নাগরিক-প্রত্যাশার গুরুত্ব দিন
- ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এর বাস্তবতা বাংলাদেশে খুব কম দেখা গেছে; বরং জনগণের নামে মুখে মুখে সব স্বীকৃতি দিয়ে তাদের চাওয়া-পাওয়া ও আকাক্সক্ষা শিকেয় তুলে রাখা হয়েছে। বিশেষ করে ফ্যাসিবাদী জমানায় নাগরিক অধিকার ভূ-লুণ্ঠন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের ক্ষমতায়নে দেশে ব্যাপকভিত্তিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য গঠিত সংস্কার কমিশনগুলো সব শ্রেণিপেশা, ধর্ম-বর্ণের মানুষের মতামত নিয়েছে এবং নিচ্ছে। তাতে জনগোষ্ঠীর বিপুল অংশের আশা-আকাক্সক্ষা ও চাওয়া জাতির সামনে হাজির হয়েছে এবং হচ্ছে।
সরকার ও শাসন পরিচলানা-সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে কাজ করছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এটি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে ডিসেম্বরের শেষের দিকে একটি জরিপ চালায়। তাতে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত দিয়েছে জনগণ। সরাসরি ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চান ৮৩ শতাংশ মানুষ। সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি চান মাত্র ১৩ শতাংশ। বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি একটি আলঙ্কারিক পদ হয়ে রয়েছে। তিনি মূলত রাষ্ট্রীয় কাজ সমাধায় নির্বাহী বিভাগের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটান। সুনির্দিষ্ট করে বললে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী চলেন আমাদের রাষ্ট্রপতি। বিগত ৩৩ বছরের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রেসিডেন্ট পদটি দলীয় সরকারের উপহার হিসেবে দেখা গেছে। ক্ষমতাসীন দল পছন্দের কাউকে পদটি উপহার দিয়ে তাকে সম্মানীত করেছে। অথচ রাষ্ট্রপতির পেছনে বিপুল অর্থ খরচ হয় রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে। কিন্তু রাষ্ট্র তার কাছ থেকে তেমনভাবে লাভবান হতে পারছে না। এ কারণে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন সক্ষম ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তাগিদ দেখা যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতিকে নির্বাহী ক্ষমতার একটি অংশও দিতে হবে, এমন মনোভাব দেশের বিপুল মানুষ ব্যক্ত করেছেন।
স্বৈরাচারী হাসিনার শাসনামলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার নিয়ম করে এক নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল। মূলত ক্ষমতাসীনদের পছন্দের লোকদের স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসানো হয়। জরিপে ৭০ শতাংশ মানুষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার পক্ষে মত দিয়েছেন। দলীয় প্রতীকে করার পক্ষে মত দিয়েছেন ২৮ শতাংশ। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গটি। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৬৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ চাচ্ছেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। জনগণের পক্ষ থেকে এ ধরনের চাওয়ার প্রধান কারণ- স্থানীয় পর্যায়ে সেবাপ্রাপ্তি এবং নির্বাচনী আমেজের স্বাদ নেয়া। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে স্থানীয় সরকারের প্রায় সব প্রতিনিধি হাওয়া হয়ে গেছেন। স্থানীয় সরকারের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতির প্রয়োজনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করতে হলে রাজনৈতিক অংশীজনদের আস্থায় নিয়ে তা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে- ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে তারা এমনটি করছে না; বরং জাতির প্রয়োজনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার চিন্তা করছে।
৪৬ হাজার ৮০ জন মানুষ এই জরিপে অংশ নিয়েছেন। এর ভিত্তি দুর্বল ভাবার কোনো অবকাশ নেই। জনগণের চাওয়াকে সব পক্ষের মূল্যায়ন করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা