বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত নয়
- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৭
শেখ হাসিনা গণরোষের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিলে বাংলাদেশের সাথে ভারতে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঝাঁকুনি খেয়েছে। দেশটির ক্ষমতাসীনদের সাথে নতুন বাংলাদেশের সম্পর্কে হাসিনার সময়ের চেয়ে বড় পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। গুম, খুন, গণহত্যাসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন চালিয়ে হাসিনা যখন তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করছিলেন তখন বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ার গদ গদ প্রশস্তি করেছে ভারত। এ দিকে ছাত্র-জনতা রাজপথে তাজা রক্ত ঢেলে স্বৈরাচার হটানোর পর যখন মুক্ত স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রচনায় বদ্ধপরিকর তখন এ দেশে সংস্কারের কোনো কাজই ভারত ভালো চোখে দেখছে না। গুম, খুনের বিচার হোক, মানুষ ভোটাধিকার ফিরে পাক- এটা যেন ভারত পছন্দ করতে পারছে না।
হাসিনা ভারতে বসে নির্বিঘেœ হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। গত ছয় মাসে তিনি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে তার প্রতিপক্ষকে খুন ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার উসকানি দিয়েছেন। ঘৃণা ছড়ানো এসব বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার বক্তব্যের জেরে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। যারা হাসিনার কথায় মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছে সেই সন্ত্রাসীরা নতুন করে আস্ফালন শুরু করেছে। এর প্রতিফলন দেখা গেল গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। তারা হুমকি দিচ্ছে মানুষকে শান্তিতে ঘুমাতে দেবে না। ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে সরকার জানিয়ে দিয়েছে, হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য দুই দেশের সুষ্ঠু সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক নয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের উদ্দেশে হাসিনা সামাজিক মাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার পুরোটাই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। দেখা গেল, খুন, গুম, লুটপাট, অর্থপাচারসহ সীমাহীন অপরাধের জন্য হাসিনা সামান্যতমও অনুতপ্ত নন। অন্য দিকে জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার প্রাণদানকে তিনি সন্ত্রাসী কর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করতে চান।
এই হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ার পর এ ধরনের ন্যক্কারজনক বক্তব্যের সুযোগ করে দিচ্ছে ভারত। আবার বাংলাদেশ যখন ভারতের হাইকমিশনারকে ডেকে আপত্তি জানাচ্ছে তার প্রতিক্রিয়ায় ভারতও বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ডেকে তার পাল্টা জবাব দিচ্ছে। এটা কোনোভাবেই সমীচীন হতে পারে না। হাসিনার বক্তব্যকে তার একান্ত নিজস্ব বলে দায় এড়াতে চাইছে দিল্লি। আবার হাসিনার উসকানির প্রতিক্রিয়ায় যখন ৩২ নম্বর বাড়ি ছাত্র-জনতা গুঁড়িয়ে দিয়েছে তা নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে। তাদের এই বিবৃতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। এমন আচরণ সম্পূর্ণ স্ববিরোধী এবং এর আগে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিকদের সাথে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারও পরিপন্থী। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সফরে এসে বলেছিলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সাথে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক চায়। তারপর একই আশাবাদ তারা উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে আবারো রেখেছিল। কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা হাসিনাকে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়, ঢাকার বর্তমান সরকারের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে দিল্লি আন্তরিক নয়।
বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে উৎখাত করে এখন একতাবদ্ধ। তারা নতুন করে দেশ গড়তে চায়। যেখানে গুম, খুন, নির্যাতন, নিপীড়ন থাকবে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার থাকবে। সুসম্পর্ক চাইলে ভারতকে এই ইতিবাচক বাংলাদেশকে মেনে নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা