এর নাম কী করে ‘উন্নয়ন’ হয়?
- ১৭ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
সহযোগী একটি জাতীয় দৈনিকের খবর, নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলায় মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও চারটি প্রকল্পের কোনো কাজ হয়নি। এগুলোতে তিন লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা ব্যয়ের কথা। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক গিয়ে এসব প্রকল্পের কোনো কাজ দেখেননি। প্রকল্পের সভাপতিরাও কিছু জানেন না এ কাজের ব্যাপারে। তারা স্বাক্ষর করে দিয়েছেন কিছু না জানার পরও।
জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে উপজেলা পরিষদ তৃতীয় পর্যায়ের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ২২টি প্রকল্প এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছিল। পরে একটি অনুমোদিত প্রকল্প ‘সংশোধন’ করে স্থানীয় একটি পাড়ায় রাস্তার ধারে জামে মসজিদের গর্ত ভরাটের বদলে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে মাটি ভরাট ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করা হয় এক লাখ ৮৫ হাজার ৯২০ টাকা। একই বছর টিআর কর্মসূচির অনুমোদিত তিনটি প্রকল্প পরিবর্তন করে যথাক্রমে উপজেলা পরিষদের বাসাবাড়ির অঙ্গনে মাটি ভরাটের জন্য অর্ধলাখ টাকা, এই পরিষদের ভেতর ফোয়ারায় পাম্প স্থাপনে ৮০ হাজার টাকা এবং পরিষদের ফোয়ারায় চার পাশে ইট দিয়ে সোলিং-করণে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এ চারটি প্রকল্পে মোট বরাদ্দ তিন লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা। গত জুন মাসে এসব প্রকল্পের জন্য কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে; কিন্তু কয়েক মাস পরে আজ পর্যন্ত বাস্তবে কোনো কাজই করা হয়নি। এ কাজ সম্পর্কে জানা নেই খোদ উপজেলা পরিষদের ভেতরকার বাসিন্দাদেরও।
টিআর-সংশ্লিষ্ট তিন প্রকল্প সভাপতি এবং সদর ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ড ও ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্যরা বলেছেন, কাজ হয়েছে কি না জানা নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের জনৈক কর্মচারী কিছু কাগজ দিয়ে আমাদের বলেছেন, ‘এটা ইউএনও সাহেবের কাজ। উনি নিজেই এগুলো করবেন। আপনারা শুধু স্বাক্ষর দিন। তাই আমরা স্বাক্ষর করে দিয়েছি।’ কাবিটা প্রকল্প সভাপতি ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের একজন কর্মচারী বলেছেন, ‘ইউএনওর প্রকল্পে উনি নিজেই কাজ করবেন। আর আপনাকে বলেছেন স্বাক্ষর দিতে’, তাই স্বাক্ষর করে দিয়েছি। এই কাজের ব্যাপারে কিছুই জানি না। স্বয়ং সে কর্মচারী বলেছেন, ‘আমি কর্মচারী হিসেবে ছোট। চারটি প্রকল্পের সভাপতিদের স্বাক্ষর দিতে বলেছেন ইউএনও। তাই আমি সে কাজ করেছি। তবে কাজ হয়েছে কি না জানি না।’ বদলগাছি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, ইউএনও প্রকল্পগুলোর কাজ পরে করবেন। কাজ এখনো হয়নি। খোদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘কিছু সমস্যা থাকায় কাজ হয়নি।’ তবে কাজ না করে বিল কেন তুললেন? জবাবে তিনি বলেছেন, ‘কাজ না হলে টাকা ফেরত দেয়া হবে।’ তিনি বারবার সাংবাদিকের কাছে জানতে চান, ‘আপনি প্রকল্পের তালিকাটি কোত্থেকে পেয়েছেন’?
এ দেশে যে, প্রশাসন ও উন্নয়নের নামে কী চলছে, তার নমুনা এটা। অবিলম্বে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, রাষ্ট্রীয় অর্থ নিয়ে যথেচ্ছাচার প্রভৃতি বন্ধ না হলে প্রকৃত উন্নয়ন শিকায় উঠবে এবং সাধারণ মানুষ বঞ্চিতই থাকবে। তাই এসবের আশু অবসান প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা