দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে ভাবতে হবে
- ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বাংলাদেশে সঙ্কটের মূল জায়গা অনৈক্য ও বিভক্তি। রাষ্ট্র হিসেবে স্থিতিশীলতা অর্জন এ কারণে করতে পারিনি আমরা। শেখ হাসিনা বিদেশী শক্তির ওপর ভর করে আমাদের মতানৈক্যের সুযোগ নিয়েছেন, ১৫ বছরের বেশি সময় নির্মমতা চালাতে পেরেছেন। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সে জন্য জোর দিয়ে কাজ করছে। ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়ে তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছেন। গত শনিবার এ কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের সূচনা করেছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে- সংস্কারের পক্ষে সবাইকে টেবিলে বসানো।
ভেঙে পড়া রাষ্ট্র পুনর্বিন্যস্তের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ছাত্র-জনতা সমর্থন দিচ্ছেন। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ড. ইউনূসের সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমে রাষ্ট্রের অঙ্গগুলোর কোথায় কী সমস্যা আছে; তা নির্ণয়ের চেষ্টা করেছে। গঠিত ছয়টি কমিশন বিস্তারিত ব্যবচ্ছেদ করে প্রতিবেদন দিয়েছে। এখন শুরু হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ, শনাক্ত হওয়া রোগ নিরাময়ে কিভাবে অগ্রসর হতে হবে- তার কৌশল নির্ণয়। এজন্য দরকার পুরো জাতির সমর্থন। ইতোমধ্যে জনসাধারণ রাষ্ট্রব্যবস্থায় আমূল সংস্কারে তাগিদ দিয়েছেন। তারা চান একটি মানবিক রাষ্ট্র, যেখানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগ তাদের সেবা দান করবে, ভূ-লুণ্ঠিত হবে না নাগরিক অধিকার।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোষণায় মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণের কর্মসূচি রয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপক কর্মসূচি জাতির সামনে আগেই উপস্থাপন করেছে। অন্যান্য দল ও নাগরিক সমাজও রাষ্ট্র সংস্কারের সমর্থক। দুর্ভাগ্য হচ্ছে- পক্ষগুলোর মধ্যে পারস্পারিক আস্থার ঘাটতি রয়েছে। এ সুযোগটি ব্যবহার করেছে ফ্যাসিবাদীরা। বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সন্দেহ-অবিশ্বাস বাড়াতে অব্যাহত ষড়যন্ত্র করে ফায়দা নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি কমিশন গঠন করেছে। বিভিন্ন বিভাগের অভিজ্ঞরা এর সদস্য হয়েছেন। তারা অংশীজনদের সাথে কথা বলে রাষ্ট্রের বিভাগগুলোর বিদ্যমান সমস্যা ও তা সমাধানের দিকনির্দেশনা পেশ করতে যাচ্ছে। প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে একমত হওয়া গেলে দেশের ফ্যাসিবাদী কাঠামোর খোলনলচে পাল্টে যাবে। আশা করা যায়, এর ফলে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী নতুন এক বাংলাদেশ আমরা পাবো। অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, এজন্য দরকার ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হওয়া।
সরকারপ্রধান ড. ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে প্রথম বৈঠকে বলেছেন, সরকার শুধু বোঝাবে, এসব সংস্কার কেন প্রয়োজন ও তা কিভাবে করা যায়। এ ব্যাপারে তিনি জানান, এসব চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নয়। এমনকি এগুলো বাস্তবায়নের কাজটিও করবে রাজনৈতিক দলগুলো। এতে ড. ইউনূস সরকারের সদিচ্ছার বিষয়টি স্পষ্ট। দেশকে পুনর্গঠনে তিনি সর্বোচ্চ ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করছেন। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও ছাত্র-জনতাকে অবশ্যই এ সুযোগ কাজে লাগাতে এগিয়ে আসতে হবে।
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ এক মহাসুযোগের দ্বারে উপস্থিত। মনে রাখতে হবে, এ সুযোগ হেলায় হারালে, দ্বিতীয়বার শত বছরেও পাওয়া যাবে কিনা সেই সন্দেহ রয়েছে। এ অবস্থায় সবাইকে দলমত ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। আশা করা যায়, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশের পাটাতন গেড়ে দিতে পারবে। যার সুফল পাবে ১৮ কোটি মানুষ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা