বিচার দ্রুত সম্পন্ন করুন
- ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
গত দেড় দশকের শাসনামলে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বিরোধী সব মত-পথ দমনে নিষ্ঠুরভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছেন। এতে চরমভাবে মানবাধিকার ভূ-লুণ্ঠিত হয়। ভিন্ন মত দমনে সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয় সব বাহিনীকে কুক্ষিগত করেন তিনি।
শেখ হাসিনা যাদের নিজের ক্ষমতার জন্য হুমকি মনে করেছেন, তাদের গুম করার নির্দেশ দিতেন এবং গুমের পর কাউকে কাউকে মেরে ফেলারও নির্দেশ দেন। এমনি একজন ছিলেন দীর্ঘ আট বছর গুম হয়ে থাকা ব্রিগেডিয়ার (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল্লাহ আমান আযমী। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে।
হাসিনার পতনের পর জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তে ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার একটি কমিশন গঠন করে। এই কমিশন প্রথম যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে কমপক্ষে তিন হাজার ৫০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি ‘কেন্দ্রীয় কমান্ড কাঠামোর’ অধীনে গুম করা হতো। গুমের ঘটনা দেখাশোনা করতেন স্বয়ং শেখ হাসিনা এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশত্যাগী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ নির্দেশে জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুম ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হস্তান্তর করা জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে সংস্থার এক রিপোর্টে এমন তথ্য এসেছে।
গত সোমবার এইচআরডব্লিউ ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভ্যুলুশনে রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতায় থাকাকালে কিছু ক্ষেত্রে গুম অথবা হত্যার সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নিষ্পেষণমূলক শাসনের মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষাবাহিনী। তারা পর্যায়ক্রমে বিরোধীদলীয় সদস্য, সমালোচক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মীদের টার্গেট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা দিয়েছে, নির্যাতন করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা, খেয়ালখুশিমতো গ্রেফতার এবং গুম করা হয়েছে।
ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে বিচার বিভাগ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা। এভাবে খেয়ালখুশি মতো অপশাসন চালিয়েছেন খুনি হাসিনা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এলেন পিয়ারসন বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশী প্রাণ দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশে মানবাধিকারের ভবিষ্যৎ নির্মাণের একটি যুগান্তকারী সুযোগ এনে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার যদি দ্রুত এবং কাঠামোগত সংস্কার না করে তাহলে ভবিষ্যতের সরকারগুলো যেকোনো সময় দমন-পীড়নের পথে যেতে পারে। তেমনটি ঘটলে কষ্টার্জিত অভূতপূর্ব এ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কারের সাথে সাথে আইনবহির্ভূত প্রতিটি গুম-খুনের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা জরুরি। নির্দেশদাতা হাসিনাসহ তার সাথে এই জঘন্য অপকর্মে জড়িতদের বিচার অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই করতে হবে। যাতে বাকি খুনিদের বিচার ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের জন্য করা সহজ হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা