অভিন্ন নদী কারো একার নয়
- ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের ওপর দিয়ে অভিন্ন ৫৪টি নদী প্রবাহিত। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, এসব নদীর পানিসম্পদে দুই দেশের অধিকার সমভাবে স্বীকৃত। কিন্তু অভিন্ন নদীর কমপক্ষে ৫১টি থেকে অবৈধভাবে একতরফা পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। এতে শুকনো মৌসুম শুরুর আগেই বাংলাদেশ অংশে নদীর পানিপ্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। ফলে সেচ মৌসুমে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশগত চরম বিপর্যয় নেমে আসে। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ এ বৈরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আসছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, ভারতের পানি আগ্রাসনে আমাদের দেশের অনেক খরস্রোতা নদী এখন শুকিয়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকার উদ্বেগের কথা দিল্লিকে জানানো হয়েছে। যৌথ কমিশনের বৈঠকসহ নদীগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে যৌথ কারিগরি সমীক্ষা চালানোর কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু দিল্লির পক্ষ থেকে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হয় না। ফলে বাংলাদেশ-ভারত পানি সমস্যার সমাধান ঝুলে আছে বছরের পর বছর ধরে।
একটি সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে পানি-বিশেষজ্ঞদের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি সেচ মৌসুমে ভারত অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। কিছুদিন আগে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এক নেতা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পানি অবরোধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। এসব বিষয় নিয়ে একাধিক চিঠি দিয়ে ভারতের কাছ থেকে সন্তোষজনক কোনো জবাব পায়নি ঢাকা। তবে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরের সময় পানিবণ্টনসহ নদী দূষণের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয় আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরা হয়।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, অভিন্ন বড় নদী গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ আরো এক বছর অবশিষ্ট রয়েছে। কিন্তু এখন থেকেই ভারত চুক্তি অনুযায়ী পানি দিচ্ছে না বাংলাদেশকে। এ মুহূর্তে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনাও নেই। উপরন্তু নদীটির উজানে ভারত অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণ করে নামমাত্র পানিপ্রবাহ রেখে পুরোটা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে কুশিয়ারা নদী থেকে পানি উত্তোলনে ২০২২ সাল থেকে বাধা দিয়ে আসছে ভারত। ফেনী ও তিতাসসহ সীমান্তবর্তী ৭টি নদীতে ভারত ভয়াবহ ক্ষতিকর বর্জ্য ফেলছে।
পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে পানির ন্যায্য হিসসা আদায়ে বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে আধিপত্যবাদী ভারতের স্বার্থে একের পর এক গণবিরোধী চুক্তি করেছে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার।
ভারত টালবাহানা করে আমাদের পানির ন্যায্য হিসসা দিতে গড়িমসি করে আসছে সব সময়। তাই পানিবিশেষজ্ঞদের মতো আমরাও মনে করি, ভারতের দিকে না তাকিয়ে পানির ন্যায্য হিসসা আদায়ে দিল্লিকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে চাপ দেয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফোরামে জোরালোভাবে অভিযোগ তুলতে হবে।
যেহেতু প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অপরিহার্য উপাদান পানি। সঙ্গত কারণে সাম্প্রতিক বিশ্বে পানির অধিকার সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলো সব সময় সোচ্চার থাকে। তাই ভারত অভিন্ন নদীর পানি থেকে আমাদের অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করায় দেশের কৃষি, পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচাতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফোরামে দিল্লির পানি আগ্রাসনের বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপনের কোনো বিকল্প নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা