এ অঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ হুমকিতে
- ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
পৌষ মাস আসতে না আসতে শুকিয়ে গেছে পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জের চলনবিল অধ্যুষিত উপজেলাগুলোতে প্রবাহিত নদ-নদী। এ এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ২৬টি নদ-নদীর মধ্যে ২১টির অবস্থা অত্যন্ত করুণ। একই সাথে দখল দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নদ-নদীগুলো। এগুলো দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ায় এর মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ নৌপথ। দু’-একটি নৌরুট এখনো সচল থাকলেও অল্প কিছু দিনের মধ্যে সেগুলোও অচল হয়ে পড়বে। একটি সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আত্রাই রিভার ড্রেজিং প্রজেক্টের আওতায় কিছু নদীপথ খনন করা হলেও তা খুব বেশি কাজে আসছে না। নদী খাল বিল দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ায় এক সময়ের চলন্তবিল খ্যাত ‘চলন বিল’ পরিণত হচ্ছে মরা বিলে। অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র এই পাঁচ মাস নদীগুলো শুকনা থাকে। এ সময় অনেক নদীতে ফসলের আবাদ হয়। নাব্যতা সঙ্কটে সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিলুপ্ত হচ্ছে দেশী মৎস্যসম্পদ। ব্যবসায়-বাণিজ্যেও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
জলপাইগুড়ির পাহাড় থেকে উৎপন্ন আত্রাই ও গুর নদী রাজশাহীতে এসে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর একটি শাখা কয়রাবাড়ি, নন্দনালী ও আত্রাই হয়ে আত্রাই ঘাটের এক মাইল নিম্ন থেকে ‘গুড’ নাম সিংড়া, একার বিথা, যোগেন্দ্রনগর ও জালাকান্দরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁচকৈড় ত্রিমোহনায় নন্দ কুজার সাথে মিশেছে। এদের মিলিত স্রোত গুমানী নামে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে বড়াল নদীর সাথে মিশেছে। জলপাইগুড়ির উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত থেকে দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, নিমগাছী, তাড়াশ, চাটমোহরের হান্ডিয়াল হয়ে অষ্টমনিষার কাছে বড়াল নদীতে মিশেছে। করতোয়ার নিম্নাংশ আত্রাই ও ফুলঝোড় নামে পরিচিত। পদ্মা-যমুনার সংযোগকারী বড়াল নদ পদ্মার চারঘাট মোহনা থেকে নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম হয়ে চাটমোহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে গুমানীর সাথে মিশে বড়াল নামেই ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বাঘাবাড়ী হয়ে হুরাসাগরের সঙ্গে মিশে নাকালিয়া এলাকায় গিয়ে যমুনার সাথে মিশেছে।
রাজশাহী থেকে নূরনগর পর্যন্ত নদীটির অনেক স্থানে ক্রসবাঁধ দেয়ায় নদীটি এখন মৃতাবস্থায় পড়ে আছে। এ নদী উদ্ধারে বড়াল রক্ষা কমিটি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। ফলে চাটমোহর নতুন বাজার বেঁাথর ঘাট ও রামনগরের ঘাটের তিনটি ক্রসবাঁধ অপসারণ করা হলেও এখনো পদ্মার সাথে যমুনার সংযোগ ঘটানো সম্ভব হয়নি। নূরনগর থেকে বাঘাবাড়ী পর্যন্ত কিছু দিনের জন্য প্রাণ ফিরে পায় নদীটি। চেঁচুয়া নদী ধারাবারিষার দক্ষিণ পাশ দিয়ে চতবার বিল, জোড়দহ, আফরার বিল, খলিশাবাড়ি বিল ও কিনু সরকারের ধর হয়ে চরসেন গ্রামের পশ্চিমে গুমানী নদীর সাথে মিশেছে। এ নদীও প্রায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। চাটমোহরের মূল গ্রাম ফৈলজানা হয়ে ফরিদপুরের ডেমরার কাছে চিকনাই নদী বড়াল নদীতে মিশেছে। ডেমরা এলাকায় স্লুইসগেট থাকায় ফরিদপুর থেকে নদীটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে মাস চারেক এ নদীতে পানি থাকলেও বাকি আট মাস পানিশূন্য থাকে। এগুলো ছাড়াও বানগঙ্গা, তুলসী নদী, ভাদাই নদী, মরা আত্রাই নদীর অবস্থা অত্যন্ত করুণ। এ ছাড়া চলনবিলাঞ্চলের বেশির ভাগ খাল, বিল, খাড়ি শুকিয়ে গেছে।
চলনবিলকে বাংলাদেশের প্রাণপ্রবাহ বলা যায়। এ বিলের নদ-নদীগুলোর মরণদশা এবং নৌপথ বন্ধ হওয়া দেশের প্রাণপ্রবাহ নিঃশেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিইবা বলা যায়। সরকার এ ব্যাপারে অবিলম্বে নজর দেবে। নয়তো এক সময় চলনবিল হারিয়ে যাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা