০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ৬ রজব ১৪৪৬
`
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে অবৈধ ৪০টি ইটভাটা

কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত

-

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় গড়ে উঠেছে ৪০টি অবৈধ ইটভাটা। ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে এসব ভাটা। এসব ভাটায় কাঠের চেলা দিয়ে ইট পোড়ানোয় কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সেই সাথে ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য। অনুমোদনহীন এসব ইটভাটা বন্ধে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। উল্টো ইটভাটার কয়েকজন মালিকের দাবি, তারা প্রশাসনকে টাকা দিয়ে তাদের ইটভাটা পরিচালনা করছেন। নয়া দিগন্তের রামগতি (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
নয়া দিগন্তের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডজুড়ে ইটভাটার ছড়াছড়ি। স্থানীয়রা বলছেন, ভাটার চার পাশে থাকা ফসলি জমির ধান, সয়াবিন, বাদামগাছসহ বিভিন্ন রবিশস্য জন্মায় না। জন্মালেও ফলন হয় খুব কম। তারা জানান, ইট তৈরিতে ব্যবহৃত মাটির সবটা যাচ্ছে ফসলি জমি থেকে। তাদের অভিযোগ, কৃষিজমি রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। কোনো নজরদারি নেই পরিবেশ অধিদফতরের।
রামগতি ইটভাটার সংগঠনের সভাপতি হাজী খলিল বলেন, এ অঞ্চলের বেশির ভাগ ইটভাটা অবৈধ। কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। তিনি জানান, বিভিন্ন দিবস পালনের নামে প্রশাসন ও পুলিশ আমাদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা নিয়ে যায়। লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হারুনর রশিদ বলেন, রামগতি কমলনগর উপজেলায় কৃষিজমি নষ্ট করে গড়ে উঠেছে ৬০টির মতো অবৈধ ইটভাটা।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এ উপজেলায় ৪০টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে মাত্র দু’টির। তবে কয়েকটির মালিকপক্ষ আবেদন করে রেখেছে। অচিরে এদের ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো অবস্থাতে অবৈধ ইটভাটা চালাতে দেয়া যাবে না। লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজিব কুমার সরকার বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের সাথে কথা বলে এসব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম ‘বন্ধ’ করে দেয়া হবে।
অনিয়ম প্রশ্রয় দেয়ার জন্য প্রশাসন দায়ী। প্রশাসন ঢিলেমি না করলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয় না। এতগুলো ইটভাটা অনিয়মের মধ্যে চলছে কিভাবে। যেখানে নিয়ম মানতে কড়াকড়ি করতে হয়, সেখানে এমন ঠিলেমি কোনোভাবে মানা যায় না।
আমরা আশা করি, অবিলম্বে লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় প্রশাসন রামগতিসহ সারা জেলায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলো বন্ধের ব্যবস্থা নেবে। একই সাথে সারা দেশে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেবে সরকার। কারণ, এসব ইটভাটা পরিবেশের বেশি ক্ষতি ও দূষিত করে। কোনো নিয়মকানুন মানে না, এসব ভাটামালিকদের কাছে মুনাফাই মুখ্য।


আরো সংবাদ



premium cement