১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`
শত পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বৃদ্ধি

জনজীবনে কষ্ট বাড়বে

-

নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষের জীবন কষ্ট ও দুর্ভোগে আবর্তিত হচ্ছে বছরতিনেক ধরে। সদ্যবিদায়ী বছরে অত্যধিক দামে সারা বছর গড় মূল্যস্ফীতি ছিল দুই অঙ্কের ঘরে। বাস্তবতা হলো- জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় বাড়লেও মানুষের আয়-রোজগার বাড়েনি। এর মধ্যে দুঃসংবাদ হয়ে হাজির হয়েছে শতাধিক পণ্য ও সেবায় নতুন শুল্ক-কর।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে নতুন করে বাড়তি শুল্ক-করে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে জনজীবন যখন বিপর্যস্ত, সে সময় শত পণ্যে শুল্ক-ভ্যাট বাড়ানোয় ব্যয় আরেক দফা বেড়ে জনজীবন আরো সঙ্কটময় করে তুলবে। এতে স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার খরচ সামাল দেয়া কঠিন হবে।
প্রশ্ন উঠেছে, যে কর দেয় না, তার কাছ থেকে আদায়ের উদ্যোগ না নিয়ে অর্থবছরের মধ্যে এসে শুল্ক-কর বাড়ানো কতটা গ্রহণযোগ্য? যেখানে এমনিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তিতে নেই ভোক্তাসাধারণ। আসলে আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে জনগণের ওপর আরো করের বোঝা চাপাল সরকার। অনাকাক্সিক্ষতভাবে শতাধিক পণ্য-সেবার ওপর ভ্যাট, সম্পূরক ও আবগারি শুল্ক বাড়াল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। রেস্তোরাঁ, ওষুধ, সাবান, ডিটারজেন্ট, বিস্কুট, ফল, পোশাক, গৃহস্থালিসহ নানা পণ্যে শুল্ক-কর বাড়ানো হলো। যেগুলো আবশ্যকীয় পণ্য। এ ছাড়া টেলিফোন, ইন্টারনেট ও এলপি গ্যাসের মতো কয়েকটি সেবায় শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে।
যদিও পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়ানোয় নিত্যপণ্যের দর বাড়বে না বলে বারবার আশ্বস্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। কিন্তু রূঢ় বাস্তবতার আলোকে তার কথায় কতটুকু আস্থা রাখা যায়? যেখানে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমালে ভোক্তা তার সুফল পান না, সেখানে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়লে পণ্যের দাম বাড়বে না-তা কিভাবে বিশ্বাস করবেন ভোক্তাসাধারণ?
শত পণ্যের কর-ভ্যাট বাড়ানো নিয়ে গণমাধ্যমকে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সরকার এসব পণ্যকে নিত্যপণ্য বলে স্বীকার না করলেও এগুলো জীবন-জীবিকার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এগুলোর ওপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর প্রভাব পড়বে ভোক্তার ঘাড়ে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ রয়েছে। জিনিসপত্রের দামের স্তরও অনেক উপরে উঠে গেছে। এতে সবাই হিমশিম খাচ্ছে। তাদের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। এখন নতুন শুল্ক-কর আরোপের ফলে এ শ্রেণীর মানুষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে।
অর্থবছরের মাঝপথে শুল্ক-করে এত বড় পরিবর্তন এর আগে হয়েছে কি না, আমাদের জানা নেই। এ ধরনের সিদ্ধান্ত যে মানুষ ভালোভাবে নেবে না এটি সরকারের অজানা নয়। তাই শুল্ক-করের পরিমাণ না বাড়িয়ে এর আওতা বাড়ানো উচিত বলে আমরা মনে করি। সরকার সে পথে না হেঁটে যারা নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছেন, তাদের ওপরে আরো বোঝা চাপাল। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ব্যবসা-বাণিজ্যে। বাড়বে করফাঁকির প্রবণতাও। সরকারের উচিত, প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি বা কমানো, ভ্যাট-ব্যবস্থা সহজ করা। পাশাপাশি ভ্যাট কমিয়ে করের আওতা বাড়ানো। সেই সাথে সিন্ডিকেট ভাঙা এবং চাঁদাবাজি কমিয়ে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিকঠাক করায় মনোযোগ দেয়া। তা না করে কর-ভ্যাট বাড়ানো জনস্বার্থের পরিপন্থী।


আরো সংবাদ



premium cement
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অগ্নি-প্রতিরোধ মহড়া ১৯ জানুয়ারি পাটগ্রামে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় মদের বোতল দিল বিএসএফ ফায়ার সার্ভিসের ৬ কর্মকর্তার পদোন্নতি আরো ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব কারাজীবনের অবসান, কাল মুক্তি পাচ্ছেন লুৎফুজ্জামান বাবর সীমান্ত ইস্যু এক দিনে সমাধান সম্ভব নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বচ্ছ কাঁচের ঘরে রিমান্ডের সুপারিশ পুলিশ সংস্কার কমিশনের রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত এনবিআরের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ৯০ শতাংশ মানুষ : সংস্কার কমিশন গাজীপুরে বিদেশি পিস্তল ও ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার শরীয়তপুরে ছাত্র আন্দোলনে নিহত জালালের লাশ উত্তোলন

সকল