পায়ে কুড়াল মারার শামিল
- ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উত্তর বাবুর্চি (সৈয়দপুর) এলাকায় সড়কের পাশের মাটি কেটে নিয়ে গেছেন ইটভাটা মালিকরা। এতে বর্ষা মৌসুমে সড়ক ধসে গিয়ে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে ট্রাকে করে ইটভাটার মাটি পরিবহনের সময় সড়কে মাটি পড়ে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হচ্ছে। কুয়াশা বা হালকা বৃষ্টিতে সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা। একটি সহযোগী দৈনিকের কুমিল্লা প্রতিনিধি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব জানা গেছে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উত্তর বাবুর্চি (সৈয়দপুর) এলাকায় সরকারি বিধিমালা না মেনে মহাসড়কের পাশে মেসার্স সিটি ব্রিকস ও মেসার্স সাকুরা ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচার নামে দু’টি ইটভাটা পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে। দু’টি ইটভাটার পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেই। উভয় ইটভাটার সামনে মহাসড়ক লাগোয়া অন্তত ২০ ফুট করে জায়গার মাটি কেটে নিয়ে গেছে। সেই সাথে ট্রাক্টরে করে মাটি আনা-নেয়া করতে গিয়ে সড়কের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী লেনে প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে থোকায় থোকায় পড়ে আছে মাটি। যানবাহন গেলে বাতাসে ধুলো উড়ছে। কুয়াশা বা হালকা বৃষ্টিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ভাটায় ইট তৈরির জন্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় ফসলি জমির মাটি। জমি থেকে খননযন্ত্র (এক্সকেভেটর) দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টর ও ড্রামট্রাকে তা পরিবহন করা হয়। বহনের সময়ে গাড়ি থেকে পড়া মাটি বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় যানবাহন।
এ বিষয়ে মেসার্স সাকুরা ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারের মালিক আল রায়হান ওরফে আলকাছ বলেন, ‘জমিন বরাবর সড়কের পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়েছি।’ সড়ক কাটিনি। মেসার্স সিটি ব্রিকসের মালিক গাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুধু আমি মহাসড়কের পাশ কাটিনি, আমার পাশে আরো অনেকে মাটি কেটেছে তাদের ধরেন।’ এই বিষয়ে চৌদ্দগ্রামের ইউএনও মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে রাতে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাটি দেখেছি। নিয়মিত মামলা দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে।’
কুমিল্লা পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ‘এই ভাটার কোনো ছাড়পত্র নেই। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘ট্রাক থেকে পড়া ভেজা মাটির ফলে সড়কের বিটুমিন বা পিচ নষ্ট হয়ে যায়। এতে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমরা সংশ্লিষ্ট ভাটামালিক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য সড়ক বিভাগ থেকে চিঠি দিয়েছি।’
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফাহমিদা মোস্তফা বলেন, ‘মহাসড়কের পাশের মাটি কাটা বড় ধরনের অপরাধ। ইউএনওকে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হবে।’
মহাসড়ক ঘেঁষা মাটি কাটা মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার শামিল। কারণ পরিবেশ ধ্বংস হলে সবার ক্ষতি। এ জন্য কারো প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করা উচিত নয়। কারণ তাতে সবারই ক্ষতি হবে। যারা পরিবেশ নষ্ট করছেন তাদেরও ক্ষতি হবে। মহাসড়ক ঘেঁষা মাটি নিলে এটার অর্থ হবে নিজের পিঠে ছুরির আঘাতের শামিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা