অর্থনীতিতে সুশাসন জরুরি
- ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীর হলেও অদূরভবিষ্যতে তা পর্যায়ক্রমে স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। একই সাথে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে যে, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিতে ব্যাংক খাত সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগগুলো শিগগির দেশে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপে অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। বৈদেশিক খাতে অস্থিরতা কমেছে। ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব আরো কিছু দিন থাকবে। এটা পুনরুদ্ধার হতে সময় লাগবে।
শেখ হাসিনার চোরতন্ত্রের জমানায় নির্বিচার লুটপাট, তছরুপ, আত্মসাৎ ও পাচারের মাধ্যমে অর্থনীতির যে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলা হয়েছিল; তা দেশবাসীর জানা। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসে সেটি রোধ হয়েছে। সুশাসন ফেরাতে পারলে গতিও হয়তো আসবে; কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ডে যদি গতি না থাকে তাহলে সেটি সম্ভব নয়।
আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) মতো বৈশ্বিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির নানা ঝুঁকির দিকগুলো তুলে ধরে নেতিবাচক পূর্বাভাস দিচ্ছে। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শাসকের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে অর্থনীতিতে এখন ভাটার টান শুরু হয়েছে। এ নেতিবাচক প্রবণতা থেকে উত্তরণে দরকার সরকারের জোরালো পদক্ষেপ। দেশে রাজনৈতিক শূন্যতার প্রেক্ষাপটে অনেক বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগে ভাটা পড়তে পারে; কিন্তু অর্থনৈতিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যেসব কাঠামোগত সংস্কারের এখতিয়ার বাংলাদেশ ব্যাংকের আছে সেগুলো সম্পন্ন করতে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। বাস্তবতা হলো, তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে অর্থনীতির বিশেষজ্ঞদের মতামত আমরা জানছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান একটি জাতীয় দৈনিককে বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগের সরকার যথাসময়ে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। নতুন সরকারকেও খুব ভিন্ন কিছু করতে দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রা ও রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার। গোষ্ঠীস্বার্থ উপেক্ষা করে বর্তমান সরকার তা করতে পারত; কিন্তু দেখা যাচ্ছে সমন্বয় নেই।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও সরকারের সরাসরি সমালোচনা করে সম্প্রতি বলেছেন, অর্থনৈতিক সংস্কারে সরকারের কোনো মনোযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশবাসী এমন স্থবিরতা আশা করে না। গণ-অভ্যুত্থানের বিপুল শক্তি ও সমর্থনে তারা দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের দায়বদ্ধতা শুধু জনগণের কাছে। তাই দেশের জন্য, জনগণের জন্য যে কাজ ভালো সেটি তারা নির্মোহভাবে করবেন এটিই কাম্য।
পতিত সরকারের বেপরোয়া দুর্নীতি-অনিয়মের জেরে শিল্প ধ্বংস এবং অর্থনীতি নাজুক হয়ে পড়ায় দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন কমেছে, তেমনি বেড়েছে বেকারের হার। বিপুল মূল্যস্ফীতির চাপে বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এ অবস্থায় আওয়ামী সুবিধাভোগী লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং আর্থিক খাতে পরিপূর্ণ সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ক্ষেত্রে স্বাধীন। এটি করা হলে অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার হবে বলে আমরা মনে করি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা