আমাদের প্রস্তুতি প্রয়োজন
- ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০, আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:০৬
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়। এখানে কিছু করার থাকে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের লক্ষণ বোঝার ক্ষমতা থাকলেও তা থেকে পরিত্রাণের উপায় মানুষের খুব কমই রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এটি নিয়তির লেখা হয়ে দাঁড়ায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ না মিললেও এর ক্ষয়ক্ষতি কমাতে মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারে। এক্ষেত্রে মানুষের প্রচেষ্টার কমতি থাকা উচিত নয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ভূমিকম্পের শক্তি খুব ব্যাপক ও বিস্তৃত। এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কখনো কখনো এতটাই ব্যাপক হয় যে, তা একটি শহর কিংবা নগর ধ্বংস করে দিতে পারে। পৃথিবীতে ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞের নমুনা আমরা প্রায়ই দেখি।
গত মঙ্গলবার চীনের তিব্বতের পার্বত্যাঞ্চলে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১০৬ জন নিহত ও ১৭৪ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় তিন হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চীনের নেপাল সীমান্তের কাছে ডিংরি কাউন্টিতে সংঘটিত এই ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয় প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান ও উত্তর ভারতের কিছু অংশেও। ভূমিকম্পে তিব্বতের ডিংরি কাউন্টি ও আশপাশ এলাকার ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্প কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় অনেক পাকা ভবন ধসে পড়েছে।
তিব্বতে ভূমিকম্পের অভিঘাত বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালের ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৬১৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম চীনে। এর আগে গত শুক্রবারও বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। শুক্রবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৪৮২ কিলোমিটার দূরে- মিয়ানমারের হোমালিনে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের উপর্যুপরি ভূকম্পন আসলে বড় ধরনের ভূমিকম্পের লক্ষণ। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সা¤প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের আঘাত উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ২০২৪ সাল থেকে রেকর্ড করা ৬০টি ভূমিকম্পের মধ্যে তিনটি ৪ মাত্রার উপরে এবং ৩১টি ৩ থেকে ৪ মাত্রার মধ্যে ছিল। এই ঊর্ধ্বগতি, শহর এলাকার বিস্তৃতি ও অপর্যাপ্ত অবকাঠামোর সাথে সম্পর্কিত দেশের জন্য ঝুঁকির দিকটিই তুলে ধরে। বুয়েটের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে ঢাকা শহরে। কারণ, এখানে অনেক বাড়ি উঠে গেছে অপরিকল্পিতভাবে। বাড়ির মালিকরা ইচ্ছামতো নিজের পছন্দে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আবার জলাভূমি ভরাট করেও অনেক বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে; সেখানে প্রকৌশলগত কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি অথবা করলেও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশে ভূমিকম্পের বিপদ যে শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক তা নয়; বরং চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটের মতো শহরেও ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব নয়। আমরা কেউ জানি না কখন কোথায় আঘাত হানবে। তবে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বাড়িঘর নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানাসহ ভূমিকম্প নিয়ে পাড়ায়-মহল্লায় সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেয়া যেতে পারে। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ না আসুক- এটিই সবার প্রার্থনা। কিন্তু দুর্যোগ এসে গেলে তা যেন আমাদের জন্য ধ্বংসাত্মক না হয়, সবসময় সেই প্রস্তুতি রাখা জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা