অবিলম্বে সুরাহা করুন
- ২১ নভেম্বর ২০২১, ০২:৫০
aবাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদীবন্দর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ীর ইজারা প্রদান দীর্ঘ সাত বছর বন্ধ। অভিযোগ উঠেছে, একটি সমিতি সমবায় ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নাম ভাঙিয়ে সুকৌশলে বাঘাবাড়ী বন্দরকে এক যুগ ধরে করায়ত্ত করে রেখেছে। এই প্রেক্ষাপটে সাত বছর আগের ইজারার মাধ্যমেই চলছে এত বড় বন্দরটি। এ দিকে সরকার বা রাষ্ট্রীয় কোষাগার হারাচ্ছে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব। নয়া দিগন্তের এক সচিত্র প্রতিবেদনে শাহজাদপুর সংবাদদাতা এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ‘ভুতুড়ে’ মামলার ফলে বাঘাবাড়ী বন্দর কর্তৃপক্ষ এটাকে ইজারা দিতে পারছে না। চলমান মূল্যের চেয়ে বেশি দিয়েই বন্দর ইজারা নিতে ইচ্ছুক, একের অধিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও বিদ্যমান জটিল পরিস্থিতিতে ‘তেমন কিছু করার নেই’ বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। তবে বন্দর ইজারা বন্ধ থাকার পরও একটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নামে শুল্ক নেয়া হচ্ছে চড়া হারে। তাই ‘বিশেষ কাউকে দীর্ঘ সময় ধরে অন্যায় সুবিধা’ দিতে কারো যোগসাজশ থাকার ব্যাপারে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেকের মনে।
জানা যায়, বাঘাবাড়ী নৌবন্দর দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। এখানে আছে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ডিপো। সার, তেল, ধান-চাল, কয়লা, পাথর, সিমেন্ট, ক্লিংকার প্রভৃতি সরকারি-বেসরকারি পণ্য এ বন্দরে লোড-আনলোড করে ১৬ জেলায় পাঠানো হয়। বাঘাবাড়ীতেই সরকারের বাফার গুদাম। এসব থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ব্যতীতও হাজার দুয়েক শ্রমজীবীর জীবিকা নির্ভরশীল এর ওপর। এই বন্দরের ইজারা দেয়া হয় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত মোতাবেক। ২০১২-১৩ সালে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নামে গঠিত একটি সমবায় প্রতিষ্ঠানকে এর ইজারা দেয়া হয়েছিল। আরো দু’বার তারাই ইজারা লাভ করে। সর্বশেষ, ২০১৪-১৫ সালে এক কোটি ১৪ লাখ টাকায় সংগঠনটি ইজারা পায় বন্দরের। ওই সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল-অবরোধ, নদীর পাড় শুকিয়ে যাওয়া এবং দক্ষিণ তীরে নৌ-ফায়ার সার্ভিসের বিল্ডিং নির্মাণ করাসহ নানান কারণ কয়েকবার দেখিয়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান ৬১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করেছে। তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তাদের এসব দাবি নাকচ করেছে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘ভিত্তিহীন’ বলে। ফলে ওই সমবায় সমিতির পক্ষে উপজেলাপর্যায়ে মামলা করা হয়। যুগ্ম জেলা জজ আদালতের সে মামলাকেও ‘কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন’ দাবি করে লিখিত জবাব দেয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। বাঘাবাড়ী বন্দরে এর তদানীন্তন নির্বাহী পরিচালক এতে বলেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট ইজারা চুক্তির ১৮ নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, নৈসর্গিক/হরতাল/অবরোধ/ধর্মঘট কিংবা ক্ষমতাবহির্ভূত কোনো কারণে যদি খালে নৌচলাচল অথবা ঘাটে যাত্রী বা পণ্য তোলা বন্ধ থাকে, তাহলে ইজারাদারকে ক্ষতিপূরণ কিংবা ইজারার অর্থ ফেরত দেয়া হবে না।’ তা জানা সত্ত্বেও, মামলা চালিয়ে বছরের পর বছর ইজারা দেয়ার পথ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ দিকে ‘বন্দর ভোগের জন্য’ কৌশলে তা করার দাবি এলাকার লোকজনের।
সাবেক ইজারাদারদের একজন দাবি করেন, সম্পূর্ণ ভুয়া মামলায় কিছু লোককে বিপুল অর্থে ম্যানেজ করে তামাশা করা হচ্ছে। একটি চক্র এভাবে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে। এটা কোনো যুক্তিতেই চলতে পারে না। এ ক্ষেত্রে দেখানো কারণগুলো অত্যন্ত তুচ্ছ ও হাস্যকর। কারণ, শুষ্ক মৌসুমে নদীর পাড় শুকিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ও নিয়মিত। এ জন্য শুল্ক আদায় বন্ধ রাখা হয় না। একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বলেছেন, হরতাল বা অবরোধে বন্দরে ক্ষতির কথা বলা চরম চাতুর্য। কেননা, হরতাল-অবরোধেও নৌযান ঠিকই চলেছে। বরং তখন বন্দরে যাত্রী বা পণ্য পরিবহন দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফলে ক্ষতির বদলে অধিক মুনাফা করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। রাজস্ব ফাঁকি দিতেই অসৎ উদ্দেশ্যে মামলা হয়েছে। আর স্থগিতাদেশ নিয়ে কয়েক বছর ধরে বন্দর ইজারা বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন বিষয়টি বিচারাধীন বিধায় কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি।
অবিলম্বে এর আইনগত সুরাহা করে বাঘাবাড়ী বন্দরের ইজারা তথা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বিপুল আয়ের পথ সুগম করা হবে বলে জনগণ আশা করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা