সরকারকে আন্তরিক হতে হবে
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা তার পরম বন্ধু ভারতে আশ্রয় নিয়ে জনরোষের কবল থেকে বেঁচেছে। এই ফ্যাসিস্ট শাসক দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনকালে শুধু যে মানবাধিকারসহ জনগণের সব মৌলিক অধিকার হরণ এবং বেপরোয়া লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন তাই নয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ এমনকি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশের কাছে বিকিয়ে দিয়েছিলেন। সবশেষে জনগণের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ যখন ঘটল সর্বব্যাপী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তখন এই ফ্যাসিস্ট শাসক যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে তা বিশে^র ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।
গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে চলে এসেছে গুম খুনের ধারাবাহিকতা। ঘটেছে পিলখানা হত্যার মতো রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড। আছে শাপলা চত্বর গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যার অভিযোগ। এমনকি মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের নামে প্রকাশ্যে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিচারিক হত্যার দায়ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অপরাধের তালিকায় রয়েছে। এখনো অনেক গুম ও খুনের ঘটনার তথ্য নতুন করে উদঘাটিত হচ্ছে। এসব ঘটনার সাথে ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনার সংশ্লিষ্টতার নির্ভরযোগ্য তথ্যও প্রকাশ পাচ্ছে। সুতরাং তার বিচার এ দেশের মাটিতে হতে হবে। এ বিষয়ে জাতি ঐক্যবদ্ধ। জাতি চায়, হাসিনার এমন দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ জনগণের সাথে এমন নৃশংস ফ্যাসিবাদী আচরণের দুঃসাহস না দেখায়। বিচার করতে হলে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
হাসিনাকে ফেরানো সহজ নয়। দু’দেশের মধ্যে যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে সেটি এ ক্ষেত্রে সহায়ক হতো যদি দিল্লির সদিচ্ছা থাকতো। আমরা ভারতকে চুক্তি মানতে বাধ্য করতে পারব না। যেমন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে আমরা ভারতকে বাধ্য করতে পারছি না।
এটি নিশ্চিত যে, ভারত শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে যে সেবা পেয়েছে সেই ঋণের দায় মেটাতে দেশটি হাসিনাকে রক্ষা করবে। চুক্তিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, দুর্জনের কখনো অজুহাতের অভাব হয় না। তাই প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে যতই বলা হোক, হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তাতে কাজ হয়ে যাবে এমন নয়। প্রেসসচিবের বক্তব্যেও দ্বিধার প্রকাশ আছে। বলা হয়েছে, আমরা যদি তাকে ফিরিয়ে আনতে না পারি, পরে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা করবেন।
এটিই যদি হয় সরকারের অবস্থান তাহলে ভিন্ন প্রশ্ন উঠতে পারে। নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে এমন সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, সংস্কার কর্মসূচিও নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে হতে হবে। তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার কি সংস্কারের কার্যক্রম স্থগিত করে শুধু নির্বাচনের আয়োজন নিয়ে কাজ করবে!
যাই হোক, সরকারের দ্বিধাগ্রস্ত উচ্চারণে নয়; বরং নানা কারণে হাসিনাকে ফেরানোর প্রশ্নে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে অনেকে নিশ্চিত নন। চার মাসেও সরকার ভারতের কাছে হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানায়নি। জনদাবির প্রেক্ষিতে হাসিনার ভারতে যাওয়ার চার মাস ১৮ দিন পর যখন অনুরোধ জানানো হয়; তখন তা পাঠানো হলো নিছক একটি নোট ভার্বাল আকারে। কূটনীতির ভাষায় যেটি তথ্যের আদান-প্রদানের চিঠি। সে চিঠিতে এমনকি প্রেরকের স্বাক্ষরও থাকে না। এর অর্থ হলো, সরকার পূর্ণ কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি বা অনুরোধ কোনোটি জানায়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা