২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সিরাজগঞ্জে সুদখোরদের শোষণ

জনগণকে মুক্তি দিন

-

নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদের জাঁতাকলে নিঃস্ব হয়েও রেহাই পাচ্ছে না সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার শতাধিক পরিবার। বেআইনি সুদি কারবারের হোতাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টাতেও কাজ হচ্ছে না। চক্রবৃদ্ধি হারে সুদাসল গুনতে গুনতে জমিজমা ও বসতভিটা খুইয়ে অনেকেই দুঃসহ জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউবা যথাসময়ে সুদাসল পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে এখন ফেরারি। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
তাড়াশের সর্বত্র ব্যাঙের ছাতার মতো সুদখোরদের অসংখ্য সংগঠন গড়ে উঠেছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। আবার ব্যক্তি পর্যায়েও সুদের রমরমা কারবার চলছে। মহাজনী প্রথার ছদ্মাবরণে সুদখোরদের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে অসহায় কৃষক শ্রমিকসহ নিম্নবিত্ত মানুষ। সুদে টাকা নিয়ে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদাসল ফেরত দিতে গিয়ে জমিজমা ও ভিটেবাড়ি বিক্রি করে তারা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। সুদ শোধ করতে না পেরে কেউবা লাঞ্ছিত হয়ে মামলার শিকার হচ্ছেন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ঘরগ্রাম পূর্বপাড়া গ্রামের জনৈক প্রভাবশালী যুবক পেশাদার সুদের কারবারি। বিনা অনুমোদনে দাপটের সাথে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যেকোনো ব্যাংকের চেকের পাতা রেখে লাখ লাখ টাকা ঋণ দিয়ে থাকেন। এর বিনিময়ে চক্রবৃদ্ধি হারে কয়েক গুণ টাকা নিচ্ছেন। ফাঁদে পা দিয়ে শতাধিক পরিবার প্রতারণার শিকার। অভিযোগ আছে, সুদ পরিশোধ করতে না পারলে তিনি চেকে নিজের ইচ্ছামতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে দেন। এর হেরফের হলে উকিল নোটিশ বা কোটি টাকার মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকেন। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, তিনি উচ্চহারের সুদে কয়েক শ’ পরিবারকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন; নিজে বা লোক মারফত নিয়মিত সুদের টাকা তুলে থাকেন। ঋণ দেয়ার সময় গ্রহীতাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে তাদের স্বাক্ষরযুক্ত একাধিক সাদা চেক নিয়ে নেন। এতে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি লোকটির কাছ থেকে পাঁচটি সাদা চেক দিয়ে তিন বছর আগে মাসে ৫ শতাংশ সুদে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। মাত্র তিন মাসের সুদ বাকি পড়ায় পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ কোর্টে ৪৪ লাখ টাকার মামলা হয়। কারোইল গ্রামের এক লোক জানান, তিনি ওই যুবকের কাছ থেকে তিনটি সাদা চেক দিয়ে সুদে সাত লাখ টাকা ঋণ নেন। দীর্ঘ দিন নিয়মিত সুদ দিয়েছেন; কিন্তু মাত্র দুই মাসের সুদ বাকি পড়ায় ৬০ লাখ টাকার মামলা করা হয়েছে একাধিক জেলায়। আরেক লোক তিনটি সাদা চেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। তার নামে ২০ লাখ টাকার মামলা হয়েছে। একই উপজেলার আরেক ব্যক্তি জানান, এক বছর আগে চারটি ফাঁকা চেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। মহামারীতে দুই-তিন মাসের সুদ বাকি পড়ায় সাদা চেকে ‘ইচ্ছামতো’ অঙ্ক বসিয়ে এক কোটি ৯০ লাখ টাকার জন্য মামলা করা হয়েছে। নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার একজন জানিয়েছেন, সিরাজগঞ্জে তার নামে ২৫ লাখ টাকার মামলা থাকায় তিনি এখন পলাতক। কয়েক জেলায় শতাধিক মানুষের এমন অভিযোগ আছে।
জেলা সমবায় কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, সুদি কারবারের কোনো অনুমোদন নেই। অভিযুক্ত যুবক বলেছেন, ‘এটি আমার ব্যবসা। কেউ টাকা না দিলে আদায়ের জন্য মামলা করতে হয়।’ এ দিকে সিরাজগঞ্জের ডিসি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এসপিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আমরা আশা করি, এসব অসহায় নিম্নবিত্তকে বাঁচানোর জন্য সরকার অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে।


আরো সংবাদ



premium cement
নেপালে প্রথমবারের মতো ট্রান্সজেন্ডাররা স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আইপিএলে কোনো বাংলাদেশী ক্রিকেটার জায়গা না পাওয়া কিসের ইঙ্গিত? গুলামের প্রথম সেঞ্চুরিতে সিরিজ জিতলো পাকিস্তান রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ তীর্থযাত্রীদের বাস উল্টে আহত ১৯ ইরানকে পারমাণবিক বোমা বানাতে দেবে না ইসরাইল : নেতানিয়াহু অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সংখ্যালঘুরা আগের চেয়ে নিরাপদ মনে করেন রাঙ্গামাটিতে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ১ ট্রাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পুতিন মিয়ানমারের এক মহাসড়কে ১০ মাসে দুর্ঘটনায় নিহত ৮২ সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নিরপেক্ষ ইসির পক্ষেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : ড. বদিউল ঈশ্বরগঞ্জে টিসিবির উধাও হওয়া সেই ডাল উদ্ধার

সকল