০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`
ভরা মৌসুমে চালের মূল্যবৃদ্ধি

চাপে গরিব মানুষ

-

আমাদের প্রধান খাদ্যপণ্য চাল। তাই এ দেশে চালের দাম বাড়লে বেশির ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ অর্থনৈতিক চাপে পড়েন। সঙ্গত কারণে প্রতিটি সরকার চালের দাম সহনীয় রাখতে সচেষ্ট থাকে; যাতে সাধারণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা না দেয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সেই চেষ্টা করছে।
দেশে চালের দাম এমনিতেই চড়া। কিছু দিন পরপরই চালের বাজারে দাম বাড়ে। অথচ এখন আমনের ভরা মৌসুম চলছে। বাজারে নতুন চাল এসেছে। তবু দাম না কমে বরং বাড়ছে। বেশি বেড়েছে মোটা চালের দাম। যার ক্রেতা কেবলই দরিদ্র জনগোষ্ঠী। স্বল্প আয়ের মানুষ মূলত মোটা ও মাঝারি মানের চাল কেনেন। নিম্নবিত্তের পরিবারগুলোর এখন এক কেজি চাল কিনতে ৬০ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। ফলে গরিব মানুষ বাড়তি চাপে পড়েছে। বেশি উৎপাদন ও বিক্রি হওয়া বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ চাল ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আশা প্রকাশ করেছিলেন, আমন ধান বাজারে এলে চালের দাম কমবে।
চালের দাম সা¤প্রতিক সময়ে শুধু নয়, কয়েক বছর ধরেই চড়া। দিন যত যাচ্ছে দাম আরো বাড়ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, মোটা চালের কেজি এখন ৫৪-৫৮ টাকা; যা এক বছর আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা। একইভাবে মাঝারি চালের দাম ৬০-৬৫ টাকা। এক বছর আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা। সরু চালের কেজি ৭০-৮৪ টাকা; যা এক বছর আগে ছিল ৬০-৭৫ টাকা।
টিসিবির হিসাবে, মোটা চালের দাম বেড়েছে মূলত সর্বশেষ এক সপ্তাহে। কেজিতে তিন থেকে চার টাকা। একই সময়ে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। সরু চালের দাম এক সপ্তাহে বাড়েনি। কিন্তু এক মাসের হিসাবে বেড়েছে দুই থেকে চার টাকা।
চালের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের রয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। বাস্তবে সরকার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তি পরিমাণে চাল সরবরাহ করতে পারেনি, কারণ মজুদ কম। অভ্যন্তরীণ সংগ্রহও বেশি নয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সরকারের কাছে চালের মজুদ এখন আট লাখ টন। চলতি আমন মৌসুমে সরকার সাড়ে ছয় লাখ টন চাল ও তিন লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করেছিল। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করা গেছে প্রায় আড়াই লাখ টন। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে। কতটা সফল হওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ বাজারে চালের দাম বেশি। সে তুলনায় সরকারি সংগ্রহ মূল্য কম, প্রতিকেজি ৪৭ টাকা।
বাজার নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে সরকারিভাবে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি করা হয়। আবার সরকার নানা কর্মসূচির আওতায় চাল সরবরাহ করে। অর্থনীতিবিদরা পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো বেশি চাল সরবরাহের পরামর্শ দিয়েছিলেন। যেহেতু ধানের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চালের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি করা হলে দাম কমতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement