দ্রুত বন্ধ হোক এই মাদক
- ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০১:৫৩
সরকার ধারাবাহিকভাবে কঠোর অভিযান চালালেও মাদক থেকে বাঁচানো যাচ্ছে না দেশের যুবসমাজকে। জিরো টলারেন্স নীতি নেয়ার কারণে ওই সব অভিযানে মাদক কারবারিদের অনেকে প্রাণ হারিয়েছে। তার পরও এর বিস্তার রোধ করা যায়নি। বরং দেশে নতুন নতুন মাদকের দেখা মিলছে। এসব মাদক আগেরগুলোর চেয়ে আরো ভয়াবহ। লক্ষণীয়, দেশে যতই কড়াকড়ি আরোপ করা হোক না কেন, এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর ভূমিকাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সীমান্তের হাজার হাজার কিলোমিটার পথ যদি মাদক পাচারে ব্যবহৃত হয়, আর সেখানেই যদি গড়ে ওঠে মাদকের কারখানা; তাহলে আমাদের দেশের তরুণ-যুবকদের মাদকের হাত থেকে রক্ষার কোনো উপায় থাকে না। বরাবরই ভারত ও মিয়ানমার এই দু’টি প্রতিবেশী দেশ থেকে বাংলাদেশে মাদক ঢুকছে।
খবরে প্রকাশ, ভারতীয় সীমান্তের জিরো লাইন থেকে মাত্র ৫০ মিটারের মধ্যে পাওয়া গেছে ইয়াবার কারখানা। এমন তিনটি ইয়াবা ও ২০টি ফেনসিডিল কারখানা সীমান্তের কাছে থেকে মাদক সরবরাহ করছে বাংলাদেশে। গত ২৮ অক্টোবর ভারতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) সাথে বাংলাদেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) ভার্চুয়াল সম্মেলন হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে এসব কারখানার ঠিকানা, জিরো লাইন থেকে দূরত্ব, মালিকের নাম ও উৎপাদিত মাদকের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়। বাকি দু’টি ইয়াবা কারখানা সীমান্তের ৪০০ মিটার ও পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে। এ ছাড়া শনাক্ত হওয়া ফেনসিডিল কারখানাগুলোর একটির মালিক বনগাঁও পৌরসভার মেয়র শ্রী দাকু। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব কারখানা বন্ধে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে।
বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন আসাম, ত্রিপুরাসহ ভারতের অনেক রাজ্যে মাদকে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত হয়। এ ধরনের রাসায়নিক উৎপাদন, ব্যবহার ও বাণিজ্যের দিক থেকে ভারতের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। ইয়াবা পাচারের কক্সবাজার-টেকনাফ রুটটি চোরাকারবারিরা আগের মতো ব্যবহার করতে পারছে না। তাই ভারত সীমান্ত হয়ে অন্যান্য পয়েন্ট দিয়ে মাদক দেশে ঢুকছে। দেখা গেছে, মাদকের পুরনো ভার্সনগুলো ভারত থেকেই ঢুকত। পরে ইয়াবাসহ নতুন নতুন মাদকে মিয়ানমারের সম্পৃক্ততা মিলেছে। ভারতীয় ফেনসিডিলে একসময় বাংলাদেশ সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। চোরাকারবারিরা ভারতের অভ্যন্তরে মাদক উৎপাদন করে পাচার করত। যেখানে মাদক মানুষের জন্য চরম হুমকি; সেখানে ভারত সীমান্তে দীর্ঘ দিন ফেনসিডিলের কারখানা চালু রাখা এবং সেগুলো থেকে বাংলাদেশে পাচার কিভাবে সম্ভব হতো; যদি না দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে অনুমোদন থাকত; এ নিয়ে বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রশ্ন ছিল। বাস্তবে এ বিষয়ে ভারতের গাফিলতি স্পষ্ট। এবার ইয়াবা কারখানার সন্ধান দিয়েছে বাংলাদেশ। এই মাদক তৈরির কারখানা ভারত সরকারকে ফাঁকি দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে, এটি বিশ্বাস করা কঠিন। অথচ দেশটি নিজেদের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের নজরদারি ও সামর্থ্য বহু গুণে বাড়িয়েছে।
আমরা বলতে চাই, সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়ার পরও ইয়াবা ও ফেনসিডিল কারখানাগুলো চলতে পারে না। বরং এ ধরনের অপকর্মে যারা জড়িত; তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়াই যুক্তিযুক্ত। শাস্তি পেলে নিশ্চয় ফের মাদক উৎপাদনে সাহস পাবে না দুষ্কৃতকারীরা। বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে সীমান্তে মাদক উৎপাদনকারী আরো কারখানা থাকলে দ্রুত শনাক্ত করে অচিরেই যাতে সেগুলো বন্ধ করা হয়; সে জন্য ভারতের সাথে আলোচনায় বসা। দু’টি দেশ যদি একে অপরের বন্ধু হয়ে থাকে; তাহলে কেউ কারো ক্ষতি করতে পারে না। আর একসাথে কাজ করলে মাদক নির্মূল করাও অসম্ভব কিছু নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা