আমাদের কত বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন
- ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে রাস্তা অবরোধ, অনশন ও বিক্ষোভের মতো নানা কর্মসূচি পালন করছে কলেজটির কিছু শিক্ষার্থী। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে এসব কর্র্মসূচি পালন করে আসছে কলেজটির শিক্ষার্থীরা। গত ১৮ নভেম্বর তেজগাঁওয়ে রেলপথ অবরোধ করতে গিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে শিশুসহ কিছু মানুষ আহতও হন। গত বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে আবারো আন্দোলন করছে। এবার তারা গুলশান ও মহাখালী এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে এবং একই সাথে কলেজ ফটকে অনশন চালিয়ে যাচ্ছে।
সরকারি তিতুমীর কলেজ কয়েক বছর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। পরবর্তী সময়ে তিতুমীর কলেজসহ ঢাকার সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়। লক্ষ্য ছিল শিক্ষার মানোন্নয়ন। কিন্তু সাত কলেজকে ঢাবির অধীনে নেয়ার পর কলেজগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়ন হয়েছে কি না তা বোঝা না গেলেও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কাজে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা যে নানা ভোগান্তিতে পড়েছিল, তা তাদের ঢাবি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দাবি থেকেই স্পষ্ট। অবশেষে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি থেকে সাত কলেজকে আলাদা করা হয়েছে। একই সাথে সাত কলেজের সমন্বয়ে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার কথাও ভাবছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
এমতাবস্থায় তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কতটা যৌক্তিক তা বিবেচনার দাবি রাখে।
কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি তোলা নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু সেই দাবির যৌক্তিকতা কতটুকু, সেটি বিবেচ্য। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার দাবিতে লাগাতার অবরোধ, অনশন করা, মানুষকে জিম্মি করা, জনভোগান্তি সৃষ্টি করা কতটুকু সমীচীন সেটিও দেখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার জায়গা। এটি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন হয় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার যা সঠিকভাবে একমাত্র সরকারই করতে পারে। সরকারই প্রয়োজনীয় গবেষণা করে বলতে পারে কোথায় বিশ্ববিদ্যালয় করা যায়, কোথায় যায় না। তাই তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সরকারের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ২০০। এর মধ্যে বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান সন্তোষজনক নয়। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও কাক্সিক্ষত মানের হয়ে ওঠেনি। এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর যে মানের শিক্ষার্থী বেরিয়ে আসছেন, তার অধিকাংশই বছরের পর বছর বেকার থাকছেন। অথচ আমাদের দেশেই নানা সেক্টরে দক্ষ লোকের অভাবে হাজার হাজার বিদেশী লোক কাজ করছেন।
যেখানে বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই কাক্সিক্ষত মানের হয়ে উঠছে না সেখানে নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় করা কি উচিত হবে? কেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় করে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হবে? তার চেয়ে কি যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে রয়েছে সেগুলোকেই মানসম্পন্ন করা জরুরি নয়? এ বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের ভাবতে হবে। আমাদের দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় কোথায় কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত তা নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের। বিশ্ববিদ্যালয় নয় শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকা উচিত উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে। অন্যথায় মানহীন উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাজারটা হলেও শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা