এখনো সতর্কতা জরুরি
- ২২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
আমাদের দেশে গত শনিবার করোনায় কেউ মারা যায়নি। ১৮ মাসের মধ্যে এটিই প্রথম করোনায় মৃত্যুহীন দিন। এটি অবশ্য কোনো মিডিয়ার বা দেশী-বিদেশী সংস্থার নিজস্ব অনুসন্ধানে উদঘাটিত তথ্য নয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির খবর। তবু এ খবর সবার কাছে স্বস্তির। দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন পেশার বহু শ্রেষ্ঠ মানুষ চলে গেছেন, যা আমাদের জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। যদিও এর মধ্যে এমন অনেক মানুষও আছেন যাদের মৃত্যু হয়তো অনিবার্য ছিল না। সময়মতো যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারলে অনেককেই হয়তো বাঁচানো যেত। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যর্থতা ছিল, যা জাতীয় সংসদেও আলোচিত।
করোনাভাইরাস একসময় দেশে দৈনিক দুই শতাধিক এমনকি একাধিক দিন আড়াই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দেশজুড়ে মহা আতঙ্কের জন্ম দেয়। স্বাস্থ্যবিধি, লকডাউন, গৃহবন্দিত্বে জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে। অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ বিরূপ প্রভাব পড়ে। অসংখ্য মানুষ এমন ক্ষতির মধ্যে পড়ে, যা কখনোই পূরণ হবে না। আর এমন মহামারীর অভিজ্ঞতা যারা অর্জন করলেন তারা জীবনে আর কখনো এ স্মৃতি ভুলতে পারবেন বলে মনে হয় না।
২৪ ঘণ্টায় কোনো মৃত্যু নেই বলে কোভিড-১৯ মহামারীর অবসান ঘটে গেছে এমনটি মনে করার কারণ নেই। শনিবার দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৭৮ জনের। এ সংক্রমণ হয়তো আরো কমে আসবে; কিন্তু এরই মধ্যে শীতের আগমন হয়েছে এবং শীতে বিশ্বের কোনো কোনো অঞ্চলে করোনাভাইরাসের নতুন করে বিস্তার ঘটার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং নিশ্চিন্তে বসে থাকার উপায় নেই। করোনাজনিত সব স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে এবং সুরক্ষাব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।
সার্বিকভাবে বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায়ও বিশ্বে করোনায় মারা গেছে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। এ নিয়ে বিশ্বে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল প্রায় ৫২ লাখ (৫১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬৯ জন)। এ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই যখন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে, ঠিক তখন ইউরোপের কোথাও কোথাও আবারো ভয়াল থাবা হানতে শুরু করেছে করোনাভাইরাস। আবারো লকডাউন, মাস্ক পরাসহ নানা স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ করা হচ্ছে দেশগুলোতে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত শনিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে, জরুরি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে ইউরোপ মহাদেশে আগামী মার্চের মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারীতে নতুন করে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
সংস্থার ইউরোপবিষয়ক পরিচালক ডক্টর হ্যান্স ক্লুুজ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আরো অনেক পদক্ষেপ নিতে হবে। কোভিড-১৯ আরেকবার আমাদের এই অঞ্চলে মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপজুড়ে নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে হ্যান্স ক্লুুজ শীতের আগমন এবং কম মাত্রায় টিকা গ্রহণকে দায়ী করেন।
বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্যও। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় আমাদের মধ্যে চরম শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে। সরকারিভাবে আমরা এখন পর্যন্ত ২৫ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পারিনি। এক আফগানিস্তান ছাড়া প্রতিবেশী সব দেশই এ ক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। শীতের মৌসুমে স্বাস্থ্য বিভাগকে যেমন সতর্ক হতে হবে, তেমনি সাধারণ মানুষেরও সতর্ক থাকা জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা