দেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সৌদি আরব সারা বিশ্বে আলাদা মর্যাদা পায়। দুটো কারণে তাদের এই বিশেষ সম্মান। মুসলমানদের মধ্যে তারা নেতৃস্থানীয় একটি দেশ। অন্যটি হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম প্রধান ধনী দেশ এটি। বাংলাদেশের সাথে এর সম্পর্ক আরো নানা কারণে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। বিগত শতাব্দীর শেষ দশকে দেখা গেছে, বাংলাদেশের সরকারগুলো পররাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে দেশটিকে। এতে করে আমরা নানা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সুবিধাও পেয়েছি। ফ্যাসিবাদী হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশ দুটোর মধ্যে সম্পর্ক উল্টো ধারায় যাত্রা করে। বড় ধরনের অর্থনৈতিক-নির্ভরতা থাকার পরও সৌদি আরবের প্রতি এক ধরনের বৈরী আচরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এ ধরনের নীতি আত্মঘাতী হয়েছে। এর দ্বারা আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
বাংলাদেশ-সৌদি সম্পর্ক নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ আল দুহাইলান বিগত সরকারের আমলে সংঘটিত বিমাতাসুলভ আচরণের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ সালে দুটো দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর বাংলাদেশের কোনো প্রস্তাবে সৌদি আরব ‘না’ বলেনি। তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় ২০০৯ সালের পর বন্ধুসুলভ উষ্ণতার ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করে। পরে দেখা গেল লোভনীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব করেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবটি ছিল সৌদি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি আরামকোর সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের তেল শোধনাগার স্থাপন। এর ফলে শোধন করা তেল এ অঞ্চলে রফতানি করতে পারত বাংলাদেশ। নিজের চাহিদা পূরণ করে বাড়তি আয় করার কারণে বিপুল অর্থনৈতিক সুবিধা পেত। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সচিবের দফতরে এসে ফাইল গায়েব হয়ে যায়। বিগত হাসিনার আমলে সরকারের ভেতর আরো সরকার দেখা গেছে। দেশের ভাগ্যের অনেক কিছু সেখান থেকে নির্ধারিত হতো। আমাদের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা স্বার্থকে সরকারের ভেতর থেকে বিঘ্ন ঘটানোর আরো বহু উদাহরণ রয়েছে।
তিনি আরো জানান, বিগত কয়েক বছরে ৩০টিরও বেশি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছে, তাদের বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল। নানা ধরনের বাধা ও অসহযোগিতার কারণে সেগুলো নিয়ে অগ্রসর হওয়া যায়নি। এখনো ২৩ লাখ বাংলাদেশী সৌদিতে কর্মরত। বহু বছর যাবৎ দেশটি বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রার উৎস। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা উপলক্ষে দেশটি আমাদের অন্যতম প্রধান সাহায্যদাতা। বিগত হাসিনার সময় সরকারের ভেতর থেকে একটি গোষ্ঠী এই সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টার পাশাপাশি সরকারের সমর্থনপুষ্ট এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী সৌদিকে নেতিবাচক চিত্রিত করতে সচেষ্ট ছিল। শাহবাগে ‘যুদ্ধাপরাধীদের’ ফাঁসির দাবিতে সৃষ্ট মঞ্চে দাড়ি টুপি এবং তাদের পোশাক ও জীবনরীতি নিয়েও ব্যঙ্গ করা হয়েছে। সৌভাগ্য যে, সৌদি আরব এখনো বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক ধারণা পোষণ করে। তারা একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে এখনো প্রস্তাব দিচ্ছে। আমরা মনে করি, সৌদি সরকারের সদিচ্ছাকে সাদরে গ্রহণ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
অর্থ উপদেষ্টা জানাচ্ছেন কোরিয়ান কোম্পানি স্যামসাংয়ের বিনিয়োগও বিগত সরকারের সময় ঠেকিয়ে দেয়া হয়। সেটি ভিয়েতনামে চলে গেছে। সরকারের ভেতরে বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্তকারী গোষ্ঠী যে রয়েছে, নিশ্চিত করে তা বলা যায়। সৌদি আরবের আরামকোর বিনিয়োগসহ দেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনক অন্যান্য বিনিয়োগে কারা বাধার সৃষ্টি করেছে তদন্ত করে তাদের শনাক্ত করতে হবে। দেশের স্বার্থে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা