয়ে গিয়ে স্কুলের ক্লাসে তাদের উপস্থিতি হ্রাস পেয়েছে। শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের জবাব দিতে অপারগ। কবে আবার বিস্কুট দেয়া হবে, তা শিক্ষকরা জানেন না। অভিভাবকরা বলেছেন, নিম্ন আয়সম্পন্ন পরিবারের শিশুদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা যেত উচ্চমানের প্রোটিন-সম্পন্ন এই বিস্কুট দিয়ে; কিন্তু তা এখন দেয়া বন্ধ। সদর উপজেলার শিক্ষা বিভাগের কর্তৃপক্ষীয় সূত্র স্বীকার করেছে, বিদ্যালয়গুলো আবার সম্প্রতি খোলার পর প্রথম দিকে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি বেশি থাকলেও স্কুলফিডিং বন্ধ থাকায় ‘কিছু সমস্যা’ সৃষ্টি করেছে। চেষ্টা করেও উপস্থিতি বাড়াতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। জেলা প্রাইমারি এডুকেশন কর্মকর্তার বক্তব্য, ‘তিন বছর পরপর বাজেটে বরাদ্দের ভিত্তিতে বিস্কুট দেয়ার চুক্তি করা হয়। এর সর্বশেষ চুক্তি জুনে শেষ হওয়ায় এটা বর্তমানে বন্ধ। আশা করছি, ডিসেম্বর থেকে আবার তা চালু হবে।’
আমরাও আশাবাদী, অবিলম্বে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুষ্টিকর খাবার দেয়ার পর্যাপ্ত কর্মসূচি চালু হবে। অন্তত সর্বাগ্রে, সব অনুন্নত জনপদে এ কার্যক্রম চালু করা জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা