প্রতি ইঞ্চি ভূমি আমানত
- ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দিল্লির তাঁবেদার হাসিনা জমানায় দীর্ঘ দেড় দশকে নানাভাবে বাংলাদেশকে অধিকারবঞ্চিত করেছে ভারত। তবু বলা হতো- ওই সময়কালে দুই দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পেঁৗছেছিল। কিন্তু দেশবাসীর মনে আছে, হাসিনা আমলেও নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা না দেয়া থেকে শুরু করে সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এমনকি দুই দেশের সীমান্তে বাড়তি ভূমি জবরদখল করে রেখেছিল ভারত।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে তার অপশাসনের অবসান হয়। অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় সম্পর্ক গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছে। ফলে ভারত বাংলাদেশবিরোধী নগ্ন প্রচারণায় নেমেছে। এতে দুই দেশের সম্পর্ক এখন ৫৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে তলানিতে।
বাংলাদেশ এখন ভারতের কাছে ন্যায্য হিস্যা প্রত্যাশা করছে। একই সাথে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার ঝিনাইদহে বেশ কিছু ভূমি দখলমুক্ত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। গণমাধ্যমের খবর, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় কোদলা নদীর পাঁচ কিলোমিটার ভূখণ্ড দখলমুক্ত করার দাবি করেছে বিজিবি। নদীর ওই অংশ বাংলাদেশী ভূখণ্ডের ভেতরে হলেও এতদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ দখলে রাখায় বাংলাদেশীরা প্রবেশ করতে পারতেন না। বাংলাদেশী জেলেরা মাছ ধরতে নামলেও বাধা দিত বিএসএফ। বাংলাদেশীরা এখন নদীর ওই পাঁচ কিলোমিটার অংশে নামতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেছে বিজিবি। গত সোমবার সন্ধ্যায় মহেশপুর ৫৮ বিজিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে গত মঙ্গলবার ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফের বরাত দিয়ে তারা বিজিবির দাবি নাকচ করে দিয়েছে। কিন্তু ভারতীয় খবর সম্পর্কে মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো: আজিজুস সহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতীয় মিডিয়ার খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তারা অসত্য তথ্য প্রকাশ করছে।’
আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী, শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজ পর্যন্ত দুই দেশকে ছেড়ে দিতে হয়। বিজিবি জানায়, কোদলা নদী ভারত থেকে মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় শূন্যরেখা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে কিছু দূর প্রবাহিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা সীমান্ত দিয়ে আবার ভারতে (রানাঘাট) চলে গেছে। এর মধ্যে মাটিলা গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীটির ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার অংশে বিএসএফ আধিপত্য দেখাত।
১৯৬১ সালে প্রণীত দুই দেশের মানচিত্র অনুসারে, কোদলা নদীর ওই ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার অংশ বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখার অভ্যন্তরে অবস্থিত। নদীর এ অংশে বাংলাদেশী জনবসতি তুলনামূলক কম। এই সুযোগ নিয়ে বিএসএফ নদীর এ অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। সম্প্রতি বিষয়টি ৫৮ বিজিবির নজরে এলে তারা বিভিন্ন নথিপত্র, স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীটির সীমানা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বিএসএফের অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। একপর্যায়ে ৫৮ বিজিবি সদস্যরা কোদলা নদীর এই ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চি ভূমি আমাদের জন্য আমানত। কোনো দেশ যদি এই ভূমি জবরদখল করে তা উদ্ধার করা দেশপ্রেমের অংশ। দেশের ভূমি ভারতীয় দখলমুক্ত করায় বিজিবি সদস্যরা দেশপ্রেমের প্রমাণ দিয়েছেন। এখন দখলমুক্ত ভূমি ধরে রাখতে সীমান্তবর্তী সবাইকে বিজিবির সাথে এক হয়ে কাজ করতে হবে, যাতে উদ্ধারকৃত ভূমিতে বিএসএফ ফের অনুপ্রবেশ করতে না পারে। একই সাথে ভারতের সাথে আমাদের যে বিস্তৃত সীমানা রয়েছে সবখানে দেখতে হবে আরো কোনো ভূমি বিএসএফ দখল করে রেখেছে কি-না। রাখলে তা-ও উদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা